বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে ব্রহ্মপুত্র, করোনা আবহে অসমে বন্যা দুর্গত আড়াই লক্ষ মানুষ

  • করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই ফের অসমে ভয়াবহ বন্যা
  • এই নিয়ে চলতি বছরে দু'বার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এই রাজ্য
  • ১৬টি জেলার ৭০৪টি গ্রামের পরিস্থিতি সবচেয়ে শোচনীয়
  • কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানেও ঢুকেছে বন্যার জল

অবিরাম বর্ষণে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে অসমে। গত ২২ মে থেকে অসমের বিভিন্ন নদীতে বেড়ে চলেছে জলস্তর। তার মধ্যে গত কয়েকদিনের লাগাতার বৃষ্টি ক্রমশ জটিল করে তুলেছে দেশের দক্ষিণ-পূর্বের এই রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ব্রহ্মপুত্র নদের। অনেক জায়গাতেই বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে এই নদ। ফলে হুহু করে জল ঢুকছে বিভিন্ন এলাকায়। অসমের ৯টি জেলায় ব্রহ্মপুত্রের কারণে ইতিমধ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জলের তলায় চলে গিয়েছে বহু গ্রাম। 

 

Latest Videos

 

অসমে এখনও পর্যন্ত ১৬ জেলায় আড়াই লক্ষেরও বেশি  মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। শুক্রবার ডিব্রুগড়ের তেঙ্গাখাটে বন্যার জলে ডুবে এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে এই ভয়াবহ বন্যায় এখনও পর্যন্ত অসমে ১৬ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: ৫ লক্ষ ছাড়িয়ে গেল দেশে করোনা আক্রান্ত, গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের শিকার সাড়ে ১৮ হাজার

বৃষ্টি যেভাবে চলছে, যেভাবে জল আরও বাড়ছে নদীগুলিতে তাতে অসমের আরও অনেক গ্রামের জলের  নিচে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। প্রশসান সূত্রে জানা যাচ্ছে, ১৬টি জেলার ৭০৪টি  গ্রামের পরিস্থিতি সবেচেয় খারাপ। গ্রামগুলি প্লাবিত হওয়ায় ২ লক্ষ ৫৩ হাজার মানুষ অথৈ জলে পড়েছেন। পরিবার নিয়ে অসহায় অবস্থা গ্রামবাসীদের। আপাতত প্রশাসনের তরফে অস্থায়ীভাবে তাঁদের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। 

আরও পড়ুন: পাকিস্তানের ভিসা পেয়েই কাশ্মীর থেকে নিখোঁজ একের পর এক যুবক, বড়সড় ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা

অসম রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডিব্রুগড় ছাড়াও বন্যার প্রভাব পড়েছে ধেমাজি, লক্ষ্মীপুর, বিশ্বনাথ, উদালগুড়ি, দারাং, বাকসা, নলবাড়ি, কোকরাঝাড়, বরপেটা, নগাঁও, গোলাঘাট, জোরহাট, মাজুলি,শিবাসাগর ও তিনসুকিয়া জেলায়। রাজ্যের সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্থ জেলা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে রয়েছে ধেমাজিকে। 

শুধু ধেমাজি জেলাতেই ৮৮ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনসুকিয়ায় সংখ্যাটা ৫৯ হাজার। নদী-দ্বীপ জেলা মাজুলিতে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন ৩২ হাজার মানুষ। অসম সরকারের প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী, ১১ হাজার ৭৬৫.২৭ হেক্টর জমির ফসল এখন জলের তলায়। রাজ্য জুড়ে ১৪২টি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ১৮,০০০ বন্যার্ত। বন্যার কারণে ১.৩৮ লক্ষ গবাদিপশুরও ক্ষতি হয়েছে। 

গত কয়েক দিন ধরেই তীব্র বৃষ্টি হচ্ছে উত্তরপূর্ব জুড়ে। জোর বৃষ্টি হচ্ছে ভুটানেও। এর ফলে অসমে এই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।  অসম রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষর  দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, জোরহাট জেলার নেমাতিঘাটে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে ব্রহ্মপুত্র। তিনসুকিয়া জেলার সোনিতপুরেও একই অবস্থা। কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান আর পবিতরা অভয়ারণ্যেও বন্যার জল ঢুকে পড়েছে। পবিতরার ৮০ শতাংশ এলাকা জলমগ্ন।

প্রবল বৃষ্টি ও বন্যায় অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের বাগজান এলাকার যে তেলের কুয়োয় আগুন লেগেছিল সেই এলাকাও প্লাবিত বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী বন্যা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে দ্রুত প্লাবিত এলাকার মানুষকে যাবতীয় সাহায্য দিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। করোনা সতর্কতা মেনেই যেন সবকিছু করা হয় সেকথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। 

চলতি বছরে এই নিয়ে দু'বার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হল অসম। এর আগে গত মাসে ঘূর্ণিঝড় আমৎানের কারণে অসমে প্রবল বৃষ্টি হয়। যার জেরে হড়পা বানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই ফের বর্ষার বৃষ্টিতে অসমে বন্যার পরিস্থিতি সৃষ্টি হল। এর আগে গত বছর বন্যায় অসমে ৫২ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। তবে এবার করোনা সংক্রমণের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। 


 

Share this article
click me!

Latest Videos

এটা কী হচ্ছে বাংলাদেশে? এরা কারা? ভিডিও ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায় | Bangladesh Viral Video
নিজের ঘরেই পাওয়া গেল নিথর দেহ! নেপথ্যে পরিবার? জমাট বাঁধছে রহস্য! | New Tollygunge News Today
শোকজের উত্তর দিয়ে ফের বিস্ফোরক মন্তব্য Humayun Kabir-এর, দেখুন কী বলছেন
'Yunus সাহেবের মেরুদণ্ড সোজা কিনা সন্দেহ!' এ কী বললেন Sukanta #shorts #shortsfeed #shortsvideo
Rajesh Karla-র সঙ্গে বিশেষ আলোচনায় Sebastian Coe, মুখ খুললেন ভারত, মোদী এবং তাঁর জীবনযাত্রা সম্পর্কে