প্রসাদেই লুকোনো মৃত্যুবাণ, ২ বছরে ১০ শিকার, হিসেবের ভুলে গ্রেফতার হাড় হিম করা সিরিয়াল কিলার

Published : Nov 05, 2019, 09:48 PM ISTUpdated : Nov 23, 2019, 06:48 PM IST
প্রসাদেই লুকোনো মৃত্যুবাণ, ২ বছরে ১০ শিকার, হিসেবের ভুলে গ্রেফতার হাড় হিম করা সিরিয়াল কিলার

সংক্ষিপ্ত

সমৃদ্ধি আনার কয়েন দেওয়ার লোভ দেখিয়ে লোক ঠকাতো তারপর প্রতারিতদের বিষ মেশানো প্রসাদ খাইয়ে হত্যা করত এইভাবের গত দুই বছরে ১০ জনকে হত্যা করেছে সামান্য হিসেবের ভুলে ধরা পড়ে গেল অন্ধ্রপ্রদেশের এক সিরিয়াল কিলার  

তার কাহিনী সিনেমাকেও হার মানাবে। গত দুই বছর ধরে সায়ানাইড বিষ মেশানো 'প্রসাদম' বা প্রসাদ খাইয়ে সে অন্তত ১০ জনকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ। অন্ধ্রপ্রদেশের সেই ভেলাঙ্কি সিমহাদ্রি ওরফে শিবা অবশেষে ধরা পড়ল পুলিশের হাতে। অন্ধ্র পুলিশ জানিয়েছে রাজ্যের তিনটি জেলা - পূর্ব গোদাবরী, পশ্চিম গোদাবরী ও কৃষ্ণা জুড়ে হত্যালীলা চালিয়েছে সে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পশ্চিম গোদাবরী জেলার এলুরু-তে তার বাড়ি থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার নভদীপ সিং। পুলিশ জানিয়েছে একসময় রিয়েল এস্টেট-এর ব্যবসা করত ভেলাঙ্কি। কিন্তু সেই ব্যবসায় প্রচুর ক্ষতি হওয়ার পর সে নামে লোক ঠকানোর ব্যবসায়। নিজেকে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী বলে জাহির করত সে। গুপ্তধনের খোঁজ দেওয়া, সোনা বা রত্ন দ্বিগুণ করে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে শিকার ধরত সে।

কিন্তু, একসময় সে তার প্রতারণার শিকারদের হত্যা করাও শুরু করে। টিক কবে থেকে কীবাবে এই কাজে তার হাতে খরি হয়েছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে পুলিশ জানিয়েছে, য়ে দশজনকে হত্য়া করার কথা স্বীকার করেছে সে, তাদের সকলের কাছ থেকেই টাকা পয়সা সোনাদানা হাতিয়েছিল সে।

হত্যা করার ফাঁদটা সে চমৎকার রচনা করত। মানুষকে সমৃদ্ধি এনে দেবে এমন কয়েন দেওয়ার লোভ দেখাত ভেলাঙ্কি বা শিবা। প্রচুর অর্থের বিনিময়ে সেই কয়েন দিত সে। সঙ্গে দিত 'প্রসাদম'। আর এই প্রসাদেই মেশানো থাকত ভয়ঙ্কর সায়ানাইড বিষ।
সায়ানাইড শরীরে গেলে বাইরে থেকে কোনও অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিহতের পরিবার স্বাভাবিক মৃত্য়ুই বলেই ধরে নিয়েছে। হত ১০ জনের মধ্য়ে মাত্র চারটি ক্ষেত্রে পুলিশে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাই এতদিন পুলিশের চোখকে পাঁকি দিয়েই নিশ্চিন্তে প্রতারণা ও হত্যা চালিয়ে যাচ্ছিল সে।

কিন্তু, এলুরুতে গত মাসে কে নাগারাজু নামে এক ৪৯ বছরের সরকারি শিক্ষককে খুন করার সময়ই হিসেবে সে একটু গন্ডগোল করে ফেলে। গত ১৬ অক্টোবর নাগারাজু বেশ কিছু নগদ টাকা ও গয়না নিয়ে ব্যাঙ্কে যাচ্ছিলেন জমা দিতে। তাঁর আকস্মিক মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ পুলিশে অভিয়োগ জানিয়েছিল তাঁর পরিবার। ময়না তদন্তে তাঁর শরীরে সায়ানাইড বিষ মেলে।

এরপরই তদন্ত করতে নেমে পুলিশ ভেলাঙ্কি সিমহাদ্রির সন্ধান পায়। জানা যায় ব্যাঙ্কে যাওয়ার পথেই নাহারাজুকে পাকরাও করেছিল ভেলাঙ্কি। ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নাগারাজুকে সে সমৃদ্ধি আনার কয়েন আর প্রসাদম দিয়েছিল। সেই প্রসাদম গ্রহণ করাই কাল হয়ে দাঁড়ায় সরকারি ওই শিক্ষকের।

এরপরই ভেলাঙ্কিকে জেরা করা শুরু করে পুলিশ। জেরার মুখে সে অপরাধ স্বীকার করেছে। এমনকী জানা গিয়েছে সে তার নিজের ঠাকুমা ও শালি-কেও একইভাবে সায়ানাইড বিষ দিয়ে হত্যা করেছিল। পুলিশ তার বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠনে কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না। তাই শুধু ভেলাঙ্খির স্বীকারোক্তির উপর ভরসা না করে আরও প্রমাণ সাজাচ্ছে তারা। ভেলাঙ্কির হাতে খুন হওয়া তিনজনের দেহ কবর দেওয়া হয়েছিল। সেই দেহগুলি তুলে সেগুলির ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

PREV
click me!

Recommended Stories

News Round Up: কলকাতায় পা রাখছেন মেসি থেকে শুরু করে শুভেন্দুর নিশানায় মমতা, সারাদিনের খবর এক ক্লিকে
জনগণনা ২০২৭: ৩০ লক্ষ কর্মী, ১১,৭১৮ কোটি টাকা বাজেট, বিশ্বের বৃহত্তম সমীক্ষা