মৎস্য ৬০০০ নামে পরিচিত ডুবোজাহাজটি প্রায় দুই বছর ধরে তৈরি হচ্ছে। ২০২৪ সালের প্রথম দিকে চেন্নাইয়ের উপকূলে বঙ্গোপসাগরে এটির প্রথম সামুদ্রিক পরীক্ষা করা হবে
ভারতীয় বিজ্ঞানীদের চন্দ্র অভিযান সফল। চন্দ্রযান - ৩ এর অনুসরণ করে এখন সমুদ্র অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করেছে। সমুদ্রযান করে গভীর সমুদ্র অনুসন্ধানের চেষ্টার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বিজ্ঞানীদের মিশন কোবাল্ট, নিকেল ও ম্যাঙ্গানিজ সহ মূল্যবান ধাতু ও খনিজগুলির সন্ধানের কার্যকর হবে। সেই কারণেই দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি একটি সাবমার্সিবলে জলের প্রায় ৬ হাজার মিটার নিয়ে তিন জনকে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ভারতের সমুদ্রযানের নাম হবে মৎস্য।
মৎস্য ৬০০০ নামে পরিচিত ডুবোজাহাজটি প্রায় দুই বছর ধরে তৈরি হচ্ছে। ২০২৪ সালের প্রথম দিকে চেন্নাইয়ের উপকূলে বঙ্গোপসাগরে এটির প্রথম সামুদ্রিক পরীক্ষা করা হবে। টাইটান ডুবোজাহাজ বিস্ফোরণ হওয়ার পর থেকেই এই প্রকল্পে নিরাপত্তাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি গোটা প্রকল্পকেই অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের জুনে উত্তর আটলান্টির মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ অন্বেষণ করতে পর্যটকদের নিয়ে যাওয়ার সময়েই সেটিতে বিস্ফোরণ হয়। এই ঘটনার পর থেকেই বিজ্ঞানীরা মৎস্য ৬০০০ যানকে নানাভাবে পরীক্ষা করে তবেই জলের নিচে পাঠাতে চাইছে।
ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অব ওসান টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা মৎস্য ৬০০০ তৈরির দায়িত্বে রয়েছে। সাবমার্সিবেলের ডিজাইন, উপকরণ পরীক্ষা পদ্ধতি সার্টিফিকেশন,প্রাচুর্য ও স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোটোকলগুলির একটি বিস্তৃত পর্যালোচনা পরিচালনা করেছে। আর্থ সায়েন্স মন্ত্রকের সচিব এম রবিচন্দ্রন জানিয়েছেন , গভীর মহাসাগরে মিশনের অংশ হিসেবে সমুদ্রযান মিশনের কাজ চলছে। ২০২৪ সালের প্রথম দিকেই ৫০০ মিটার গভীরতায় এটির পরীক্ষা করা হবে।
এই মিশনটি ২০২৬ সালের মধ্যে শেষ করা হবে বলেও আশা করা হচ্ছে। এটি লক্ষনীয় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান, ফ্রান্স, চিন সহ কয়েকটি দেশে মানুষ চালিত সাবমার্সিবল তৈরি করেছে।
নিকেল ,কোবাল্ট, ম্যাঙ্গানিজ, হাইড্রোথার্মাল সালফাইড ও গ্যাস হাইড্রেটের মত মূল্যবান খনিজগুলির অনুসন্ধানের পাশাপাশি মৎস্য ৬০০০ হাইড্রোথার্মাল ভেন্টগুলিতে উপস্থিত কেমোসিন্থেটিক জীববৈচিত্র্য ও সাগরের নিচের তাপমাত্রা মিথেন সিপগুলিরও অনুসন্ধান করবে।
এনআইওটি-র পরিচালক জিএ রামদাস বলেছেন, তিনজনকে মৎস্য ৬০০০ এ সমুদ্রের নিচে পাঠান হবে। তাই এই গোলকটির ব্যাস ২.১ মিটার রাখা হয়েছে। গোলকটি ৬০০০ মিটার গভীরতায় ৬০০ বার (সমুদ্রতলের চাপের থেকে ৬০০ গুণ বেশি) চাপ সহ্য করতে পারবে। সেই কারণে এটি ৮০ মিলিমিটার পুরু টাইটানিয়াম খাদ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই সমুদ্রযানে ১২-১৬ ঘণ্টার জন্য অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে। এটি ৯৬ ঘণ্টা অক্সিজেন সরবরাহের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, গোলক ব্যাতীত সব কিছুই তাদের কাছে এখন অপ্রয়োজনীয়। একটি অফিসিয়াল সমুদ্র ট্রায়াল পরিচালনার কথাও তাঁরা ভাবছেন। তাই এরজন্য সার্টিফিকেট পেতে DNV-GLর সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানিয়েছে, সাবমার্সিবল স্থাপনের মত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতিও অনুসরণ করা হবে। জাহাজ থেকেই এই ব্যবস্থাটি কার্যকর করা হবে। জাহাজটি সমুদ্রের ওপর থাকবে। সেখান থেকেই গোলকটির সঙ্গে যোগাোযোগ করা হবে।