এই ক্ষেপণাস্ত্র সম্পূর্ণরূপে ভারতে তৈরি। এমআরএসএএম তৈরির মাধ্যমে দেশ স্বনির্ভর ভারতের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়েছে। হায়দ্রাবাদের ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রির (আইএআই) সহযোগিতায় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও) ক্ষেপণাস্ত্রটি তৈরি করেছে।
মঙ্গলবার ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে আরও একটি বড় সাফল্য পেল ভারতীয় নৌ সেনা। মঙ্গলবার নৌ বাহিনী সারফেস-টু-এয়ার মিডিয়াম রেঞ্জ সারফেস টু এয়ার মিসাইল বা MRSAM সফলভাবে পরীক্ষা করেছে। এই মিসাইলটি বিশাখাপত্তনম গাইডেড ডেস্ট্রয়ার থেকে ছোঁড়া হয়েছিল। এটি একটি জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র যা চোখের পলকে শত্রুর জাহাজের বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করে দেবে। পরীক্ষার সময়, এমআরএসএএম দুর্দান্ত নির্ভুলতার সাথে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছিল।
এই ক্ষেপণাস্ত্র সম্পূর্ণরূপে ভারতে তৈরি। এমআরএসএএম তৈরির মাধ্যমে দেশ স্বনির্ভর ভারতের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়েছে। হায়দ্রাবাদের ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রির (আইএআই) সহযোগিতায় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও) ক্ষেপণাস্ত্রটি তৈরি করেছে। এই ডেস্ট্রয়ারে ৩২টি অ্যান্টি-এয়ার বারাক মিসাইল মোতায়েন করা যেতে পারে। বারাক 8ER মিসাইলও এতে মোতায়েন করা যেতে পারে। যার রেঞ্জ ১৫০ কিমি। ১৬টি অ্যান্টি-শিপ বা ল্যান্ড অ্যাটাক ব্রহ্মোস মিসাইলও এমআরএসএএম-এ ইনস্টল করা যেতে পারে।
এর বিশেষত্ব কি?
এই ক্ষেপণাস্ত্রের বিশেষত্ব হল এটি একই সঙ্গে ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরার মাধ্যমে বাতাসে আসা লক্ষ্যবস্তু বা শত্রুদের আক্রমণ করতে পারে। মিডিয়াম রেঞ্জ সারফেস টু এয়ার মিসাইল (এমআরএসএএম) ১০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে শত্রু থেকে আসা যেকোনো ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, ফাইটার এয়ারক্রাফট, হেলিকপ্টার, নজরদারি এবং বায়বীয় শত্রুদের খতম করতে পারদর্শী। খুব কম সময়ের মধ্যে এটি লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করতে সক্ষম। এর রেঞ্জ বেশি হওয়ায় দূরের টার্গেটকেও খতম করতে পারে MRSAM।
শত্রুর সঠিক তথ্য পেতে এই মিসাইলটিতে কমব্যাট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, মোবাইল লঞ্চার সিস্টেম, রাডার সিস্টেম, অ্যাডভান্স লং রেঞ্জ রাডার, রিলোডার ভেহিকেল ইত্যাদি স্থাপন করা হয়েছে। MRSAM-এর ওজন ২৭৫কেজি বলে জানিয়েছে নৌসেনা। এর দৈর্ঘ্য ৪.৫ মিটার এবং ব্যাস ০.৪৫ মিটার। এই ক্ষেপণাস্ত্রে ৬০ কেজি ওয়ারহেড বসানো যাবে। এটি একটি দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্ষেপণাস্ত্র যা উৎক্ষেপণের পর কম ধোঁয়া নির্গত করে।
ইসরায়েলের সঙ্গে ১৭ হাজার কোটি টাকার চুক্তি
ইসরায়েলের কাছ থেকে এমআরএসএএম মিসাইলের পাঁচটি রেজিমেন্ট কিনবে ভারত বলে নৌসেনা সূত্রে খবর। এই চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে ৪০টি লঞ্চার এবং ২০০টি মিসাইল। এই চুক্তির জন্য ভারত সরকার ১৭ হাজার কোটি টাকা খরচ করবে। এমআরএসএএম ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। বলাই বাহুল্য ভারতীয় নৌসেনার শক্তি ও মনোবল অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে এই মিসাইলের হাত ধরে।