এইচআইভি আক্রান্ত এক যুবতী বিধবা মহিলাকেও ছাড়া হল না। তাঁকেও হতে হল গণধর্ষণের শিকার। সোমবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ পাটনা-ভাবুয়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে এই ঘটনা ঘটে। ট্রেনটি শেষ শেষ স্টেশনে পৌঁছনোর ঠিক আগে দুই দুষ্কৃতী ওই মহিলার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। একজন তাঁকে ধর্ষণ করে এবং অপরজন ঘটনাটির ভিডিও রেকর্ড করে। পুলিশ জানিয়েছে, দুই অপরাধীকেই গ্রেফতার করা হয়েছে এবং মহিলাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিহার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাইমুর জেলার এক বাড়ি ওই যুবতীর। মাত্র ২২ বছর বয়সেই সে স্বামীহারা, তার উপরে মারণরোগ এইচআইভি-তে আক্রান্ত। ঘটনার দিন, ওই যুবতী গয়ার এক অ্যান্টি-রেট্রোভাইরাল থেরাপি কেন্দ্র থেকে এইআইভি রোগেরই ওষুধ নিতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই ট্রেনে উঠেছিলেন তিনি।
পাটনা থেকে ট্রেনে চড়েন অভিযুক্ত বীরেন্দ্র প্রকাশ সিং এবং দীপক সিং। তাদের দুজনেরই বাড়ি কাইমুর জেলার কুদ্রা মার্কেট এলাকার চৈতি মহল্লায়। ওই যুবতী গয়ায় ট্রেনে চড়ার পর থেকেই ওই দুই দুষ্কৃতী তার পিছু নিয়েছিল। তাদের কুদ্রা স্টেশনে নামার কথা ছিল। কিন্তু, ট্রেনটি কুদ্রা স্টেশনে আসলে তারা দেখে বগিটিতে তারা ছাড়া ওই যুবতী একা আছে। তাতেই কুদ্রায় না নেমে ট্রেনটি যখন স্টেশন ছাড়তেই বিধবা যুবতীর উপর বলপ্রয়োগ করা শুরু করে অভিযুক্তরা।
অবশ্য ট্রেনটি ভাবুয়া রোড স্টেশনে পৌঁছতেই জিআরপি-র টহলদারী দল তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলে। তারা রুটিন চেকআপে বেরিয়েছিল। ট্রেনটি স্টেশনে পৌঁছলে তারা লক্ষ্য করে একটি বগির গেটগুলি বন্ধ, জানলার শাটারগুলিও নামানো। এতেই তাদের মনে সন্দেহ জাগে। কয়েকজন বগিতে ঢুকে দেখে অভিযুক্তদের একজন মহিলাকে ধর্ষণ করছে এবং অপরজন তার ভিডিও তুলছে।
ধর্ষণকারী ঘটনাস্থলেই ধরা পড়লেও অপরজন সেই সময় পালিয়ে যায়। তবে গ্রেফতার হওয়া দুষ্কৃতীকে জেরা করে তার সহযোগীর পরিচয় বের করে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ সংক্রান্ত ভারতীয় দণ্ডবিধির বেশ কয়েকটি ধারা এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনেরও একটি ধারায় অভিযোগ এনে মামলা করা হয়েছে।
তবে, এই আইনের বাইরেও সম্ভবত তারা শাস্তি পেতে চলেছে। নির্যাতিতা এইচআইভি আক্রান্ত, তা না জেনেই তারা অপরাধের পথে পা বাড়ায়। এইচআইভি অধিকাংশ ক্ষেত্রে যৌন সংসর্গে সংক্রামিত হয়। ফলে ধর্ষকদেরও এই মারণরোগে আক্রান্ত হওয়ার বড় সম্ভাবনা রয়েছে। তা যদি ঘটে তাহলে আদর্শ ন্য়ায়বিচার হল বলতে হবে।