
উত্তর ভারতে জাঁকিয়ে শীত, তাপমাত্রা কমে যেতেই চারিদিকে ঘন কুয়াশার চাদর। ভোরের আলো প্রবেশ করতে পারে না চওড়া হাইওয়েতেও। কুয়াশার চাদর ভেদ করে কয়েক হাত দূরে কী রয়েছে, বোঝার উপায় ছিল না। সেই ধাঁধার মধ্যেই একটি গাড়ির পেছনে আরেকটি গাড়ি এবং সেই গাড়ির পেছনে আরও একটি গাড়ি, এভাবে দিনের শুরুতেই একের পর এক মোট ৩০টি গাড়ির ধাক্কায় মুখ থুবড়ে পড়ল হরিয়ানার যান চলাচল ব্যবস্থা।
হরিয়ানার কারনালে ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ভোরের কুয়াশার মধ্যে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। রবিবার দিন শুরুর আগেই বিক্ষিপ্তভাবে ৩টি জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটে। ৩টি জায়গাতেই বড় বড় লরি-ট্রাকের সঙ্গে ছোট ছোট গাড়ির সংঘর্ষ হয়। সেই ভয়ঙ্কর সংঘর্ষের কবলে পড়ে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন যাত্রী আহত হন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রত্যেক জখম ব্যক্তিকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
প্রথম দুর্ঘটনাটি ঘটে কোটেল সেতুর কাছে। সেখানে আলো-আঁধারির মধ্যে প্রায় ১৫ থেকে ১৬টি গাড়ি একের পর এক ধাক্কা মারে এবং রাস্তাটি প্রায় গাড়ির স্তূপাকারে পরিণত হয়। হরিয়ানার অম্বালা-যমুনানগর-সাহারানপুর হাইওয়েতে এর পাশাপাশি আরও দুটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়িগুলির ধাক্কা লাগার সাথে সাথে ভেতরে থাকা যাত্রীরা প্রচণ্ডভাবে আহত অবস্থায় চিৎকার করতে থাকেন। সেই আর্তনাদ শুনতে পেয়ে আশেপাশের এলাকা থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে জমায়েত হয়ে যান। তড়িঘড়ি ছুটে আসেন স্থানীয় থানার কর্তব্যরত পুলিশ কর্তারাও।
পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার ভোরবেলায় ঘন কুয়াশার কারণে হাইওয়ের উপরের দৃশ্যমানতা কম ছিল। রাস্তা পরিষ্কার দেখতে না পেয়ে একটি গাড়ি হাইওয়ের ধারে রেলিংয়ে ধাক্কা মারে। এরপরই একের পর এক গাড়ি এসে পরপর ধাক্কা মারতে শুরু করে। ট্রাফিক পুলিশ অফিসার লোকেশ রানা জানান, হাইওয়েতে পরপর ১০-১৫টি গাড়ি ধাক্কা লাগার খবর মেলে। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। শুরু হয় উদ্ধারকাজ। দুর্ঘটনার কারণে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়েছিল। পরে অন্য রুটে যানবাহনগুলিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, একসঙ্গে একাধিক গাড়ির ধাক্কা লেগে সেখানেই স্থিত হয়ে যাওয়ার ফলে গাড়িগুলির ভিতরেই আহত যাত্রীরা আটকে পড়েছিলেন। প্রথমে মেশিন দিয়ে দরজা কেটে যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। পরে ক্রেনও আনা হয় দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িগুলিকে উদ্ধার করার জন্য। আহতদের তড়িঘড়ি নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, হরিয়ানার এই হাইওয়েতে চলাচলরত গাড়িগুলি বহুবার কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এর আগে ২০১৮ সালেও একটি বড় মাপের দুর্ঘটনা ঘটে প্রায় ৮ জন মানুষ মারা গিয়েছিলেন। এই সমস্যা এড়াতে ট্রাফিক পুলিশর পক্ষ থেকে চালকদের ডিপার লাইট ও ফগ লাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন-
শুধুমাত্র জেইই মেন নয়, দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষাতেও ছাত্রছাত্রীদের পেতে হবে ৭৫ শতাংশ নম্বর
মার্বেল কাটার মেশিন দিয়ে বৃদ্ধাকে কেটে ১০ টুকরো, রাজস্থানে ভয়াবহ কাণ্ড ঘটালেন শিক্ষিত যুবক
ঝাড়গ্রামে বিজেপি নেতাকে ব্যাপক মারধরের অভিযোগ, পালটা তৃণমূলের পতাকা পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলল শাসক শিবির