বিদেশমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী আমাকে দেশবাসীর স্বার্থকে সামনে রেখে সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। অতীতে কোনও প্রধানমন্ত্রী দেশের বিদেশমন্ত্রীকে এরকম স্বাধীনতা দেননি।”
‘সারা বিশ্ব জুড়ে কেবলমাত্র ভারতবাসী এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত মানুষরাই নন, প্রায় ১০০ টিরও বেশি উন্নয়নশীল দেশের মানুষ সংকটের সময়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা পাওয়ার জন্য ভারত এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি আস্থা রাখেন’, রবিবার বারাণসীতে গান্ধী অধ্যয়ন কেন্দ্রে বিজেপির কাশী আঞ্চলিক ইউনিট দ্বারা আয়োজিত ভারতীয় বিদেশ নীতির উপর একটি সেমিনারে ভাষণ দেওয়ার সময় এমনই বক্তব্য রাখলেন বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। কেন্দ্রের মোদী সরকারের নয় বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বিশ্বের দরবারে ভারতের অর্জনগুলি তুলে ধরেছেন তিনি।
কোভিড মহামারীর কথা স্মরণ করিয়ে বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, “যখন এটি শুরু হয়েছিল এবং বিশ্বের কেউই এটি মোকাবিলা করার উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না, তখন প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দেশ থেকে ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনার জন্য অপারেশন ‘বন্দে ভারত’ চালু করেছিলেন। এই ঐতিহাসিক মিশনে, ৭০ লাখ ভারতীয়কে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল।” যখন টিকা দেওয়া শুরু হয়েছিল এবং সমস্ত শক্তিশালী দেশগুলি শুধুমাত্র তাদের নিজস্ব জনসংখ্যাকে কভার করার চেষ্টা করেছে, তখন নরেন্দ্র মোদী আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, ভারত ১০০ টিরও বেশি উন্নয়নশীল দেশে ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে।
“মোদী ‘মিশন ভ্যাকসিন মৈত্রী’ চালু করে সেই উন্নয়নশীল দেশের জনসংখ্যার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেছেন। আজ আমরা যেখানেই যাই, আমরা দেখতে পাই এই পদক্ষেপের কারণে ভারতের ভাবমূর্তি কীভাবে শক্তিশালী হয়েছে,” বলেছেন এস. জয়শঙ্কর। পাপুয়া নিউ গিনির প্রধানমন্ত্রী জেমস মারাপে, যিনি মোদীর পা ছুঁয়ে প্রণাম করেছিলেন, সেই সম্মানের উল্লেখ করে জয়শঙ্কর বলেছেন, “আমার ৪৫ বছরের কর্মজীবনে, আমি কখনওই কোনও জাতির প্রধানকে তাঁর প্রতিপক্ষের জন্য এমন অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করতে দেখিনি।”
তিনি বলেছেন, "গত নয় বছরে, নেপালে বা তুর্কিতে, যেখানেই ভূমিকম্প হোক, শ্রীলঙ্কায় বন্যা হোক, মায়ানমারের ঝড় হোক বা অন্য যে কোনও সংকটের সময়ে ভারত সব ধরনের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর উদ্যোগে উন্নয়নশীল দেশগুলো আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে যে, এইসময়ে কেউ আসুক বা না-আসুক, কঠিন সময়ে সাহায্য করার জন্য সবসময় মোদী আছেন। আমরা 'বসুধৈব কুটুম্বকম' (পৃথিবী একটি পরিবার) নিয়ে শুধুমাত্র কথা বলি না, অনুশীলনও করি।”
বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্য, “এটি প্রধানমন্ত্রী মোদীর দৃষ্টিভঙ্গি যে, তাঁর দেশের মানুষ বিশ্বের যেখানেই যান, পড়াশোনা, জীবিকা উপার্জন বা পর্যটনের জন্য, তাঁদের আত্মবিশ্বাস থাকা উচিত, যেকোনও সংকটের ক্ষেত্রে ভারত তাদের রক্ষা করতে আসবেই।” তিনি উল্লেখ করেছেন, “ইউক্রেন থেকে ২০ হাজার ভারতীয় পড়ুয়াদের উদ্ধার করতে ‘অপারেশন গঙ্গা’ এবং সুদান থেকে ৫ হাজারেরও বেশি ভারতীয়কে উদ্ধার করতে ‘অপারেশন কাবেরি’।” ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মাঝখানে ভারতের অবস্থান সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে, বিদেশমন্ত্রী বলেছেন যে, “QUAD এবং অন্যান্য পরিস্থিতি গঠনের পরে বিভিন্ন মহল থেকে চাপ তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু মোদী নিজের জায়গায় দৃঢ় ছিলেন। আমরা যদি রাশিয়ার কাছ থেকে পেট্রোলিয়াম তেল কেনার ইস্যুতে চাপের মধ্যে পড়তাম, তাহলে দেশের তেলের দামের উপর এর প্রভাব স্পষ্ট হতে পারত। প্রধানমন্ত্রী মোদী আমাকে দেশবাসীর স্বার্থকে সামনে রেখে সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। এর আগে কোনও প্রধানমন্ত্রী দেশের বিদেশমন্ত্রীকে এরকম স্বাধীনতা দেননি।”
আরও পড়ুন-
বিবাহিত নারীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মঙ্গলা গৌরী ব্রত, এবছর মোট ৯টি ব্রতের তাৎপর্য অপরিসীম
Second Taj Mahal: স্ত্রী নয়, মায়ের স্মরণে দ্বিতীয় তাজ মহল তৈরি করালেন তামিলনাড়ুর ব্যবসায়ী
PM Modi: আমেরিকা সফরের আগেই নিউ জার্সিতে চালু হল নরেন্দ্র মোদীর নামে বিশেষ মেনু ‘মোদীজি থালি’