লকডাউনে বন্ধ স্নান, বাধ্য করছেন সঙ্গমে, স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশে নালিশ স্ত্রীর

লকডাউন অনেকের জীবনেই অভিশাপ হিসাবে দেখা দিয়েছে

খাদ্য সংকট, আর্থিক অনটনের সঙ্গে সঙ্গে অনেকের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে

এবার এক মহিলা অভিযোগ করলেন তাঁর স্বামী স্নান করছেন না

আর সেই অবস্থায় তাঁকে সহবাসে বাধ্য করছেন

 

amartya lahiri | Published : Apr 20, 2020 11:25 AM IST

বিশ্বব্যপী ছড়িয়ে পড়েছে মারাত্মক করোনাভাইরাস। আর এই সংক্রমণের শৃঙ্খলল ভাঙতে বিভিন্ন দেশের মতো ভারতেও চলছে লকডাউন, সেই সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুশীলন। লকডাউনে ঘরে বন্দি হয়ে অনেকেই নতুন নতুন দক্ষতা অর্জনে মন দিচ্ছেন, সময়ের অভাবে যা কখনও করা হয়নি, সেই ধরণে কাজে মন দিচ্ছেন, পরিবারের সঙ্গে কিছু ভালো সময় কাটাচ্ছেন। আবার অন্যদিকে, একটা বড় অংশের মানুষের জন্য এই লকডাউনটি অভিশাপ হিসাবে নেমে এসেছে। অনেকে ২১টা দিন দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে নিতে চাইলেও, লকডাউনের সীমা বাড়ায় আর যেন এই চাপ নিতে পারছেন না।

দুঃস্থদের খাদ্য সংকট, আর্থিক অনটলনের সমস্যা তো আছেই, সেইসঙ্গে লকডাউন-এ অনেকের মানসিক স্বাস্থ্যেরও অবনতি ঘটছে। কলকাতাতেই এক প্রতিবন্ধী যুবককে উত্তেজনার বশে খুন করে ফেলেছেন তাঁর অশীতিপর বাবা। গত কয়েকদিনে ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স বা গার্হস্থ হিংসার বেশ কিছু ঘটনা-ও সামনে এসেছে। ভারতীয় মহিলারা অনেকেই তাদের স্বামীর হাতে হেনস্থার শিকার হয়ে এই সংকটের সময় পুলিশের সাহায্যপ্রার্থী হয়েছেন। রবিবার, বেঙ্গালুরুতেও এমনই একটি ঘটনার কথা জানা গেল, তবে এই ক্ষেত্রে ঘটনাটিতে বেশ খানিকটা বৈচিত্রও রয়েছে।  

বেঙ্গালুরু পুলিশ পরিচালিত মহিলাদের জন্য 'পরিহার' নামে একটি হেল্পলাইন পরিষেবা চালায়। সেই হেল্পলাইনে ফোন করে এক ৩১ বছর বয়সী এই মহিলা অভিযোগ করেন, লকডাউনের সময় তাঁকে তাঁর স্বামী মানসিক নির্যাতন করছেন। কী ধরণের মানসিক নির্যাতন? ওই মহিলা জানিয়েছেন, তাঁর স্বামীর একটি মুদিখানার দোকান রয়েছে। লকজাউনে তাঁর দোকান খোলা রাখতে অসুবিধা ছিল না। কিন্তু, তহবিল নেই এই ছুতোয় তিনি দোকান খুলতে রাজি হননি।

ছবি প্রতিনিধিত্বমূলক

গত ২৪ মার্চ মধ্যরাতে প্রথমবার ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই মহিলার অভিযোগ, সেই থেকে তাঁর স্বামী বাড়ি থেকে বের হওয়া বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে স্নান করাও বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি নিয়মিত স্বামীকে কাছে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার গুরুত্ব বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু, স্বামী তাঁর কথা কানে তোলার-ও প্রয়োজন বোধ করেননি। এমনকী তাঁদের এক নয় বছরের মেয়ে রয়েছে। বাবার দেখাদেখি সেও স্নান এড়িয়ে চলা শুরু করে দিয়েছে। লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির পরও এই রুটিনের কোনও নড়চড় হয়নি।

এখানেই অবশ্য ওই মহিলার অভিযোগ শেষ হয়নি। তিনি জানিয়েছেন, স্বামী ওইরকম নোংরা হয়ে থাকতে চাইলেও, তিনি নিজে খুবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। কিন্তু, স্বামী ওই নোংরা গায়েই তাঁকে সহবাস করতে প্রায় বাধ্য করছেন। মহিলার দাবি তিনি যৌন সম্পর্ক করতে অস্বীকার করলে তাকে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে।

ভারতের অধিকাংশ করোনা রোগীই ধরাছোঁয়ার বাইরে, নয়া পরিসংখ্যানে উদ্বেগ বাড়ালো আইসিএমআর

এইডস-এর টিকা তৈরি করতে গিয়েই কি করোনার উদ্ভব, নোবেলজয়ীর দাবিতে তোলপাড় গোটা বিশ্ব

করোনা-কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যৌন কেলেঙ্কারি, রোগীরাই মিলিত হচ্ছেন একে অপরের সঙ্গে

 

বেঙ্গালুরু পুলিশের তরফ থেকে সিনিয়র কাউন্সিলর বিএস সরস্বতী-কে ওই দম্পত্তির সমস্যা মেটাবার অনুরোধ করা হয়। তিনি জানিয়েছেন, ওই দম্পতির সঙ্গে রবিরারই তাঁরা কথা বলেছেন। ওই ব্যক্তিকে স্বাস্থ্যবিধি ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তিনি অবশেষে স্নানের উপর থেকে লকডাউন তুলে নিতে সম্মত হয়েছেন।

উল্লেখ্য গত বছর শীতের সময় বিহারের এক মহিলা স্বামী স্নান করেন না বলে তাঁর বিরুদ্ধে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেছিলেন। সেই ঘটনা নিয়েও দেশে যথেষ্ট আলোড়ন পড়েছিল। সেই ক্ষেত্রেও ম্য়ারেজ কাউন্সিলররা ওই দম্পতিকে ডেকে বুঝিয়ে শুনিয়ে তাদের সমস্যা মিটিয়ে দিয়েছিলেন।

 

Share this article
click me!