মাঝখানে বাকি আর কয়েকটা মাত্র দিন, আর তার পরই ৩১ অগাস্ট প্রকাশিত হবে অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর তালিকা। কিন্তু এর মধ্যে অসমের রাজ্য পিজেপির অন্দরে তৈরি হয়েছে এক বড় ধরণের আশঙ্কা। কারণ অসমের নাগরিকপঞ্জীর খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়ছেন বহু বাঙালি হিন্দু।
পাশাপাশি তাঁদের আশঙ্কা বেআইনি বিদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসাবে যাঁদের চিহ্নিত করা হচ্ছে তাঁদের মধ্যে বহু বাঙালি হিন্দুও থাকতে পারেন। তবে শুধু বাঙালি হিন্দুই নয় অসমের নাগরিকপঞ্জীর তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারেন নেপালি এবং অবাঙালি হিন্দুরাও- এমনটাই আশঙ্কা তাঁদের।
আরও পড়ুন- আধার-এর মতো সুরক্ষিত করতে হবে নাগরিকপঞ্জির তথ্য, জানাল শীর্ষ আদালত
এই প্রসঙ্গে একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে ৫২ বছর বয়সী গুয়াহাটির এক বাসিন্দা উমাকান্ত ভৌমিক জানিয়েছেন, এই নিয়ে মোট সাত বার নাগরিকপঞ্জীর তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন তিনি ও তার গোটা পরিবার। তাঁর কথায় অটল বিহারীর বাজপেয়ীর আমল থেকেই বিজেপি দলের একজন সমর্থক হিসাবে কাজ করে আসছেন। তবে নাগরিকপঞ্জীতে নাম তোলার আগ্রহ যে তিনি হারিয়েছেন সেই নিয়েই আক্ষেপের সুর ভেসে ওঠে তাঁর গলায়।
ঘর ছাড়লেই ভিটে হারানোর ভয়, বন্যার মধ্যেও এনআরসি আতঙ্ক
ওই সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে উমাকান্ত বাবু আরও বলেন যে, একেবারে প্রথম থেকেই একজন বাঙালি হিন্দু হিসাবে বিজেপি-কে সমর্থন করে আসছেন তিনি এবং তাঁর মতো আরও বহু মানুষ। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁদের যেভাবে হয়রিনির শিকার হতে হচ্ছে তা একেবারেই কাম্য নয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি, সেইসঙ্গে সরকারের তরফেও তাঁদের কোনও সাহায্য় করা হচ্ছে না বলেও দাবি করেন তিনি।
প্রসঙ্গত ১৯৫১ সালে প্রথম নাগরিকপঞ্জীর তালিকা প্রকাশ করে অসম। এরপর ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের পর কিছু বাংলাদেশি অবৈধভাবে সে রাজ্যে প্রকাশ করার পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে এনআরসি তালিকার তথ্য পুনরায় সংযোজন করা হচ্ছে।
'ভারত ধর্মশালা নয়' অসমে বেআইনি বসবাস রুখতে কড়া বার্তা বিজেপির
আর এবারের লোকসভা নির্বাচনে অসমে ১৪টির মধ্যে ৮টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। বিশেষজ্ঞ মহলের দাবী অসমে বসবাসকারী আদিবাসী, অসমিয়া হিন্দু এবং বাঙালি হিন্দুদের ভোটের নিরিখেই এই দুর্দান্ত ফল করেছে বিজেপি। মনে করা হচ্ছে অসমে বসবাসকারী ১৮ শতাংশ বাঙালি হিন্দুর ভোটব্যঙ্কের বেশিরভাগই বিজেপি-কে সমর্থন করে। আর এই পরিস্থিতিতে, হিন্দুদের নামই যদি এনআরসি-র তালিকাভুক্ত না হয়, তাহলে তা রাজ্য বিজেপির কাছে যে একটা অশনি সংকেত সে কথা বলাই যায়।