করোনার গ্রাসে ভারতের এই দুই ডাক্তার, দায়ি করা হচ্ছে 'জামাতি'দের, সত্যিই কি তাই

দুই ভারতীয় মহিলা ডাক্তার

তারা দুজনেই ভারতের দুই রাজ্যে কোভিড-১৯'এ  মারা গিয়েছেন

এই কাহিনী বলে নিশানা করা হচ্ছে তাবলিগি জামাতদের

পোস্টটি কি আদৌ সত্যি

amartya lahiri | Published : Apr 25, 2020 11:11 AM IST / Updated: Apr 25 2020, 04:46 PM IST

সারা বিশ্বে সংকট তৈরি করেছে কোভিড-১৯। এই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে লড়ছেন, ডাক্তার-নার্স'রা। আর চিকিৎসা করতে গিয়ে অনেকসময় তাঁরা নিজেরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, মৃত্যুও হচ্ছে। কিন্তু, সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনই দুই করোনাযোদ্ধার মৃত্যুর দাবি করে সাম্প্রদায়িক বিভেদদ তৈরি করা হচ্ছে।

দাবি - সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই মহিলা ডাক্তারের ছবি দিয়ে দাবি করা হচ্ছে একজন 'রাজস্থানের ডাক্তার মেধা ব্যাস' অপরজন 'মহারাষ্ট্রের ডাক্তার প্রিয়া খান্না'। দুজনেরই কোভিড-১৯'এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে দাবি করা হচ্ছে। এখানেই শেষ নয়, এই দুই ডাক্তারকে হারানোর যন্ত্রনার আবেগের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতার বিষ। তাবলিগি জামাত-এর দিল্লির সমাবেশ ও তারপর উত্তরপ্রদেশের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে এই সংগঠনের কিছু সদস্যের অশ্লীল আচরণের প্রসঙ্গ তোলা হয়েছে।

তথ্যানুসন্ধান -

প্রথম প্রশ্ন এঁরা কি সত্যিই রাজস্থান ও মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা? পোস্টের লেখায় দাবি করা হয়েছে ডাক্তার মেধা ব্যাস রাজস্থানের এবং ডাক্তার প্রিয়া খান্না মহারাষ্ট্রের। অথচ ছবিতে মেধা ব্যাসের নামের পাশে লেখা রয়েছে, পুনে। এশিয়ানেট নিউজ খোঁজ নিয়ে জেনেছে ডাক্তার মেঘা ব্যাস পুনেরই বাসিন্দা ছিলেন। বৃহস্পতিবার পুনের একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আর 'মহারাষ্ট্রের ডাক্তার প্রিয়া খান্না' বলে যার ছবি দেওয়া হয়েছে, তিনি ডাক্তার প্রিয়া খান্নাই বটে, কিন্তু, তিনি আমেরিকার নিউ জার্সি শহরে থাকতেন। তাঁর মৃত্যু হয়েছে গত ১৫ এপ্রিল।

দ্বিতীয় প্রশ্ন হল, এই দুই ডাক্তার কি করোনাভাইরাস সংক্রামিত হয়েই মারা গিয়েছেন? ডাক্তার প্রিয়া খান্নার কোভিড-১৯'জনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে। তাঁর বাবাও ডাক্তার ছিলেন। বাবা-মে দুজনেরই প্লাজমা থেরাপির দরকার ছিল। কিন্তু উপযুক্ত জাতার অভাবে দুজনেরই মৃত্যু হয়েছে। পুনের ডাক্তার মেধা ব্যাস এক বেসরকারি হাসপাতালে করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসা করছিলেন। কিন্তু, এই সপ্তাহের শুরুতে বাড়িতেই তিনি আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, কিন্তু বাঁচানো যায়নি। করোনাভাইরাস পরীক্ষাও করানো হয়েছিল, শুক্রবার তার ফল এসেছে নেগেটিভ।  

সিদ্ধান্ত - অর্থাৎ, সোশ্যাল মিডিয়ায় যে পোস্ট করা হচ্ছে, সেটি সর্বৈব ভুয়ো বললেও কম বলা হয়। কিছু সত্য়ি তথ্যের সঙ্গে কৌশলে মিথ্যে মিশিয়ে বিষয়টি গুলিয়ে দিতে চাওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে কায়দা করে সাম্প্রদায়িক বিষ বাষ্প ভরে তা পরিবেশন করা হচ্ছে। মহামারির এই বিপর্যয়ের সময় যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বারবার করে সকলকে এক হয়ে লড়ার আহ্বান জানাচ্ছেন, সেই সময় এই ধরণের পোস্ট ভারতকে দুর্বল করে দিচ্ছে।

Share this article
click me!