মৃত্যুপুরী বালাসোর, করমণ্ডল-যশবন্তপুর-মালগাড়ির ধাক্কায় দুমড়ে যাওয়া কামরায় ঝুলছে মানুষের হাত-পা

করমণ্ডল এক্সব্রেস, মালগাড়ি আর যশবন্তপুর এক্সপ্রেস- তিনটি ট্রেনের দুর্ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন তুললেও এখনও মৃত্যুপুরী হয়ে রয়েছে ওড়িশার বালাসোর। সময় যত যাচ্ছে ততই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ২৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

আহতের সংখ্যা দেখতে দেখতে ৯০০ কোটা ছাড়িয়ে গেছে। উদ্ধারকারীদের অনুমান আহতের সংখ্যা ১০০০এর বেশি হবে। রেল কর্মকর্তাদের কথায় ২০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এমন ভয়ঙ্কর রেল দুর্ঘটনা ঘটেনি ভারতে।

শুক্রবার বিকেলে ওড়িশার বালাসোরের কাছেই তীব্র গতিতে ছোটা করমণ্ডল এক্সপ্রেস ধাক্কা মারে একটি মালগাড়িতে। ছিটকে যায় বগি। অন্য ট্র্যাকে পড়ে থাকা বগিগুলিকে আবার ধাক্কা মারে উল্টোদিক থেকে আসা যশবন্তপুর এক্সপ্রেস। এদিন সকালেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাস্থলে রয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

ভয়ঙ্কর এই দুর্ঘটনার কারণে দক্ষিণ-পূর্ব শাখায় ট্রেন চলাচল প্রায় বন্ধ। ট্র্যাক সরায়ি কবে থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হবে তা এখনও বলতেই পারছে না রেল কর্তৃপক্ষ।

দুর্ঘটনার পর থেকে এখনও পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চলছে। দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া বগি থেকে বের করা আনা হচ্ছে নিথর দেহ। অনেকেই হাত-পা-মাথা ধড় আলাদা হয়ে গেছে।

দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে থাকা যাত্রীরা বলেছেন, শালিমার করমণ্ডল এক্সপ্রেস তীব্র গতিতে ছুটছিল। দুর্ঘটনার সময় তারা বুঝতে পারছিলেন ভয়ঙ্কর কিছু ঘটতে চলেছে। তারা জানিয়েছেন, ট্রেনটি যে ঠিছকে যাচ্ছিল তা তারা বুঝতে পেরেছে। এক যাত্রী জানিয়েছেন. দুর্ঘটনার সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। তারপর দুর্ঘটনার কারণে ঘুম ভেঙে যায় তখন তিনি দেখেন ১৫জনের ওপর তিনি পড়ে রয়েছে। জানলা দিয়ে বেরিয়ে এসে দেখেন ট্রেনের ভয়ঙ্কর অবস্থা।

এক রেল কর্তা জানিয়েছেন উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে। এখন পুনরুদ্ধার কাজে জোর দেওয়া হচ্ছে। হাওড়া -চেন্নাই প্রধান লাইনে দুর্ঘটনার কারণে দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের খড়গপুর বিভাগে ৪৮টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ৩৯টি ট্রেন ঘুরপথে চালান হচ্ছে। ১০টি ট্রেন আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।

রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানুয়েছেন দুর্ঘটনার কারণ জানতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বালাসোরে ভয়ঙ্কর রেল দুর্ঘটনার কারণে এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীব পট্টনায়েক।

রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, দুর্ঘটনা মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ও গুগুতর আহতদের ২ লক্ষ টাকা ও দুর্ঘটনায় সামান্য আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপুরণ দেওয়া হবে।