ভারতের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ইউরোপ ও আমেরিকা কিছুই করছে না। রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করল বিজেপির রবিশঙ্কর প্রসাদ।
লন্ডন সফরে রয়েছে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। সেখানে তিনি কেন্দ্র বিরোধী একের পর এক মন্তব্য করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ ভারতের গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারের জন্য যথেষ্ট কাজ করছে। না। কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ এই দেশ অর্থাৎ ভারত থেকে প্রচুরণ বাণিজ্যিক সুবিধে ও অর্থ পাচ্ছে। সেই কারণে ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে কোনও মন্তব্য করছে না। রাহুল লন্ডনের মাটিতে দাঁড়িয়ে আরএসএসকে ফ্যাসিবাদী সংগঠনের সঙ্গেও তুলনা করেছেন। রাহুলের এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিজেপি। সাংবাদিক সম্মলেন করে রাহুল গান্ধীর তীব্র সমালোচনা করেন রবিশঙ্কর প্রসাদ।
রবিশঙ্কর প্রসাদ সাংবাদিক সম্মেলনে রাহুল গান্ধীর তীব্র সমালোচনা করেছেন। বলেছেন রাহুল গান্ধী ভারতের গণতন্ত্র , সংসদ, বিচারব্যবস্থা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বিদেশিদের হাতে তুলে দিতে চাইছেন। তিনি বলেন এই ক্ষেত্রগুলিতে বিদেশি হস্তক্ষেপ চাওয়া অত্যন্ত লজ্জাজনক। একই সঙ্গে তিনি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ও কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীর দিকেও প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাহুল গান্ধীর মন্তব্য সনিয়া আর খাড়গে সমর্থন করেন কিনা? পাশাপাশি রাহুলের মন্তব্য নিয়ে সনিয়া ও খাড়গেকে তাঁদের অবস্থানের কথা জানাতে বলেন।
লন্ডনের অনুষ্ঠানে রাহুল গান্ধী আরএসএসকে ফ্যাসিবাদী সংগঠনের সঙ্গেও তুলনা করেন। এর উত্তরে রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, আরএসএস একটি জাতীয়তাবাদী সংগঠন। 'আমরা গর্বিত যে আমরা সবাই স্বয়ংসেব, যারা এখানে বসে আছি।' রবিশঙ্করের অভিযোগ রাহুল গান্ধী মাওবাদী ভাবধারায় প্রবাহিত হচ্ছেন।
রবিশঙ্কর প্রসাদ বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে নিয়ে রাহুল গান্ধীর মন্তব্যেরও তীব্র সমালোচনা করেন। রাহুল গান্ধী বলেছেন, জয়শঙ্কের চিনা হুমকির গুরুত্ব বুঝতে পারছে না। রবিশঙ্কর বলেন বর্তমানে চিনকে ভারত বিরক্ত করতে চায় না। কিন্তু চিনা হুমকি প্রতিহত করায় সীমান্তে শক্তিশালী অবকাঠামো তৈরি করেছে। তাই রাহুল গান্ধীর মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রাহুল গান্ধী স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষণে দেশকে অপমান করেননি। তিনি আরও বলেন, বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে দেশকে তিনি অপমান করতেও চান না। পাশাপাশি তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদী বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে বলেছেন, গত ৭০ বছরে অর্থাৎ স্বাধীনতার পরে দেশে কোনও কাজ হয়নি। ১০ বছর ভারতে সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে। এই মন্তব্য করে তিনি দেশের প্রতিটি মানুষকে আক্রমণ করেছেন। রাহুল আরও বলেন, মোদীর এই মন্তব্য দেশের প্রতিটি মানুষের পূর্বপুরুষদেরও আক্রমণ করেছে। তিনি আরও বলেন কেন্দ্রীয় সরকার দেশের সম্পত্তি আদানিদের হাতে তুলে দিচ্ছে।
রাহুল গান্ধী আরও বলেছেন, মূল ধারনা যে আরএসএস ও বিজেপির-র সঙ্গে লড়াই করা দরকার। কিন্তু এই দুই শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করলে হারতে হবে - এমনটাই মনে গেঁথে গেছে বিরোধীদে। তবে এর সঙ্গে বাস্তবের কোনও সম্পর্ক নেই। তার জন্য প্রথম থেকেই কৌশল করতে হবে। তবে বিরোধীরা এখন সরকারের বিরুদ্ধে অনেক বেশি সক্রিয়। তবে তিনি বলেন ভারতের বিরোধীদের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তারা দেশের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।