কংগ্রেস নেতা, অসমের সব থেকে দীর্ঘ সময়ের মুখ্যমন্ত্রী আর ৬ বারের সাংসদ- বর্ণময় রাজনৈতিক জীবন ছিল তরুণ গগৈয়ের। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দীর্ঘ চার মাস লড়াই করে হার মানের অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ৮৬ বছরের তরুণ গগৈ। প্রায় পাঁচ দশকের রাজনৈতিক জীবনে অনেক উত্থান পতন দেখেছেন তিনি।
তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। তিনি তরুণ গগৈকে তাঁর বন্ধু বলে সম্বোধন করেন। শোকপত্রে তিনি লিখেছেন অসমের সবথেকে জনপ্রিয় নেতা ছিলেন তরুণ গগৈ। তাঁর মৃত্যুতে একটা শূণ্যস্থান তৈরি হয়েছে। কঠিন পরিশ্রম করে সাফল্য পেয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি প্রবীণ এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জানিয়েছেন মনমোহন সিং। তরুণ গগৈয়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন তরুণ গগৈ একজন আদর্শ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি সত্যিকারের কংগ্রেস ব্যক্তিত্ব ছিলেন। বিদগ্ধ ও শিক্ষক হিসেবে তাঁর স্থান অনেক ওপরে। তাঁর সান্নিধ্য পেয়ে বরাবরই উপকৃত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি গগৈ পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জানিয়েছেন রাহুল গান্ধী।
১৯৩৬ সালের পয়লা এপ্রিল তৎকালীন শিবসাগর জেলা বর্তমানে জোরহাট জেলের রাঙাজান টি এস্টেটে জন্মগ্রহণ করেন তরুণ গগৈ। বাবা কমলেশ্ব গগৈ ছিলেন চিকিৎসক। স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলেই শুরু হয়েছিল পড়াশুনা। তারপর জোড়হাট সরকারি স্কুল থেকে দশম শ্রেণির পরীক্ষা উত্তীর্ণ হওয়ার পর জোড়হাট জগন্মনাথ বড়ুয়া কলের থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭১ সালে প্রথম সংসদে পা রেখেছিলেন তিনি। তারপর ৬ বার তিনি সাংসদ হন। পিভি নরসীমা রাওয়ের মন্ত্রিসভায় খাদ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুদায়িত্বও গ্রহণ করেছিলেন তিনি। সাংসদ থাকার সময়ই তিনি ১৯৭২ সালে ডলি গগৈকে বিয়ে করেন তিনি। তাঁদের দুই সন্তান- চন্দ্রিমা ও গৌরব। ১৯৯৭ সালে রাজ্যরাজনীতিতে পা রাখেন তিনি। ২০০১ থেকে ২০১৬ সাল টানা তিন বার অসমের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। আজীবন কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন তিনি। উত্তর পূর্বের এই রাজ্যের বাসিন্দা হয়েও কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে যথেষ্ট সক্রিয় ছিলেন তিনি।