
Congress Vs BJP: ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হামলায় প্রাণ গিয়েছে ২৬ জনের। এই ঘটনার পর থেকেই সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে উত্তেজনা বাড়ছে ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে। পহেলগাঁও হামলা নিয়ে শাসক বিরোধী তরজা ক্রমশই বাড়ছে। পহেলগাঁও হামলা কেন হয়েছে? কী করে জঙ্গিরা এই দেশে ঢুকেছে? নিরাপত্তার গাফিলতি কেন ছিল? - এই প্রশ্ন তুলতে শুরু হয়েছে বিরোধীরা। পাল্টা জবাব দিয়েছে বিরোধী। তাতে নতুন মাত্রা জুড়ে দিয়েছে কংগ্রেসের একটি নতুন সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট।
কংগ্রেস যে পোস্ট করেছে সেখানে একটি ছবি দেওয়া হয়েছে। যার মুণ্ড নেই। কুর্তা পায়জামা পরা এক ব্যক্তির ছবি, নেই মুখ। নেই পায়ের অংশ। তবে ছবিটি তৈরি করা হয়েছে অনেকটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আদলে। কিন্তু পোস্টে কোনও নাম লেখা নেই। আর ক্যাপশনে হিন্দিতে লেখা হয়েছে। আর সেই ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ''जिम्मेदारी' के समय - Gayab' ? যার বাংলা করলে দাঁড়ায় 'দায়িত্ব নেওয়ার সময়ই- গায়েব'। ক্যাপশনে আর কিছু লেখা হয়নি। কিন্তু কংগ্রেসের একটি সূত্র বলছে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই নিশানা করেছে।
কংগ্রেসের এই পোস্ট সম্পর্কে বলতে গিয়ে দলের নেতা জয়রাম রমেশ পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার বিষয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি আরও বলেছেন, বিহারের নির্বাচনী প্রচারে উপস্থিত হওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সময় পেয়েছিলেন। কিন্তু হামলা নিয়ে যখন রাজনৈতিক দলগুলি একজোট হয়ে বৈঠক করেছিল তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন না নরেন্দ্র মোদী। জয়রাম রমেশ আরও বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী মোদী সর্বদলীয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। আমরা ২২ এপ্রিল দবি করেছিলাম এই বিষয়ে সর্বদলীয় বৈঠক করা উচিৎ। প্রধানমন্ত্রী ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু তিনি নির্বাচনের প্রচারের জন্য তিনি বিহারে গিয়েছিলেন। নির্বাচনী প্রচারে বক্তব্য রাখার জন্য তাঁর সময় আছে কিন্তু সর্বদলীয় বৈঠকে নয়।' তিনি আরও বলেছেন, '২৬ জনের প্রাণ হারানো জঙ্গি হামলার মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নিয়ে আলোচনা যখন হচ্ছিল তখন প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন না।' তিনি আরও বলেছেন, এখন ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়। বিশ্বকে দেখানোর দেখানোর সময় ভারতীয়রা একজোট। মোদী বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অনুরোধ রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। অন্যদিকে দিন কয়েক আগেই কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে আর রাহুল গান্ধী নরেন্দ্র মোদীকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। সেখানে তারা পহেলগাঁও হামলা ইস্যুতে সংসদের দুই কক্ষে বিশেষ অধিবেশন ডাকার আবেদন করেছেন।
পাল্টা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করেছে বিজেপিও। সেখানে বলা হয়েছে, 'কংগ্রেস মাথাবিহীন কুর্তা পরে চরমপন্থী 'সার তান সে জুদা' (মাথা আর দেহ আলাদা) স্লোগানের প্রতিধ্বনি দিচ্ছে, যা মুসলিম লীগ ২.০-তে তাদের ক্রমাগত পতনকে প্রকাশ করে দিচ্ছে — বিভেদ সৃষ্টিকারী, মরিয়া এবং দিকহীন।' বিজেপির পোস্টে আরও বলা হয়েছে, 'এখন যেহেতু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাকিস্তান যে ভাষা বোঝে, ইসলামাবাদের সরকারি হ্যান্ডেলগুলি সেই একই শিরচ্ছেদের স্লোগান তুলেছে। তাদের জেহাদি মতবাদকে উন্মোচিত করেছে।' বিজেপি আরও বলেছে, 'কংগ্রেস ও তার সহযাত্রীদের যত ইচ্ছে হুমকি দিতে দিন। নতুন ভারত নত হবে না। ভাঙবেও না। সন্ত্রাসবাদের মুখোমুখি হবে গুলি, বিরিয়ানি নয়। এটা সিদ্ধান্তমূলক নেতৃত্বের যুগ।'
বিজেপি নেতা গৌরব ভাটিয়া কংগ্রেসের বিতর্কিত পোস্টের তীব্র সমালোচনা করেছে। তিনি গোটা বিষয়টিকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, কংগ্রেসের দুটি মুখ প্রকাশ পাচ্ছে। একটি লস্কর-ই-পাকিস্তান কংগ্রেস। গৌরব ভাটিয়া আরও বলেন, 'এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক। কংগ্রেস ভারতীয় রাজনৈতিক দল হয়েছে দুটি মুখ প্রকাশ করেছে। কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটি মাথাবিহীন ছবি টুইট করেছে। এমন সময় এটি করা হয়েছে যখন প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানকে কড়া বার্তা গিয়েছেন।' তিনি বলেন, কংগ্রেস পাক জঙ্গিদের আদর্শ মাথা-দেহ বিচ্ছিন্ন করার আদর্শে অনুপ্রাণিত।
বিজেপি নেতা শেহজাদ পুনাওয়া বলেছেন, কংগ্রেস আর পাকিস্তান একই সংস্কৃতির ধারক আর বাহক। কংগ্রেস পাকিস্তানের জঙ্গিদের মতই কথা বলছেন।