
Garba Rules 2025: ধর্মীয় ঐতিহ্য এবং নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য, মহারাষ্ট্রের নাগপুরে নবরাত্রি উৎসবের সময় ঐতিহ্যবাহী গরবা নৃত্যে অংশগ্রহণকারীদের জন্য কঠোর নিয়ম জারি করা হয়েছে। এই নতুন নির্দেশিকার মাধ্যমে শুধুমাত্র প্রকৃত ভক্তরাই উৎসবে যোগ দিতে পারবেন। এবং একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাও বজায় থাকবে।
আধার কার্ড বাধ্যতামূলক: গরবা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ইচ্ছুক প্রতিটি অংশগ্রহণকারীকে তাদের আধার কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে। এটি পরিচয় যাচাইকরণের জন্য ব্যবহৃত হবে এবং অবাঞ্ছিত ব্যক্তিদের প্রবেশ রোধ করবে।
তিলক ও ঐতিহ্যবাহী পোশাক: অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের আগে পুরুষদের কপালে তিলক পরা এবং মহিলাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরা বাধ্যতামূলক।
বরাহ অবতারের সামনে প্রণাম: অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের আগে সকলকে ভগবান বিষ্ণুর বরাহ অবতারের সামনে মাথা নত করে প্রণাম জানাতে হবে। এই প্রথাটি ঐতিহ্যের প্রতি সম্মান এবং ভক্তি প্রদর্শনের জন্য চালু করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ কী বলছে?
নাগপুরের স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে যে, এই কঠোর পদক্ষেপগুলি গরবা উৎসবের পবিত্রতা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা আরও বলেছে যে, এই নিয়মগুলি নিরাপত্তার পাশাপাশি সংস্কৃতির প্রতি সম্মান নিশ্চিত করবে। এই নিয়মগুলি কার্যকর করার জন্য প্রতিটি অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশপথে নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হবে।
আয়োজকদের মতে, এই পদক্ষেপগুলি অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক এড়াতে এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও ভক্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করবে। গরবা উৎসবে অংশগ্রহণকারীদের আগে একটি পবিত্র সুতো (রাখশা সূত্র) বেঁধে এবং একজন হিন্দু দেবতার কাছে প্রার্থনা করতে হবে," এমনটাই পূর্বে প্রস্তাব দিয়েছিল ভিএইচপি। ভিএইচপি-র বিদর্ভ সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত তিত্রে গত শনিবার বলেছিলেন, "অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের উপর 'গোমূত্র' বা গরুর মূত্র ছিটিয়ে দেওয়া হবে।"
ভিএইচপির এক মুখপাত্র বলেন, "আমরা গরবা মণ্ডপগুলিতে একটি শান্তিপূর্ণ এবং ধর্মীয় পরিবেশ বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের কর্মীরা নজর রাখবে যাতে কোনও বহিরাগত বা অ-হিন্দু ব্যক্তি মণ্ডপে প্রবেশ করে উৎসবের পবিত্রতা নষ্ট না করে। এই পদক্ষেপটি শুধুমাত্র সমাজের সুরক্ষা এবং ধর্মীয় অনুশাসন বজায় রাখার জন্য নেওয়া হয়েছে।"
নবরাত্রি উৎসব চলাকালীন বহু মানুষ গরবা ও ডান্ডিয়া নৃত্যে অংশ নেয়। ভিএইচপি এবং বজরং দলের কর্মীরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবে এবং মণ্ডপ পরিচালনাকারীদের সাথে সমন্বয় রেখে কাজ করবে। তাদের প্রধান কাজ হবে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা, সন্দেহজনক ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা এবং মহিলাদের সুরক্ষার দিকে বিশেষ নজর রাখা।
এই উদ্যোগ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। কিছু মানুষ এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে এবং এটিকে সমাজের সুরক্ষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে। অন্যদিকে, অনেকেই এটিকে ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করছেন এবং এর সমালোচনা করছেন। তবে, ভিএইচপি তাদের সিদ্ধান্তে অটল এবং জানিয়েছে যে তারা প্রশাসনের সাথেও যোগাযোগ রাখছে যাতে উৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।
এই বছর নবরাত্রি উৎসব আরও বেশি জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হচ্ছে এবং তাই নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ভিএইচপি এবং বজরং দলের এই পদক্ষেপ উৎসবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কতটা সফল হয়, তা আগামী দিনেই বোঝা যাবে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।