
ভারতের সংস্কৃতিতে শ্বশুরমশাই ও জামাইয়ের সম্পর্ক স্নেহের ও যথেষ্ট সম্মানের। জামাইকে নিজের বাড়ির ছেলের মতোই মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে এই পুত্রসম জামাই কি শশুরমশাইয়ের সম্পম্পত্তির ভাগ পেতে পারে? কী বলছে ভারতীয় আইন?
এক্ষেত্রে ধর্মভেদে নিয়ম ভিন্ন হতে পারে। ধর্ম-সংস্কৃতি অনুযায়ী ভারতীয় আইনের পরিকাঠামো ভিন্ন, আসুন জেনে নি।
১। হিন্দু উত্তরাধিকার আইন
হিন্দু উত্তরাধিকার আইন ১৯৫৬ অনুযায়ী, জামাই অর্থাৎ মেয়ের বর শ্বশুরের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হিসেবে স্বয়ংক্রিয় বা স্বাধীন ভাবে নির্বাচিত হতে পারেন না। উত্তরাধিকারীদের নির্ধারিত তালিকায় জামাইয়ের নাম থাকে না।
তবে যদি মেয়ে অর্থাৎ স্ত্রীর নাম করে শ্বশুর সম্পত্তি দিয়ে যান উত্তরাধিকার অথবা উইলের মাধ্যমে, তাহলে স্ত্রী সেই সম্পত্তির অধিকারী হবেন। পরবর্তীকালে বর সেই সম্পত্তিতে পরোক্ষভাবে অধিকার লাভ করতে পারেন, তবে তা স্ত্রীর মাধ্যমেই।
২। উপহার বা উইলের মাধ্যমে অধিকার
যদি শ্বশুরমশাই তার জামাইকে উপহার বা উইলের মাধ্যমে সম্পত্তি প্রদান করেন এবং তা যথাযথভাবে রেজিস্টার্ড হয়, তাহলে জামাই সেই সম্পত্তির উপর আইনি অধিকার অর্জন করতে পারেন। তবে এটি সম্পূর্ণই শ্বশুরের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, উত্তরাধিকার আইনের আওতায় পড়ে না।
৩। শরিয়ত আইন
ইসলামিক উত্তরাধিকার আইন অনুসারে, মুসলিম শ্বশুরমশাই তার মোট সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ উইলের মাধ্যমে যে কাউকে দিয়ে যেতে পারেন। এই ক্ষেত্রে জামাইকে উইলে অন্তর্ভুক্ত করলে, জামাই সেই অংশের আইনি উত্তরাধিকার হতে পারেন। তবে, শরীয়ত অনুযায়ীও স্বয়ংক্রিয়ভাবে জামাই সম্পত্তির অধিকারী হতে পারেন না।
৪। খ্রিস্টান উত্তরাধিকার আইন
খ্রিস্টানদের ক্ষেত্রেও জামাই শ্বশুরের সম্পত্তির স্বাভাবিক বা স্বয়ংক্রিয় উত্তরাধিকারী হন না। তবে উইল করে যদি জামাইকে সম্পত্তি দেওয়া হয়, তাহলে তা আইনগতভাবে বৈধ হবে।