বয়েজ লকার রুম বিতর্কে চাঞ্চল্যকর মোড়, ছেলে সেজে মন্তব্য করেছিল নাকি এক নাবালিকাই

  • "বয়েজ লকার রুম"-এর কথোপকথন ঝড় তোলে সোশ্যাল মিডিয়ায়
  • তদন্তে নেমে এই বিষয়ে নয়া মোড় খুঁজে পেল দিল্লি পুলিশ
  • একটি মেয়েই নাকি ছেলে সেজে অশালীন মেসেজ পাঠায়
  • ছেলেটির প্রতিক্রিয়া জানতেই গণধর্ষণের প্রসঙ্গ তোলে সে

Asianet News Bangla | Published : May 11, 2020 5:55 AM IST / Updated: May 11 2020, 11:28 AM IST

গত কয়েকদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচই ফেলে দিয়েছিল ইনস্টাগ্রামের ‘বয়েজ লকার রুম’-এর কথোপকথন।  ওই গ্রুপের বিরুদ্ধে মহিলাদের নিয়ে অত্যন্ত কুরুচিকর এবং অশালীন মন্তব্যের পাশাপাশি নাবালিকা মেয়েদের ছবি দিয়ে ‘গণধর্ষণ’-এর ইচ্ছেপ্রকাশের মত মারাত্মক অভিযোগ ওঠে। ওই গ্রুপের সদস্যরা দিল্লির বিভিন্ন স্কুলের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র বলে জানা যায়।  যাঁদের আলোচনার বিষয়বস্তু নাকি ছিল নিজেদের সহপাঠিনীদের কী ভাবে গণধর্ষণ করবে ও অন্যান্য অশ্লীল বিষয়! সেই গ্রুপেরই কথোপকথনের একটি স্ক্রিনশট টুইটারে ফাঁস হয়ে যায়, আর তার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে ঝড় ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে। এবার এই গ্রুপ চ্যাট কাণ্ডে দিল্লি পুলিশ এমন এক তথ্য প্রকাশ করল যার ফলে সম্পূর্ণ নতুন মোড় নিয়েছে গোটা ঘটনা।

আরও পড়ুন: তৃতীয় দফার লকডাউনের মধ্যেই খুলছে স্কুল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে মিলল ছাড়পত্র

দিল্লি পুলিশের সাইবার সেল তদন্তের পর জানিয়েছে, যে চ্যাটের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে তা আদৌ ইনস্টগ্রামের ‘বয়েজ লকার রুম’-এর সঙ্গে যুক্তই নয়। বরং স্ন্যাপচ্যাটে একটি ছেলে এবং মেয়ের মধ্যে এই কথোপকথন হয়েছে। এবং তাঁরা দু’জনেই নাবালক ও নাবালিকা। পুলিশ বলছে, ছাত্রদের প্রতিক্রিয়া যাচাই করার জন্য একটি মেয়েই নাকি ছেলে সেজে ওই মন্তব্য করে। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, যে মেয়েটি এই কাজ করেছে সে আসলে "বয়েস লকার রুম" এর সদস্যই নয়, সে ওই গ্রুপেরই অন্য একটি ছেলের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে এবং তারপর সেটি  স্ন্যাপচ্যাট সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দেয়। মেয়েটি অবশ্য ‘সিদ্ধার্থ’ নামের একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে, নিজে ছেলে সেজেই আর একজন নাবালকের সঙ্গে কথা বলে বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশের সাইবার সেল।

পরিচয় গোপন করে ওই নাবালিকা 'সিদ্ধার্থ' নামের আড়ালে নিজের আসল চরিত্রকে গণধর্ষণের কথা বলে স্ন্যাপচ্যাটে। উল্টো দিকে থাকা ছেলেটির প্রতিক্রিয়া কেমন হয় এবং তার চরিত্র কতটা ঠিকঠাক, তা দেখার জন্যই নাকি সেই কিশোরী ছেলে সেজে গণধর্ষণের প্রসঙ্গ তোলে। কোনওভাবে  দু’জনের মেসেজের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়ে যায় ইনস্টাগ্রামের বয়েজ লকার রুমে। তারপর দ্রুত সেসব ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ার অন্যান্য প্ল্যাটফর্মেও। যদিও মেয়েটির মেসেজের জবাবে কোনও অশালীন মন্তব্য করেনি ওই নাবালক।

আরও পড়ুন: স্থিতিশীল দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, দল নির্বিশেষে আরোগ্য কামনায় নেতা-নেত্রীরা

চ্যাটের স্ক্রিনশটে দেখা যাচ্ছে, 'সিদ্ধার্থ' উল্টোদিকে থাকা কিশোরকে কোনও একটি মেয়ের উল্লেখ করে বলছে, 'আমরা ওকে সহজেই ধর্ষণ করতে পারি। আমি খুব সিরিয়াস। …ওকে ফোন করো। যেখানে আসতে বলবে চলে আসব। আরও এক-দু'জন ছেলেকে আমি ডাকছি। সবাই মিলে গণধর্ষণ করব।' পুলিশ জানিয়েছে, উল্টোদিকে থাকা কিশোর এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। সে নিজের বন্ধুদের বিষয়টি জানায়। সেই বন্ধুদের মধ্যে 'সিদ্ধার্থ' চরিত্রটির ভেক ধরা কিশোরীও ছিল, যাকে ধর্ষণ করার প্রস্তাব রাখে 'সিদ্ধার্থ'। 

আপাতত এই দু’জনের বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের করেনি পুলিশ। তবে সাইবার সেলের এক আধিকারিক জানান, "যদিও, ভুয়ো আইডি তৈরি করা একেবারেই ঠিক নয়, কিন্তু যেহেতু মেয়েটির উদ্দেশ্য আসলে অসৎ ছিল না তাই আমরা তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করছি না।" তবে রহস্যমোচনের পর  উঠে এসেছে অন্য বিতর্কও। তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই কী ভাবে সোশ্যাল মিডিয়া স্কুল ছাত্রদের দোষী সাব্যস্ত করে দিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কেউ কেউ গার্লস লকার রুমের বিভিন্ন কথোপকথনের স্ক্রিনশট সামনে এনে দেখিয়েছেন, কী ভাবে সেই আলোচনায় পুরুষের যৌনাঙ্গ নিয়ে কুমন্তব্য করা হয়েছে। 

Share this article
click me!