পৈশাচিক অত্যাচারের একমাত্র সাক্ষী, কেমন আছেন নির্ভয়ার সেই পুরুষ বন্ধু

সাত বছর পর ন্যায়বিচার পেয়েছে নির্ভয়া

এই জঘন্য ঘটনার একমাত্র সাক্ষী ছিল তাঁর বন্ধু

তাকেও কম আঘাত সহ্য করতে হয়নি

এখন কেমন আছেন তিনি

 

amartya lahiri | Published : Mar 20, 2020 11:31 AM IST / Updated: Mar 20 2020, 05:34 PM IST

সাত বছর পর ন্যায়বিচার পেয়েছে নির্ভয়া। বহু টালবাহানার পর শুক্রবার ভোরে ফাসি দেওয়া হয়েছে তার ছয় ধর্ষকের চারজনকে। ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে দিল্লিতে পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হয়েছিল নির্ভয়ার উপর। সেই ঘটনার একমাত্র সাক্ষী ছিলেন তাঁর এক পুরুষ বন্ধু। সেই বন্ধুর সঙ্গেই সেই রাতে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই বন্ধুকে চোখের সামনে দেখতে হয়েছিল ওই ছয়জনের দানবিক কার্যকলাপ। তাকেও কম আঘাত সহ্য করতে হয়নি। এদিন নির্ভয়া ন্যায় বিচার পেয়েছে। এখন কেমন আছেন সেই বন্ধু?

আরও পড়ুন - 'এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে', নির্ভয়াকে প্রথম দেখে কেঁদে ফেলেছিলেন ডাক্তারও

'মানসিক ক্ষত জুড়োতে অনেকটা সময় লাগে' উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে তার দেশের বাড়ি থেকে জাানিয়েছেন নির্ভয়ার সেই বন্ধুর বাবা। তিনি জানান, ওই ঘটনায় তাঁর ছেলে শরীরে যত না আঘাত পেয়েছিল, তার থেকেও বেশি আঘাত পেয়েছিল মনে। যেই ঘা শুকোতে বেশ কয়েক বছর লেগে গিয়েছে। এখন অবশ্য অনেকটাই গুছিয়ে নিয়েছেন তিনি। দিল্লির বাইরে এক জায়গায় কাজ করেন। বিবাহ করেছেন এবং একটি সন্তান-ও রয়েছে।

আরও পড়ুন - ফাঁসির আগের রাতে কেঁদে ভাসাল চার নরপিশাচ, শোনানো হল গীতা

দিল্লি আদালত গত জানুয়ারি মাসে প্রথমবার নির্ভয়াকাণ্ডের আসামিদের বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করার পরই নির্ভয়ার সেই বন্ধুর বাবা সন্তোষ জানিয়ে বলেছিলেন, 'দীর্ঘ সাত বছর পরে ন্যায়বিচার দেওয়া হয়েছে'। আর ফাঁসির পর তিনি জানিয়েছেন, অনেক বেশি সময় লেগেছে ঠিকই, তবে আইনি প্রক্রিয়ায় একটু সময় লাগে। এতে করে এতদিনে তাঁদের যন্ত্রণা-মুক্তি ঘটেছে। তিনি মনে করছেন, এদিনের পর ওই ঘটনা তাঁর ছেলেকে আর উদ্বীগ্ন করবে না। জীবনের ওই রাতটা তিনি মনের কোনায় সরিয়ে রাখতে পারবেন।

নির্ভয়ার পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে নির্ভয়ার বন্ধুর বাবার। নির্ভয়ার মা আশাদেবী ও তাঁর বাবা মামলার কাজে ব্যস্ত থাকতেন। তাই তাঁদের সঙ্গে সেভাবে কতা না হলেও প্রায়শই নির্ভয়ার মামার সঙ্গে তাঁর কথা হয় বলে জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন - 'পুরি-সবজি-কচুরি', শেষ ইচ্ছায় আর কী চাইল নির্ভয়াকাণ্ডের আসামিরা

ঘটনার সময় নির্ভয়ার বয়স ছিল মাত্র ২৩ বছর। ফিজিওথেরাপি-র ছাত্রী ছিলেন তিনি। ওই পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে সিনেমা দেখে বেশি রাতের দিকে একটি বাসে উঠেছিলেন বাডড়ি যাবেন বলে। সেই বাসেই ছিল ওই ছয় নরপিশাচ। মধ্যরাতে চলন্ত বাসে তাঁকে লাগাতার ধর্ষণ করা হয়, এমনকী গোপনাঙ্গে লোহার রড ঢুকিয়ে দেওয়ার মতো নির্মম অত্যাচার করা হয়। তারপর প্রায় বিবস্ত্র ও অচৈতন্য অবস্থায় দক্ষিণ দিল্লির এক জায়গায় রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল। ১৩ দিন পর ২৯ শে ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তাঁর দেহাবসান ঘটে।

আরও পড়ুন - ভাঙল দাদু কালুরাম-এর রেকর্ড, নির্ভয়াকে ন্যায়বিচার দিয়ে কী বলছেন পবন জল্লাদ

এই মামলার ছয় আসামির মধ্যে একজন রাম সিং তিহার জেলে বন্দি থাকা অবস্থায় আত্মহত্যা করেছেন। আরেক অভিযুক্ত নাবালক হওয়ার নাবালক বিচার ব্যবস্থায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে তিন বছর রিফরমেশন হোমে ছিল। তারপর তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

 

Share this article
click me!