বাংলাদেশি দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে বিএসএফ (BSF) জওয়ানকে কিডন্যাপ করার অভিযোগ উঠল। ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করে, একজন বিএসএফ জওয়ানকে অপহরণ করে নিয়ে গেল বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা।
বাংলাদেশি দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে বিএসএফ (BSF) জওয়ানকে কিডন্যাপ করার অভিযোগ উঠল। ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করে, একজন বিএসএফ জওয়ানকে অপহরণ করে নিয়ে গেল বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা।
তবে এখানেই শেষ নয়, এরপর ওই জওয়ানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাঁকে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে থাকা আধাসেনা অর্থাৎ বিজিবি-র হাতে তুলে দেওয়া হয়। শেষপর্যন্ত, বিএসএফ-এর উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের হস্তক্ষেপে ঐ জওয়ানকে মুক্ত করতে বাধ্য হয় বিজিবি।
এই ঘটনায় চরম উদ্বেগ এবং দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য, হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে ভারত বিরোধী শক্তি ও মানসিকতা ক্রমশই মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে। তার জেরেই বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের এহেন বাড়বাড়ন্ত কিনা, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মঙ্গলবার, বিএসএফ-এর তরফ থেকে এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আনা হয়। তারা জানায়, বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে ওই জওয়ানকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর তাঁকে বাংলাদেশে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের আধাসেনা সেই বিএসএফ জওয়ানকে প্রায় ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আটক করে রাখে।
সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, ঘটনাটি ঘটার একঘণ্টার মধ্যেই বিএসএফ-এর নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের ইন্সপেক্টর জেনারেল বিজিবি-র উত্তর-পশ্চিম শাখার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ওই জওয়ানকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। এরপর বিকেল ৫টা নাগাদ, অপহৃত বিএসএফ জওয়ানকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিএসএফ সূত্রে জানা গেছে, সেক্টর কম্যান্ডার স্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে বিএসএফ-এর ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের পরই ওই জওয়ানকে মুক্ত করে দেওয়া হয়।
এদিকে এই ঘটনায় বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে ভুল ও বিভ্রান্তিমূলক খবর পরিবেশনের অভিযোগ উঠছে। কারণ, তাদের পক্ষ থেকে প্রচার করা হয় যে, ঐ বিএসএফ জওয়ান নাকি সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশি ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিলেন। সেই কারণেই তাঁকে আটক করা হয়েছিল। যা পুরোপুরি মিথ্যা বলে জানিয়ে দিয়েছে বিএসএফ।
তাদের কথায়, “এই ঘটনায় আদতে 'গুরুতরভাবে সীমান্ত সুরক্ষা লঙ্ঘন' করা হয়েছে। বিএসএফ কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং এই ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগের বলেও সরকার ও প্রশাসনকে সতর্ক করেছে।”
বিএসএফ-এর নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের পক্ষ থেকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সীমান্ত সুরক্ষা লঙ্ঘন করে এক বিএসএফ জওয়ানকে অপহরণ করা হয়। ঘটনার সময় ওই জওয়ান ভারতীয় ভূখণ্ডের অন্তর্গত দক্ষিণ দিনাজপুরের বিরাল সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় রোজের মতোই টহলদারির কাজ করছিলেন। বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়া ১৫-২০ জনের একটি দুষ্কৃতী দল এই ঘটনাটি ঘটায়।”
বিএসএফ-এর তরফ থেকে আরও জানানো হয়েছে, সীমান্তে গুলিবর্ষণ না করার। অর্থাৎ 'জিরো ফায়ারিং'-এর যে নীতি গ্রহণ করা হয়েছে, তা তারা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলছে। এক্ষেত্রে বিজিবি-র কাছ থেকেও পূর্ণ সহযোগিতা আশা করা হচ্ছে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।