এর আগে আইনি জটিলতায় দু-দুবার ফাঁসি পিছিয়েছে নির্ভয়াকাণ্ডের চার অপরাধীর। এবারও শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত নানা চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিল চার অপরাধী ও তাদের পরিবার। এমনকি ফাঁসি আটকাতে মাঝরাতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হয়েছিল দোষীদের আইনজীবী। মেয়ে ন্যায়বিচার পাবে কিনা, নাকি আইনি ফাঁসে আগের দুবারের মত আটকে যাবে ফাঁসি তা নিয়ে নির্ভয়ার মা আশাদেবীর মত উৎকন্ঠায় সারা রাত কাটিয়েছেন বাবা বদ্রিনাথ সিংও। সুপ্রিমকোর্টে শুনানি চলারা সময় মাঝরাতে সেখানে স্ত্রীকে নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন তিনিও।
আরও পড়ুন: ৭ বছর পর শান্তি পেয়েছে মেয়ের আত্মা, বাঁধ মানল না বালিয়াও
শুক্রবার ভোরে ফাঁসিচে চড়ান হয় নির্ভয়ার চার ধর্ষক মুকেশ সিং, বিনয় শর্মা, পবন গুপ্তা ও অক্ষয় ঠাকুরকে। তিহার জেলের ডিরেক্টর সন্দীপ গোয়েল সেই খবর এসে জানাতেই মুখে হাসি ফোঁটে বাবার। আবেগতাড়িত বদ্রিনাথ হাতে ভিকট্রি সাইন দেখিয়ে বলেন, এই দিনটা তিনি শব্দে প্রকাশ করতে পারবেন না। তাঁদের মত দেশবাসীও অপেক্ষা করেছিল এই প্রতিক্ষিত দিনটার জন্য।
বদ্রিনাথ বলেন, “মেয়ে নেই। তবে আমার মেয়ে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছে আজ আমরা কতটা খুশি। আমাদের খুশি হতে দেখলে ও খুব খুশি হবে। আজ নির্ভয়ার দিন।” ন্যায়দিবস হিসাবে আজকের দিনটিকে পালনের দাবি জানিয়েছেন তিনি। সাত হবছরের দীর্ঘ লড়াইয়ে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যম, সমাজ ও দিল্লি পুলিশকে।
আরও পড়ুন: আশাদেবীর সঙ্গে রাত জাগল রাজধানীও, ফাঁসি হতেই জেলের বাইরে উৎসবের মেজাজ
পাশবিক অত্যাচারের পর মেয়েকে চোখের সামনে তিলে তিলে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়তে দেখেছেন। এরপর সুবিচারের আশায় চলেছে দীর্ঘ লড়াই। এক আদালত থেকে আরেক আদালত। আইনি জটিলতায় বারাবার পিছিয়েছে ফাঁসি। কিন্তু লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন দুটি মানুষ। দীর্ঘ লড়াইয়ে একাধিকবার নির্ভয়ার মা আশাদেবীকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে তখন শক্তি জুগিয়ে পাসে থেকেছেন বাবা বদ্রিনাথ। আদরের মেয়েকে আর কোনওদিন কাছে পাবেন না এই সাত বছরে কঠিন সত্যিটা মেনে নিয়েছেন দুজনের। তবে সন্তান হারানোর যন্ত্রনার মাঝেই এদিনের সুবিচার যেন কিছুটা হলেও মা-বাবর হৃদয়ের ক্ষততে মলমের মত কাজ করল।