
আমরা এখন ডিজিটাল ইন্ডিয়ার অংশ। টাকার লেনদেন থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত পরিচয় ও তথ্য সবই অনলাইনে সংরক্ষিত। তবে এই প্রযুক্তিগত সুবিধার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সাইবার ক্রাইমের আশঙ্কাও। সম্প্রতি ভারতে ব্যক্তিগত তথ্য পাচারের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। মোবাইল নম্বর, ঠিকানা থেকে শুরু করে আধার, প্যান ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মতো সংবেদনশীল তথ্য চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ব্ল্যাক মার্কেটে। এরকমই একটা জালিয়াতি ‘প্যান ২.০ স্ক্যাম’—যেখানে ভুয়ো ইমেলের মাধ্যমে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন- কোনো ব্যক্তি বাৎসরিক কত আয়ের শ্রেণিতে পড়েন বা তার বিমা করানো রয়েছে কিনা এবং সেটির নমিনিই বা কে - এই তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকরা।
‘প্যান ২.০ স্ক্যাম’ কীভাবে করা হচ্ছে?
এই স্ক্যামে প্রতারকেরা একটি ভুয়ো ইমেল পাঠায়, যা আয়কর দফতরের ওয়েবসাইটের মতোই দেখতে তবে নকল লিঙ্ক দেওয়া থাকে। সেখান থেকেই ব্যক্তিগত তথ্য জেনে নিচ্ছে প্রতারকেরা। এমনকি, আয়কর দফতরের তরফ থেকে বা উচ্চপদস্থ আধিকারিকের পরিচয় দিয়েও ভুয়ো ইমেল পাঠাচ্ছে সাইবার অপরাধীরা।
প্যান কার্ড আপডেট করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পুরনো প্যান আপডেট করে ‘প্যান ২.০’-তে রূপান্তর না করলে তা বাতিল হয়ে যাবে। এই ভয় দেখিয়েই ব্যবহারকারীর কাছ থেকে চেয়ে নেওয়া হয় প্যান নম্বর, আধার নম্বর ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য।
কীভাবে সতর্ক থাকা যায়?
১) যদি দেখেন আপনার মেলবক্সে অচেনা কোনও আইডি থেকে লিঙ্ক পাঠানো হয়েছে, তা হলে তা ক্লিক করবেন না। যতই প্রলোভন দেখানো হোক, ইমেলে অজানা আইডি থেকে আসা কোনও ওয়েবসাইটের লিঙ্ক খোলা উচিত হবে না।
২) সরকারি কোনও দফতরের ওয়েবসাইট বা আয়কর দফতরের ওয়েবসাইট থেকে প্যান আপডেট করার লিঙ্ক পাঠানো হলে,বুঝবেন সেটি ভুয়ো। কোনও সরকারি দফতর থেকেই প্যান বা আধারের তথ্য আপডেট করার বা ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে ইমেল পাঠানো হয় না।
৩) ই-প্যান কার্ড ডাউনলোড করতে বলে যদি কোনও লিঙ্ক পাঠানো হয়, তবে ভুলেও সেটি ভুলবেন না। এই ধরনের লিঙ্কে ‘ম্যালঅয়্যার’ ইনস্টল করা থাকে, যা আপনার ডিভাইসে ঢুকে ব্যক্তিগত সমস্ত অ্যাকাউন্টের দখল নিয়ে নিতে পারে।
৪) সরকারি দফতরের ইমেলের ডোমেন সবসময়ে .in, .gov.in অথবা .nic.in দিয়ে শেষ হয়।
৫) যে সাইটটি খুলছেন, তার URL-এ ‘https’ আছে কি না, দেখতে হবে। কোনও ওয়েবসাইটে যদি ‘http’-র সঙ্গে ‘s’ না থাকে, তা হলে বুঝতে হবে, সেই ওয়েবসাইটটি ভুয়ো। সেখানে গিয়ে কোনও রকম ব্যক্তিগত তথ্য দেবেন না। আধার বা প্যান কার্ডের নম্বর তো একেবারেই নয়।
৬) নিজের ইমেল বা ব্যক্তিগত অ্যকাউন্টগুলিতে ‘two-factor authentication’ চালু করে রাখুন, এতে নিরাপত্তা অনেকটাই বাড়বে।