ফাঁসির আগের রাতে কেঁদে ভাসাল চার নরপিশাচ, শোনানো হল গীতা

শুক্রবার ভোরে ফাঁসি হল নির্ভয়া কাণ্ডের চার অপরাধীর

ফাঁসির আগের সন্ধ্যায় তারা দারুণ কান্নাকাটি করেছে

তিহার জেল কর্তৃপক্ষকে মানসিক পরামর্শদাতাদের ডাকতে হয়

কীভাবে আসামিদের শান্ত করলেন তাঁরা

 

২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর ২৩ বছর বয়সী প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীটিকে ছিঁড়ে খেয়েছিল ওরা। তারাই বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ফাঁসির আগের সন্ধ্যায় কেঁদে ভাসিয়েছে বলে জানিয়েছে তিহার দেল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার বিকালে দিল্লির এক নিম্ন আদালত তাদের ফাঁসি স্থগিতের আবেদন খারিজ হওয়ার পরই তিহার জেল কর্তৃপক্ষের তরফে তাদের শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫ টায় ফাঁসিতে যাওয়ার জন্য 'মানসিক প্রস্তুতি' নেওয়ার নির্দেশ দেয়। আর তারপরই চার আসামি একেবারে ভেঙে পড়েছিল।

আরও পড়ুন - ভাঙল দাদু কালুরাম-এর রেকর্ড, নির্ভয়াকে ন্যায়বিচার দিয়ে কী বলছেন পবন জল্লাদ

Latest Videos

তিহার জেলের একটি সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্তও তারা ঠিকি ছিল। আশা করেছিল আইনজীবী এপি. সিং ঠিক কোনওভাবে ফাঁসি পিছিয়ে দেবেন অথবা রদ করার ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু, জেলকর্তারা আসামিদের, তারা তাদের পরিবারের নামে কোনও সম্পত্তি বা অন্যকিছু রাখতে চায় কিনা, জিজ্ঞাসা করার পরই তারা প্রথম উপলব্ধি করে মৃত্যু আসন্ন। বোঝে তাদের আর কিছুই করার নেই। ফাঁসি এড়ানো আর সম্ভব নয়। আর তারপরই আতঙ্ক গ্রাস করে তাদের।

শুরু হয় কান্নাকাটি। তারা তখন থেকে আর কিছু মুখে কাটেনি। সমানে কেঁদেই গিয়েছে। তিহার জেলের ওই সূত্রের দাবি, যেহেতু বেশ কয়েকবার ফাঁসি কার্যকর হওয়া পিছিয়েছে, বারবার স্থগিতাদেশ এসেছে মৃত্যু পরোয়ানায় তাই তাদের ধারণাটি হয়েছিল এবারও ফাঁসি পিছিয়ে যাবে। কিন্তু, বিকেলে বাস্তবটা প্রকট হয়ে উঠতেই তারা সেই বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি।

আরও পড়ুন - 'পুরি-সবজি-কচুরি', শেষ ইচ্ছায় আর কী চাইল নির্ভয়াকাণ্ডের আসামিরা

এরপর আসামিদের মানসিকভাবে শান্ত করার জন্য মানসিক পরামর্শদাতাদের ডাকা হয়। তাঁরা এসে আসামিদের গীতার কয়েকটি অধ্যায় পড়ে শোনান। গীতা থেকে পড়ে শোনানো হয় আত্মা অবিনশ্বর, তার মৃত্যু হয় না। এই ধরণের গীতার শ্লোক শুনিয়ে তাদের মানসিকভাবে শান্ত রাখার চেষ্টা করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই তারা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ছিল। তার আগে তিহার জেল কর্তৃপক্ষের নোটিশ অনুসারে মুকেশ, বিনয় ও পবন- এই তিন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির পরিবারের সদস্যরা শেষ সাক্ষাত করে যান তিহার জেলে এসে। তবে অক্ষয়ের পরিবার আসেনি। তিহার জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অক্ষয়ের পরিবার তার সঙ্গে শেষ দেখা করে প্রায় একমাস আগে। তাই সেই চারজনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অস্থির ছিল।

আরও পড়ুন - 'এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে', নির্ভয়াকে প্রথম দেখে কেঁদে ফেলেছিলেন ডাক্তারও

গোটা রাত তারা কেউই ঘুমোতে পারেনি। জেলের এক ডাক্তার নিরবিচ্ছিন্নভাবে তাদের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পরীক্ষা করে গিয়েছেন। শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫ টা অর্থাৎ ফাঁসির নির্ধারিত সময়ের কিছু আগে তাদের শেষবার মেডিক্যাল চেকআপও করা হয়। তাতে ফাঁসি স্থগিত রাখার মতো অস্বাভাবিক কিছু ধরা পড়েনি।

আরও পড়ুন - পৈশাচিক অত্যাচারের একমাত্র সাক্ষী, কেমন আছেন নির্ভয়ার সেই পুরুষ বন্ধু

মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় ৩ নম্বর জেল-এর ভিতর তৈরি ফাঁসিকাঠে। এখানেই আফজল গুরু এবং কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মকবুল ভাট-এর ফাঁসি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। মৃত্যুপরোয়ানা জারির পর থেকে এই জেলেই আসামিদের পৃথক পৃথক কক্ষে রাখা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে এদিন ভোরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া এবং লাশ ময়না তদন্তের জন্য না পাটাবো পর্যন্ত অন্যান্য কোনও কয়েদিকে তাদের কক্ষের বাইরে বের হতে দেওয়া হয়নি।

 

Share this article
click me!

Latest Videos

Chinmay Krishna Das-কে দেখা মাত্রই 'জয় শ্রী রাম' ধ্বনিতে মুখরিত চট্টগ্রাম কোর্ট চত্বর, দেখুন ভিডিও
চিন্ময় প্রভুর মুক্তির দাবিতে বিধানসভায় বিক্ষোভ Suvendu-র! | Suvendu Adhikari
'চিন্ময় প্রভুকে মুক্তি দাও, না হলে সব পরিষেবা বন্ধ করে দেবো' চরম হুঁশিয়ারি Suvendu Adhikari-র
'ভোট ব্যাঙ্কের জন্য Mamata রোহিঙ্গাদের হিন্দুদের জমি দিচ্ছে' বিস্ফোরক অভিযোগ Agnimitra-র
Sukhendu Sekhar কী বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে? জল্পনা উস্কে যা বললেন Agnimitra Paul