বাড়িতে আটঘন্টা তালাবন্ধ ৭ বছরের মেয়ে, করোনা-যোদ্ধা বাবা-মা লড়ছেন রণক্ষেত্রে
বাবা হাসপাতালের কম্পাউন্ডার
মা একজন পুলিশ কনস্টেবল
তারা তো করোনা-যুদ্ধে সামনে দাঁড়িয়ে লড়ছেনই
প্রতিদিন দেশের জন্য হাসিমুখে আত্মত্যাগ করছে সাত বছরের কন্যা দীক্ষিতা-ও
amartya lahiri | Published : Apr 15, 2020 7:31 PM IST / Updated: Apr 16 2020, 11:09 AM IST
এই কাহিনি রাজস্থানের ভিলওয়ারা জেলার এক করোনা-যোদ্ধা পরিবারের গল্প। সেই ভিলওয়ারা, করোনা-যুদ্ধে জিততে যাকে সারা দেশের সবকটি জেলা অনুসরণ করার কথা ভাবছে। বাবা হাসপাতালের কম্পাউন্ডার হিসাবে, আর মা একজন পুলিশ কনস্টেবল হিসাবে তাদের কর্তব্য পালন করছেন। আর এই কঠিন সময়ে দেশের জন্য হাসিমুখে আত্মত্যাগ করেছে তাদের সাত বছরের কন্যা দীক্ষিতা-ও।
প্রতিদিন বাড়িতে ৭ বছরের ছোট্ট দীক্ষিতাকে অন্তত আট ঘন্টা ধরে তালাবন্ধ অবস্থায় থাকতে হয়। তাঁর বাবা মহাত্মা গান্ধী হাসপাতালের বিচ্ছিন্নতা কেন্দ্রে কম্পাউন্ডার হিসাবে কাজ করছেন। একটি বিখ্যাত হাসপাতালই মার্চ মাসের শেষে করোনাভাইরাস ছড়ানোর কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছিল। আর ভিলওয়ারা হয়েছিল দেশের অন্যতম করোনা হটস্পট। তাই দীক্ষিতার বাবা গত ১৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে বাড়ি ফেরার সুযোগ পাননি। আর মা, সরোজ কুমার রাজস্থান পুলিশের একজন মহিলা কনস্টেবল। ভিলওয়ারার বাসিন্দারা যাতে সম্পূর্ণ লকডাউন-এর সময় বাড়ি থেকে না বের হন, সেটা নিশ্চিত করেছেন তিনি। বাড়িতে আর কেউ নেই যে দীক্ষিতাকে দেখে রাখতে পারবে। তাই ৭ বছরের কন্যা দীক্ষিতাকে ৮ ঘন্টা বন্ধ রেখে দেওয়াটা কঠিন হলেও সরোজ কুমার-কে সেটাই করতে হয়। তিনি জানিয়েছেন, 'দেশ তো সবার আগে আসে। সংক্রমণের আশঙ্কায় আমার স্বামী গত ১৫ দিন ধরে বাড়িতে আসেননি। এই পরিস্থিতিতে একটি উপায় - মেয়েকে বাড়িতে তালাবন্ধ রাখা'।
তিনি আরও বলেছেন, রাজস্থান পুলিশে কাজ করার দৌলতে তিনি যে দেশের প্রতি তাঁর দায়িত্ব পালন করতে পারছেন, এই মারাত্মক রোগ থেকে মানুষকে বাঁচাতে অবদান রাখতে পারছেন, সেটাই তার ভালো লাগা। সকলকে তিনি নিরাপদ থাকতে বাড়িতে থাকার অনুরোধ করেছেন। যাতে দ্রুত এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে পারে ভারত। বাডড়ি ফিরতে পারেন তাঁর স্বামী। তালাবন্ধ অবস্থায় থাকতে না হয় দীক্ষিতাকে।
ছোট দীক্ষিতা কিন্তু অবস্থাটা মেনে নিয়েছে। সে বুঝেছে তার বাবা-মা করোনাভাইরাস নামে এক ভয়ঙ্কর দৈত্যের সঙ্গে লড়াই করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। সে বলেছে, 'মা আমাকে প্রতিদিন বাড়ির ভিতরে তালাবদ্ধ করে বাইরে যায়। আমি কোনও ভয় পাই না। সত্যি কথা বলতে এই সময়টা আমি বাড়িতে বসে হয় পড়াশোনা করি অথবা টিভি দেখি'।