বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট এবং বায়োটেকনোলজি বিভাগ এবং কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা বিভাগ থেকে পাওয়া মতামতের উপর আলোচনা করা হয়। এরপরে ICAR-এর নির্দেশিকা অনুযায়ী বীজ উৎপাদন ও পরীক্ষার জন্য সরষের হাইব্রিড DMH-11 ব্যবহারিক প্রয়োগের সুপারিশ করা হয়।
কৃষিবিজ্ঞানের উন্নতির পথে আরও এক ধাপ। পরিবেশ মন্ত্রকের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং মূল্যায়ন কমিটি বা GEAC তৈরি করেছে DMH বা ধারা সরষে হাইব্রিড-১১। এর মাধ্যমে ভারত তার প্রথম জেনেটিকালি-সংশোধিত খাদ্য ফসলের পরীক্ষায় এক ধাপ এগিয়েছে। DMH (ধারা সরষে হাইব্রিড)-১১ হল একটি জেনেটিকালি-পরিবর্তিত সরষে হাইব্রিড যা দিল্লি ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের একটি দল তৈরি করেছে। তাঁদের আর্থিকভাবে সাহায্য করেছে কেন্দ্র সরকার।
GEAC, বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট এবং বায়োটেকনোলজি বিভাগ এবং কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা বিভাগ থেকে পাওয়া মতামতের উপর আলোচনা করা হয়। এরপরে ICAR-এর নির্দেশিকা অনুযায়ী বীজ উৎপাদন ও পরীক্ষার জন্য সরষের হাইব্রিড DMH-11 ব্যবহারিক প্রয়োগের সুপারিশ করা হয়। এর বাণিজ্যিক মুক্তির আগে অন্যান্য বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার আবেদন করা হয়।
বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিবেদনে মৌমাছি এবং অন্যান্য পরাগায়নকারীদের উপর জেনেটিক্যালি-পরিবর্তিত সরষের প্রভাব সম্পর্কে প্রমাণ পরীক্ষা করা হয়েছে। এই পরীক্ষার বাস্তব প্রয়োগ জরুরি বলে মনে করা হচ্ছে। নিজেদের রিপোর্টে কমিটি উল্লেখ করেছে যে মধু মৌমাছি এবং অন্যান্য পরাগায়নকারীরা বার, বারনেস এবং বারস্টার সিস্টেমের দ্বারা বিরূপভাবে প্রভাবিত হবে বলে মনে হয় না। আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাওয়া বৈজ্ঞানিক প্রমাণের মূল্যায়ন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সুপারিশ অনুসারে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয়েছে।
জিইএসি-কে জিই সরষের ব্যবহারিক প্রয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য এবং ICAR নির্দেশিকা অনুসারে আরও মূল্যায়ন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কমিটি একই সময়ে, মধু মৌমাছির উপর জিই সরষের প্রভাব সম্পর্কিত ক্ষেত্রের প্রদর্শনী বিশ্লেষণের পরামর্শ দিয়েছে। ভারতীয় কৃষি-জলবায়ু পরিস্থিতিতে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ তৈরি করতে এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে ICAR তত্ত্বাবধানে দুই বছরের মধ্যে নতুন পরীক্ষা ও পরবর্তী ধাপের পরীক্ষা পরিচালনা করা হতে পারে।
ধারা সরষে হাইব্রিড -১১ সম্পর্কে আরও তথ্য
ন্যাশনাল ডেইরি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (NDDB) এবং দিল্লি ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে GM সরিষার পেটেন্টের মালিকানা অর্জন করেছে। উল্লেখ্য, পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশের প্রায় ৬০ লক্ষ কৃষক প্রায় ৭০ লক্ষ হেক্টর জমিতে সরষের চাষ করে। যদিও, বিশ্বব্যাপী গড় ফলন হেক্টর প্রতি তিন টন পর্যন্ত, ভারতে, ফলন হেক্টর প্রতি এক টনের একটু বেশি। কারণটি মূলত আগাছার উপদ্রব। রিপোর্ট অনুসারে, ফসলের ক্ষতির ৩০ শতাংশ পর্যন্ত আগাছা দায়ী। ধারা সরিষা হাইব্রিড-১১-এর ক্ষেত্রে এই সমস্যা এখনও দেখা যায়নি।
যাইহোক, পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা হাইব্রিড সরষের ব্যবহারিক প্রয়োগের বিরোধিতা করে বলেছেন যে এটি ফসলের জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি এবং দীর্ঘমেয়াদে খাদ্য নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে। বিশেষজ্ঞদের দাবি যে হাইব্রিড সরষে মধু মৌমাছি এবং পরাগায়নের ক্ষতি করতে পারে। এই বিষয়টির ওপরে বিশেষ গবেষণা করা হয়নি। সরষে বায়ু এবং পোকামাকড়ের মাধ্যমে পরাগায়ন করা হয়। তাই সঠিক পরীক্ষা না হলে ভারতে সামগ্রিকভাবে সরষের ফলন দূষিত হতে পারে।
আরও পড়ুন-
সানমার্গ চিটফান্ড কাণ্ডের অভিযুক্ত সঞ্জয় কি শুভেন্দু অধিকারীর ‘ঘনিষ্ঠ’? সিবিআইয়ের হাতে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য !
‘আরও অনেকেই গ্রেফতার হবেন’, শাসকদলের উদ্দেশে তির্যক মন্তব্য দিলীপ ঘোষের! ইডি-সিবিআইয়ের পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
‘অজ্ঞ অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্ত করুন,’ কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে চিঠি দিলেন রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান