অন্য আরেকজন যুবকের সঙ্গে দুর্গার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই কথা জানতে পেরে তার পূর্বতন স্বামী একেবারে মারমুখী হয়ে ওঠে।
পাঁচ বছর আগে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে বিয়ে করেছিলেন আশিস চৌধুরী এবং দুর্গা ঝাঁ। কিন্তু, তার পর থেকেই তিক্ত হতে থাকে সম্পর্ক। সেই তিক্ততা যে শেষমেশ গিয়ে এমন পর্যায়ে পৌঁছবে, তা অবশ্য কল্পনাও করতে পারেননি দুটি পরিবারের সদস্যরা। বিহারের লক্ষ্মীসরাইয়ের এই ঘটনায় এখন এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য।
-
ছটপুজোর দিনে ঝাঁ পরিবারের ৬ জনকে একসঙ্গে গুলি করে দেয় আশিস চৌধুরী নামের ওই যুবক। মঙ্গলবার সকালে ৬ জনের মধ্যে ৩ জনেরই মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা প্রত্যেকেই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। অভিযুক্ত আশিসকে গ্রেফতার করেছে লক্ষ্মীসরাইয়ের পুলিশ।
-
স্থানীয় থানার এসপির মতে, বন্দুকধারী যুবক ওই পরিবারের জামাই ছিল। পাঁচ বছর আগে পঞ্জাবি মহল্লার বাসিন্দা দুর্গা চৌধুরীর ছেলে আশিস চৌধুরী নিজেদের প্রতিবেশী শশিভূষণ ঝাঁ-এর মেয়ে দুর্গা ঝাঁ-কে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে। কিন্তু, ওই যুবক দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন অন্যায় কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিল। তার পাশাপাশি যে ভিন্ন বর্ণের হওয়ায় দুর্গার বাবা মা মেয়ের এই সম্পর্ক পছন্দ করেননি। এই নিয়ে বিগত কয়েক মাস ধরে দম্পতির মধ্যে ঝগড়া চলছিল।
শশিভূষণ ঝাঁ নিজের মেয়ে দুর্গা ঝাঁ-এর সঙ্গে দেখা করে তাকে বুঝিয়েসুঝিয়ে নিজের বাড়িতে আবার ফেরত নিয়ে আসেন। এতে, দুর্গা এবং আশিসের সম্পর্ক ভেঙে যায়। শশিভূষণ ঝাঁ তাঁর মেয়েকে পটনায় রাখতে শুরু করেন। দুর্গা ঝাঁ-ও আশিসকে ভুলে গিয়ে সম্পর্ক ভেঙে দিয়ে স্বেচ্ছায় পটনায় থাকা শুরু করেন। কিন্তু, আশিস চৌধুরী যে কোনও মূল্যে দুর্গাকে ফেরত পেতে চেয়েছিলেন। দুর্গার সঙ্গে তাঁর বিয়ের ছবি ইন্টারনেট মিডিয়ায় ভাইরালও করে দিয়েছিলেন ওই যুবক। এভাবে দীর্ঘ দিন ধরে তিনি দুর্গাকে ক্রমাগত মানসিক ও সামাজিকভাবে হয়রানি করতেন। এর জেরে উভয় পক্ষের মধ্যে সমান বিরোধ দেখা দেয়।
-
অন্যদিকে, পটনায় থাকার সময়ে সেখানে অন্য আরেকজন যুবকের সঙ্গে দুর্গার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই কথা জানতে পেরে আশিস মারমুখী হয়ে ওঠে। চলতি মাসে ছট পুজোর জন্য দুর্গা যখন লক্ষ্মীসরাইয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন, সেখানে আশিসের সঙ্গে তাঁর প্রচণ্ড ঝগড়া-বিবাদ হয়। এরপর যখন তিনি তাঁর পরিবারের মানুষের সঙ্গে ছটের ঘাট থেকে ফিরছিলেন, তখন একেবারে তাঁর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পর পর পরিবারের ৬ জনকে গুলি করে আশিস, তাঁদের মধ্যে দুর্গাও ছিলেন।
-
দুর্গার পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্গা-সহ আরও তিনজন গুরুতর আহত এবং তাঁদের পিএমসিএইচ, পটনা হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। আহত একজনকে লক্ষ্মীসরাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।