এই বছর দুর্গাপূজা মহালয়ার একমাস পর
অনেকে মজা করে বলছেন লকডাউনের জন্যই দেবীর আগমনে এই বিলম্ব
তবে তার আগে করোনা-অসুর'ও নিধন হতে পারে
তেমনটাই জানাচ্ছেন গবেষকরা
amartya lahiri | Published : Apr 15, 2020 8:08 PM IST / Updated: Apr 16 2020, 11:07 AM IST
এই বছর দুর্গাপূজা পড়েছে, মহালয়ার এককমাস পর। অনেকে মজা করে বলছেন, দেবী আগেই জানতে পেরেছিলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও তার জেরে লকডাাউনের কথা, তাই একমাস দেরি করে আসছেন। তবে শুধু লকডাউন নয়, এমনটাও হতে পারে যে একেবারে করোনা-অসুর-এর নিধনের পরই দেবী মর্তে এলেন।
নভেল করোনভাইরাস এখন বিভিন্ন দেশেই ক্রমে ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে। বিভিন্ন প্রান্তে গবেষকরা এই সার্স-কোভ-২ ভাইরাস-এর টিকা তৈরির জন্য দিল-রাত পরিশ্রম করছেন। তবে এখনও পর্যন্ত, কোভিড-১৯'এর কোনও নির্ভরযোগ্য ভ্যাকসিন বা নির্দিষ্ট চিকিৎসা পাওয়া তো দূর, বরং তার থেকে শতযোজন পিছিয়ে আছেন গবেষকরা বলা যেতে পারে। ভারত-সহ একাধিক দেশের গবেষকরা জানিয়ে দিয়েছেন, টিকা তৈরি হতে হতে অন্তত একবছর তো লাগবেই। তারমধ্যে যদি ভাইরাসটি তার গঠন পাল্টে ফেলে, তাহলে সেই টিকাও কাজ করবে না।
তবে, আশার কথা শোনাচ্ছে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সারা গিলবার্ট-এর দাবি চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই তাঁরা এই নতুন করোনভাইরাসটির বিরুদ্ধে একটি প্রতিষেধক টিকা তৈরি করে ফেলতে পারবেন। গিলবার্ট বর্তমানে এই টিকার জন্য ব্রিটেনের সবচেয়ে অগ্রসর গবেষণা দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর দল শরৎকালে, বা বলা আরও নিখুঁতভাবে বললে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই এই টিকা তৈরি করে ফেলতে পারবেন বলে তিনি ৮০ শতাংশ নিশ্চিত।
`
লকডাউন নয়, বেশি করে করোনা আক্রান্ত হতে হবে তরুণদের, মহামারি বিশেষজ্ঞ দিলেন অভিনব দিশাকরোনার গ্রাসে প্রায় গোটা পৃথিবী, এখনও আঁচড় পড়েনি কোন ১৪টি দেশেবাড়িতে আটঘন্টা তালাবন্ধ ৭ বছরের মেয়ে, করোনা-যোদ্ধা বাবা-মা লড়ছেন রণক্ষেত্রেগিলবার্ট আরও জানান, গবেষণার শুরুতে তাঁরাও ভেবেছিলেন, অন্তত ২০২০ সালের শেষের আগে এই টিকা তৈরি করা যাবে না। তবে এখন তাঁরা অনেকটা পথ চলে এসেছেন। পরের কয়েক সপ্তাহেই হিউম্যান ট্রায়াল, অর্থাৎ এই টিকা মানুষের শরীরে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে কিনা, তার পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে। তাই তিনি এখন দ্রুতই এই কাজ শেষ করে ফেলার বিষয়ে আশাবাদী। আগে গিলবার্টের দল জানিয়েছিল, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে টিকাটি ব্যবহারের যোগ্য হতে ১৮ মাস সময় লাগবে। তবে গিলবার্ট বলছেন, এমন সময়ে টিকা তৈরি করে লাভ কী, যখন সেই টিকার সাহায্য নেওয়ার মতো কেউ থাকবেই না। তাই তারা, দিনরাত এক করে, যত দ্রুত এই টিকা তৈরি করা যায়, সেইদিকে মন দিয়েছেন।
করোনভাইরাস তার গঠনে বিরাট পরিবর্তন আনলে, এই টিকা তার রূপান্তরিত সংস্করণকে ঠেকাতে পারবে কি না সেই প্রশ্নও রয়েছে। গিলবার্টের দল সেই প্রশ্নের জবাবও দিয়েছে। তাদের মতে করোনাভাইরাস নিজেকে বদলাচ্চে ঠিকই, কিন্তু তা ফ্লু বা অন্যান্য শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা সৃষ্টিকারী ভাইরাসের মতোই ধীর গতিতে পরিবর্তন আনছে। তাই দ্রুত একবার এই টিকা তৈরি হয়ে গেলে এটি নতুন করোনভাইরাসটির অর্থাৎ সার্স-কোভ-২'এর মূল এবং অভিযোজিত সব রূপের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে পারবে শুধু নয়, এর প্রভাব থাকবে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে।