চেন্নাইয়ের পুনামাল্লি (Punamalli, Chennai) এলাকায় আত্মঘাতী হয়েছে যৌন হেনস্থার (Sexual Harrasment) শিকার হওয়া এক ছাত্রী। তাঁর লিখে যাওয়া সুইসাইড নোট তুলে দিল বড় প্রশ্ন।
যৌন হেনস্থার (Sexual Harrasment) শিকার হওয়ার পর আত্মঘাতী হয়েছিল একাদশ শ্রেনির ছাত্রীটি। একুশ শতকের আত্মনির্ভর ভারতে এই ঘটনায় নতুনত্ব কিছু নেই। আকছাড় ঘটে চলেছে। তবে, সকলকে কাঁপিয়ে দিয়েছে আত্মঘাতী হওয়ার আগে তাঁর লিখে যাওয়া সুইসাইড নোট। ঘটনাটি ঘটেছে চেন্নাইয়ের পুনামাল্লি (Punamalli, Chennai) এলাকায়। সুইসাইড নোটে মেয়েটি লিখে গিয়েছে, যৌন হেনস্থার পর তাঁর একাকীত্ব, দুষ্কৃতির বিরুদ্ধে তাঁর যুদ্ধ এবং কীভাবে তাঁর দুঃসময়ে স্কুল বা তাঁর চেনা পরিচিতদের কাউকেই সে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসাবে পায়নি - সেই কথা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেয়েটির বাবা-মা জানিয়েছেন, সে প্রথমে একটি প্রাইভেট স্কুলে পড়ত। ক্লাস নাইন অবধি সেখানেই পড়েছে সে। সম্প্রতি তাঁকে একটি সরকারি স্কুলে ভর্তি করা হয়েছিল। কারণ, ওই বেসরকারি স্কুলের এক শিক্ষকের ছেলে তাঁকে উত্ত্যক্ত করত। তারপর যৌন হেনস্থারও শিকার হয়েছিল সে। কিন্তু, প্রভাবশালী শিক্ষকের পুত্র হওয়ার সেই ছেলেটির বিপক্ষে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া যায়নি। বদলে নির্যাতিতাকেই স্কুল বদলাতে হয়েছিল। জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার অল্প সময়ের জন্য বাড়ির বাইরে গিয়েছিলেন ওই ছাত্রীটির মা। সেই সময়ই চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে সে। মা ফিরে এসে মেয়ের মৃতদেহ আবিষ্কার করেছিলেন।
সিএনএন-নিউজ১৮'এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আত্মহত্যার নোটে মেয়েটি লিখেছে, 'মাতৃগর্ভ এবং কবর - এছাড়া পৃথিবীতে আর কোন নিরাপদ স্থান নেই।' আর তার লিখে যাওয়া এই নোটই ঝড় তুলেছে তামিলনাড়ুতে। পুলিশ ওই সুইসাইড নোটের সূত্র ধরে তদন্তে নেমেছে। একাদশ শ্রেনির ছাত্রীটির আত্মঘাতী হওয়ার পিছনে ওই যৌন হয়রানির ঘটনার যোগ কতটা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সম্প্রতি চেন্নাই তথা তামিলনাড়ুতে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা ব্যাপক বেড়ে গিয়েছে।
গত সপ্তাহেই তামিলনড়ুর কোয়েম্বাটোর জেলায়, ঝোপের মধ্য থেকে এক হাই স্কুল ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। গত ১১ ডিসেম্বর থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। যৌন নির্যাতনের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়েছে। আরেকটি ঘটনায়, কোয়েম্বাটোরেরই এক মেয়ে তাঁর এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে আত্মঘাতী হয়েছিল। ওই শিক্ষককে বর্তমানে পুলিশ পকসো আইনের ধারায় হেফাজতে নিয়েছে। এরই মধ্যে বড় প্রশন তুলে দিল সুইসাইড নোটের ওই লাইন - ভারতে মহিলারা কি তাহলে শুধু মাতৃগর্ভ আর কবরেই নিরাপদ?