বিরিয়ানি আর মায়ের আদরেই জব্দ 'করোনা', নিজের অভিজ্ঞতা জানালেন ভারতের প্রথম রোগী

কেরলের ত্রিশুরে এই ডাক্তারির ছাত্রীই ভারতের প্রথম করোনাভাইরাস রোগী

এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ

তাঁর দাবি বিরিয়ানি খাওয়া আর মায়ের সমর্থনেই তিনি দ্রুত সুস্থ হয়েছেন

চিন থেকে করোনা নিয়ে ফেরা এবং সুস্খ হওয়ার গল্প শোনালেন তিনি

 

কেরলের ত্রিশুরের ডাক্তারির এক ছাত্রীই ছিলেন ভারতের প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী। এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনের ফিরছেন তিনি। তাঁর দাবি বলেছেন চিন থেকে ভারতে ফিরে তিনি প্রচুর বিরিয়ানি খেয়েছেন, ঈশ্বরের উপাসনা করেছেন এবং তাঁর মায়ের ভালোবাসা পেয়েছেন। আর এই তিন দাওয়াইতেই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিনি। তাঁর মতে যত দ্রুত সম্ভব করোনাভাইরাসকে সনাক্ত করে রোগীকে বিচ্ছিন্ন করে রেখে স্বাভাবিক চিকিত্সা চালালেই এই ভাইরাস নির্মূল করা যেতে পারে।

চিন উহান শহর, অর্থাৎ যেকানকার সি ফুড মার্কেটেই প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছিল, সেখানেই ডাক্তারি পড়তেন কেরলের এই তরুণী। গত ২৩ জানুয়ারী দুপুরে আরও ২০ জন ভারতীয়ের সঙ্গে উহান ছেড়েছিলেন তিনি। তারপরই উহানের প্রবেশপথ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে ততদিনে জানা গিয়েছিল, করোনাভাইরাস স্পর্শ থেকে ছড়িয়ে যেতে পারে। তাই তাঁরা দারুণ ভয়ে ছিলেন।

Latest Videos

ওই ছাত্রী জানিয়েছেন চিন থেকে কলকাতা হয়ে তিনি কেরলের ত্রিশুরে ফিরেছিলেন। এমনতিতে উহান থেকে চিন আসতে বিমানভাড়া লাগে ২৫ হাজার টাকা। কিন্তু সেই টিকিটই দাম ওই সঙ্কটের সময় ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাধ্য হয়ে ওই চড়া দাম দিয়েই ২৪ জানুয়ারি তিনি কলকাতা পৌঁছেছিলেন এবং তারপরে ত্রিশুরে নিজের বাড়িতে যান। ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সবকিছু ঠিকই ছিল। এরপরই তাঁর সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তিনি প্রথমে স্থানীয় এক ডাক্তারের কাছে যান, তারপর তাঁকে ত্রিশুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার আগেই একজন রোগীর দেহে করোনাভাইরাস-এর পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল এসেছিল, কিন্তু, তাঁর কি অবস্থা তা কেউ তাঁকে না জানানোয় তিনি বেশ ভয়ে ছিলেন।

৩০ শে জানুয়ারী, তাঁকে প্রথম জানানো হয়েছিল যে তার-ও কোভিড-১৯ টেস্ট ইতিবাচক এবং তিনিই ভারতের প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী। শুনে তাঁর চোখে জল চলে এসেছিল, কারণ তাঁর ভয় হয়েছিল, তিনি আক্রান্ত হলে তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও সংক্রমনের সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁর মা-ও কেঁদে ফেলেছিলেন। এরপর তাঁর সংস্পর্শে আসা প্রত্যেকেরই পরীক্ষা করা হয়েছিল। তাতে অন্য একজন ছাত্রের করোনাভাইরাস পরীক্ষা ইতিবাচক প্রমাণিত হয়েছিল।

ওই ছাত্রী জানিয়েছেন তারপর থেকে বিচ্ছিন্ন ওয়ার্ডে তাঁর সময় কাটতো ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করে, পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে এবং করোনার সঙ্গে সম্পর্কিত ডাক্তারি বইপত্র পড়ে। তিনি আরও জানিয়েছিল যে চিকিৎসা চলাকালীন তিনি প্রচুর বিরিয়ানিও খেয়েছেন। মজা করে বলেছেন, বিরিয়ানি আর মায়ের আদরেই করোনা হয়েছে জব্দ।

প্রথম দিকে ধৈর্য ধরে থাকলেও ১২ ফেব্রুয়ারির পর থেকে ওই ছাত্রী বাড়ি যাওয়ার জন্য ছটফট করতে থাকেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি অবশেষে মুক্তি পেলেও তাঁকে বাড়িতেই পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। ১ মার্চ পুরোপুরি সুস্থ ঘোষণা করা হয়। তবে এখনও জনবহুল এলাকায় যাচ্ছেন না তিনি। চিন থেকে মাঝপথেই পড়াশোনা ছেড়ে আসলেও তিনি জানিয়েছেন তাঁর কলেজ থেকে ই-লার্নিং ক্লাস চালু করা হয়েছে। তিনি ঘরে বসেই সেই ক্লাসে অংশ নিচ্ছেন। এখনও তিনি নিয়মিত স্যানিটাইজার এবং মুখোশ ব্যবহার করছেন।

তবে সুস্থ হওয়ার পরও অস্বস্তি যায়নি ওই ছাত্রীর। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ও তাঁর পরিবারের ছবি, নাম, ঠিকানা, এমনকী তাঁর বাবার পেশাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যে কারণে সামাজিক ক্ষেত্রে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছিল তাদের। অর্চনা এই এই সম্পর্কে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তারা সঙ্গে সঙ্গেই এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।

 

Share this article
click me!

Latest Videos

গভীর রাতে ধানক্ষেতে ভয়াবহ দৃশ্য! শিউরে উঠবেন আপনিও, আতঙ্কে গোটা Jaynagar, দেখুন | South 24 Parganas
প্রয়াগে ডুব দিয়ে পবিত্র স্নান সারলেন যোগী আদিত্যনাথ | CM Yogi | Prayagraj | Mahakumbh 2025 |
শুভেন্দুর বিরাট ঘোষণা! সোনাচূড়ার আড়াই বিঘা জমিতে হবে বিশাল Ram Mandir | Suvendu Adhikari
বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে এ কী করলো নাবালিকার সঙ্গে! চমকে যাবেন আপনিও, চাঞ্চল্য Nabadwip-এ | Nadia
‘RG Kar-র তথ্য প্রমাণ Mamata Banerjee-র নির্দেশে লোপাট হয়েছে’ বিস্ফোরক Adhir Ranjan Chowdhury