জেসিকা লাল হত্যাকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত মনু শর্মা অবশেষে মুক্তি পেল। মনুর মুক্তির বিষয়ে গ্রিন সিগন্যাল দেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বৈজাল। সাজা পর্যালোচনা বোর্ডের সুপারিশের পরেই এই অনুমতি দেন বৈজাল। এর ফলে ১৪ বছর কারাবাসের পর তিহার জেল থেকে মুক্তি পেল মডেল জেসিকার লাল হত্যাকান্ডে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত সিদ্ধার্থ বশিষ্ঠ ওরফে মনু শর্মা।
আরও পড়ুন: ফের দেশে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, বন্যার মাঝেই ভয়াবহ ভূমিধসে অসমে মৃত্যু কমপক্ষে ২০ জনের
গত ১৩ মে মডেল জেসিকা লাল হত্যায় সাজাপ্রাপ্ত সিদ্ধার্থ বিশষ্ঠ ওরফে মনু শর্মাকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই বিষয়ে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের শেষ শিলমোহর লাগানো বাকি ছিল কেবল। দিল্লির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনের নেতৃত্বে সাজা সমীক্ষা বোর্ডের বৈঠকে মনু শর্মাকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। ভাল ব্যবাহরের কারণেই ১৪ বছর জেল খাটার পর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত মনু তিহার জেল থেকে মুক্তি পেল।
এর আগে মনু শর্মাকে মুক্তি দিতে কমিটির কাছে ৫ বার আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেয় সাজা সমীক্ষা বোর্ড। জানা যাচ্ছে এবারের সুপারিশ শোনার আগে তিহাড় জেল প্রশাসন, দিল্লি পুলিশ এবং জেসিকার পরিজনদের সঙ্গে মনু শর্মার মুক্তির বিষয়টি নিয়ে কথা বলে বোর্ড।
আরও পড়ুন: দেশের নাম পরিবর্তনের শুরুতেই ধাক্কা, সুপ্রিম কোর্টে প্রথম দিনেই স্থগিত হয়ে গেল শুনানি
১৯৯৯ সালের ২৯ এপ্রিল দক্ষিণ দিল্লির মেহরৌলি এলাকায় ডিজাইনার বিনা রামানির অভিজাত ট্যামারিন্ড কোর্ট রেস্তোরাঁয় খুন হন বিখ্যাত মডেল জেসিকা লাল। রাত্রি হয়ে যাওয়ায় মদ পরিবেশনে জেসিকা রাজি না হওয়ায় হরিয়ানার কংগ্রেস নেতা বিনোদ শর্মার ছেলে মনু শর্মা তাঁকে গুলি করে হত্যা করে। এই ঘটনায় সাত বছর ধরে বিচার চলার পর ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সমস্ত অভিযুক্তকে মুক্তি দিয়ে দেয় আদালত।
খুনি মনু শর্মা শাস্তি না পেয়ে মুক্তি পেয়ে যাওয়ায় বিষয়টি অবশ্য চুপ করে হজম করেননি জেসিকা লালের বোন। তিনি বিষয়টি নিয়ে মিডিয়ার কাছে দরবার করেন, জনগণের কাছেও যান। এরপরেই সারা ভারত জুড়ে জেসিকা লাল হত্যা মামলা নিয়ে আলোড়ন পরে যায়। যার জন্য ২০০৬ সালে ফের মামলার শুনানি শুরু করতে হয় আদালতকে। এরপর ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে দিল্লি হাইকোর্ট মনু শর্মাকে দোষী ঘোষণা করে। পরে মনু শর্মা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলে সেখানেও হাইকোর্টের সাজাই বহাল রাখা হয়।
এদিকে মনু শর্মার মুক্তি চেয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল তার স্ত্রী। শেষপর্যন্ত তিনি মানবাধিকার কিমশনের দ্বারস্থ হন। এরপর নিহত জেসিকা লালের বোন স্যাব্রিনা লালও তিহার জেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে জানান, মেয়াদ ফুরনোর আগে মনু শর্মার মুক্তি নিয়ে তাঁর কোনও আপত্তি নেই।