বাংলা থেকে উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান হয়ে দক্ষিণ ভারত- ভারতীয় রাজনীতিতে নানা ধরনের পটপরিবর্তন হয়। কখনও তা সামনে আসে। কখনও আবার তা থেকে যায় পর্দার অন্তরালে। আর তাই নিয়েই এই ইন্ডিয়া গেট।
রামচরিত মানস বিতর্ক
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়েছে। যাদের অন্যতম হল সমাজবাদী পার্টি। কিন্তু তাঁদের এই লড়াইয়ে জল ঢেলে দিয়েছে দলেরই এক নেতা। রামচরিতমানস নিয়ে দলের নেতাপ বক্তব্যে সমাজবাদী পার্টির নেতা কর্মীদের অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যেখানে মনে করা হচ্ছে নির্বাচনের আগে দলের নেতাই তাদের পায়ে গুলি করে দিয়েছে।
সমাজবাদী পার্টির নেতার বক্তব্য ছিল, এটি তুলসীদাস তাঁর নিজের সুখের জন্য লিখেছিলেন। কিন্তু এর মাধ্যমে বর্তমানে অনগ্রসর শ্রেণীকে অপব্যহার করা হচ্ছে।
তবে একটা মজার বিষয় হল দলের নেতার ওপর সমাজবাদী পার্টির বাকি সদস্যরা ক্ষুব্ধ হলেও তারা মনে করছে, এটা নিছকই স্লিপ অব টাং ছিল না। দলকে বিব্রত করার জন্য তিনি উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে এই মন্তব্য করেছেন। সমাজবাদী পার্টির অন্দরে গুঞ্জন, তুলসীদাসের রামচরিত মানস নিয়ে তিনি ইচ্ছেকৃতভাবেয়ই মন্তব্য করেছেন। কারণ তাঁর দলের রাজ্যসভাপতি হওয়ার প্রবল প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু তা সফল হয়নি। অনেকেই মনে করছেন দলের এই নেতার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। দল যদি এখনই তার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ না করে তাহলে সংখ্যালঘু ভোট হারাতে সমাজবাদী পার্টির তেমন সমস্যা হবে না।
রাজস্থানের এক প্রবীণ বিজেপি নেতা রয়েছে। রাজনীতিতে যার আরও উত্থান কামনা করছে প্রতিপক্ষ কংগ্রেস। কংগ্রেসের সদস্যরা মনে মনে চাইছে সমাজবাদী পার্টির নেতা যেন দ্রুত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পায়।
কারণও জানিয়েছে রাজস্থান কংগ্রেসের একাংশ। কংগ্রেসের মনে বিজেপির ওই নেতা রাজস্থানে কংগ্রেসে নাস্তানাবুদ করার জন্য একাই একশো। নানা বিষয় নিয়ে কংগ্রেসকে সমস্যা ফেলে রেখেছেন তিনি। পাল্টা রাজস্থানের ওই নেতার জনপ্রিয়তাও দিনে দিনে বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অনুগামীর সংখ্যা। তবে বিজেপি নেতার ঘনিষ্ঠরা অবশ্য মনে করছেন মন্ত্রিসভায় জায়গা পেলে রাজস্থানে সেই নেতার প্রভাব আরও বাড়বে।
কেরজিওয়ালের বিজয়ন বন্দনা
আম আদমি পার্টির নেতারা কেরলে একটি গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। কারণ জাতীয় নেতৃত্ব কেরলের দায়িত্বে থাকা প্রধান নেতাকেই বহিষ্কার করেচছে। দলের নেতারা ভাবতেও পারেননি জাতীয় নেতৃত্ব কেরল ইউনিটকে অনাথ করে দেবে। অন্যদিকে দলের প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মুখে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের স্তুতিও দলের নেতা কর্মীদের হতাশ করেছে। এখন দলের নেতা কর্মী সকলেই কেরলের নতুন নেতার অপেক্ষায় বলে রয়েছে।
লেফট আউট
এটা ঠিক যে রাজস্থানের বিজেপি নেতারা এজাতীয় অবস্থানের সঙ্গে পরিচিত নয়। কারণ তাদের পক্ষে সকলের আমন্ত্রণ স্বীকার করা খুবই কঠিন। কিন্তু তাদের ধাক্কা খেতে হয়েছে জাতীয় নেতার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে। কারণ দিল্লির নেতার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রিতের তালিকা থেকে রাজ্যের প্রায় সব নেতার নামই কাটা গিয়েছে। তালিকায় মাত্র ২০টি নাম রয়েছে।
তবে অস্বস্তিতে পড়লেও এই নিয়ে রাজস্থানের বিজেপি নেতারা কিন্তু মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তবে বিজেপি অন্দরে গুঞ্জন আমন্ত্রণপত্র এডিটিং করার কাঁচি বিজেপির কেন্দ্রীয় সেই নেতার হাতে ছিল যিনি কারও সঙ্গে লাইমলাইট ভাগ করতে চান না।
বোস-সমস্যা
বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর জন্য রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের যে মমতা রয়েছে তাকেই পথের কাঁটা হিসেবে দেখছে বাংলার বিজেপি। বিজেপি ইউনিট ভেবেছিল ধনখড়ের জমানায় রাজভবন আর নবান্নের মধ্যে যে দঙ্গল শুরু হয়েছিল তারই সিক্যুয়াল হবে এই জমানাতেও। কিন্তু বোস ট্র্যাক চেঞ্জ করেছেন। বাংলা ভাষাক নিয়মিত পাঠ নিতে হাতে-খড়ি অনুষ্ঠান করেছে। যা মোটেও ভাল চেখে নেয়নি বিজেপি।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আমন্ত্রণ থাকা সত্ত্বেও রাজভবন মাড়াননি। তবে অনুষ্ঠানের প্রবল সমাচোলনা করেছেন।
রাজ্যপাল ও সরকারের মধ্যে সম্পর্ক সমৃণ করার কৌশল হিসেবে বিজেপি রাজভবনে একজন প্রবীণ আমলার উপস্থিতির কথা উল্লেখ করেছেন। সেই মহিলা আইএএস অফিসার আবার মমতা বিশেষ আস্থাভাজন।
অনেকেই মনে করছেন রাজ্যপাল তার পদের মর্যাদা ভুলে যাচ্ছে। এই অবস্থাতেই অমিত শাহ সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন। দলীয় সূত্রের খবর আগামীদিনের জন্য বোসকে তৈরি করতে দিল্লির নেতাই শিক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন।
আগামীর জন্য...
নারা লোকেশ- চন্দ্রবাবু নাইডুর উত্তরসুরী। তাঁর ৪ হাজার কিলোমিটার যাত্রা শুরু হয়েছে ২৭ জানুয়ারি থেকে। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বাবার এটাই ছিল মোক্ষম চাল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের গুঞ্জন- রাজ্যে পদযাত্রা করে অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর কুরশি দখল করতে পেরেছে।
তেলেগু দেশম পার্টি প্রতিষ্ঠার পরপরই, সিনিয়র এনটিআর পূর্ববর্তী অন্ধ্র প্রদেশ সফর করেছিলেন যার ফলস্বরূপ টিডিপি কংগ্রেসের পতন ঘটিয়ে একটি বিশাল বিজয় লাভ করেছিল। ওয়াই এস রাজশেখর রেড্ডি, প্রাক্তন এপি-র প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীও হাস্টিং এবং মুখ্যমন্ত্রী পদে তাঁর সফল বিজয়ের আগে একটি পদযাত্রা করেছিলেন। তার ছেলে এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগনের ক্ষেত্রে এই ঘটনা।
চন্দ্রবাবু নাইডুও নিজের অবস্থান শক্ত করার জন্য পদযাত্রা করেছিলেন। স্বভাবতই, কৌতূহল উদ্দীপিত হয় যখন তার ছেলে কুপ্পামের পিতার ঘাঁটি থেকে হেঁটে যায়। যুবগালাম শিরোনাম, লোকেশ পুনরুত্থানের পরিকল্পনা করেছেন।
আরও পড়ুনঃ
শনিবারই ত্রিপুরায় দুটি দফায় ৫৪ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ বিজপির, IPFT এ পাঁচটি আসনে প্রার্থী দেবে
মুঘল গার্ডেন হয়ে গেল অমৃত উদ্যান, রাষ্ট্রপতিভবনের বাগান এই দিন থেকে খুলে দেওয়া হবে সাধারণের জন্য
রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা, কন্যাকুমারি থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত সেরা ১০টি বিতর্ক