রাজোরি-জম্মু হাইওয়ে এবং রাজোরি-কালাকোট হাইওয়েতেও বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ নাকা বসিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। জেলার নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন এলাকায় এবং রাজৌরি-কাশ্মীর সংযোগকারী মুঘল সড়কে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জম্মু ও কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আধিকারিক ও নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এতে সব সংস্থার কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন। সূত্র জানায়, টার্গেট কিলিং ও নাশকতামূলক ঘটনা রোধে তিনি বেশ কিছু নির্দেশ দেন। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ঠেকাতে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতেও বলা হয়েছে। নিরাপত্তা বৈঠকে আন্তঃসীমান্ত জঙ্গি চক্রান্ত নস্যাৎ করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
রাজৌরির ধানগাড়িতে ১ জানুয়ারি গণহত্যায় নিহতদের স্বজনদের সাথে দেখা করতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের আসার আগে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে জেলায় হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। প্রতিটি পদক্ষেপে নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া পাহারা রয়েছে। ধানগড়ির চারপাশের জঙ্গলে তল্লাশি চালায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী। রাজোরি থেকে ধানগরি পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তায় পুলিশ এবং CRPF জওয়ানরাও মোতায়েন রয়েছে।
রাজোরি-জম্মু হাইওয়ে এবং রাজোরি-কালাকোট হাইওয়েতেও বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ নাকা বসিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। জেলার নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন এলাকায় এবং রাজৌরি-কাশ্মীর সংযোগকারী মুঘল সড়কে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ধংরি গ্রামে নিহতদের পরিবারের বাড়ির আশেপাশে সিআরপিএফ, সেনাবাহিনী এবং পুলিশের এসওজি মোতায়েন করা হয়েছে। ধানগড়ি গ্রামকে পুলিশ সেনানিবাসে পরিণত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পয়লা জানুয়ারির পর দোসরা জানুয়ারি অর্থাৎ সোমবার জেলার ডাংরি এলাকায় জঙ্গিরা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে চারজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং এই সময় ছয়জন আহত হয়। এদিকে সোমবার সকালে নিহতের পরিবারের বাড়ির কাছে আইইডি বিস্ফোরণ ঘটে। এই বিস্ফোরণে এক শিশু প্রাণ হারিয়েছে এবং সাত থেকে আটজন আহত হয়। আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
দুটি ঘটনার পর স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার ভোর থেকে ডাংরি এলাকার প্রধান চত্বরে মৃতদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করছে মানুষ। ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার রাজোরি বনধের ডাক দেওয়া হয়। জনগণের দাবি ছিল রাজোরি জেলার জেলা প্রশাসক ও রাজোরির এসএসপিকে বদলি করা হোক। এর পাশাপাশি নিহতদের পরিবারের হাতে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও জানানো হয়। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানায় জনগণ। এদিকে বিস্ফোরণের খবরে ক্ষোভ আরও বাড়ে।
রবিবার জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরি সেক্টরে জঙ্গিরা সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালায়, এতে ঘটনাস্থলেই তিন সাধারণ মানুষ মারা যায়। একই সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনী গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে ও জঙ্গিদের খোঁজে অভিযান চলছে। হাইব্রিড জঙ্গিদের হাতে টার্গেট কিলিং বন্ধ করতে, জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ একটি নতুন পরিকল্পনা তৈরি করেছে। এ জন্য পুলিশ নতুন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (SoP) এবং এরিয়েল ডমিনেশন প্ল্যান (ADP) বাস্তবায়ন করেছে।