লাদাখ সংঘাত ঘিরে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা প্রবল হচ্ছে, নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে ফের হুঁশিয়ারি দিল্লির

  • প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় নতুন কাঠামো নির্মাণ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে 
  • চিনকে ফের একবার স্পষ্ট করে জানিয়ে দিল ভারত
  • গালওয়ান সংঘাতের পরবর্তী পরিস্থিতির দিকে নজর গোটা বিশ্বের
  • তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা

Asianet News Bangla | Published : Jun 27, 2020 3:44 AM IST / Updated: Jun 27 2020, 09:17 AM IST

১৫ জুনের সংঘর্ষের পর শান্তি আলোচনা চললেও লাদাখ সীমান্তে দু'পক্ষই সেনা বাড়িয়ে চলেছে। ফলে ক্রমেই চড়ছে উত্তেজনার পারদ। এর মধ্যে ভারত ফের একবার হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে দিল, সীমান্তে সামরিক উত্তেজনা প্রশমন ঘটাতে হলে গালোয়ানকে নিজের জমি বলে দাবি না করে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় নতুন কাঠামো নির্মাণ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে চিনকে। 

চিনে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিসরি শুক্রবার স্পষ্ট করে দেন , প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সামরিক সংঘাত রোখার একমাত্র রাস্তা একটাই, চিনকে অবিলম্বে সেখানে নতুন কাঠামো তৈরি বন্ধ করতে হবে।

আরও পড়ুন: এতকিছুর পরেও একটুও বদলায়নি চিন, ফের ভারতীয় এলাকা দখল লাল ফৌজের

তিনি বলেন, গালওয়ানকে নিজেদের জায়গা বলে যে দাবি করে আসছে চিন, তা একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়। এধরনের ভুল দাবি করা হলে, সমস্যা রয়েই যাবে। চিন যদি স্থিতাবস্থা পাল্টানোর চেষ্টা করে, তাহলে বৃহত্তর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এর মধ্যেই সেনা সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত ১৫ জুন যেখান সংঘর্ষ হয়েছিল সেই পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪ কাছে ফের ঘাঁটি গেড়েছে চিনা সেনা। যার ফলে পেট্রোলিং পয়েন্ট ১০,১১,১১এ এবং ১৩ পৌঁছতে পারছেন না ভারতীয় জওয়ানরা। চিনের অনমোনীয় আগ্রাসন নীতির কারণে ঘটনার গতপ্রকৃতি যেদিকে এগোচ্ছে তাতে দুই দেশের সীমান্ত সংঘাতকে কেন্দ্র করে অদূর ভবিষশ্যতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধও বেধে যেতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

গালওয়ানে যে চিনা আগ্রাসন চলছে তা বিশ্বের অন্যান্য শক্তিধর দেশগুলিও বুঝতে পারছে। যদিও এখনও প্রকাশ্যে কেউই এই বিষয়ে তেমন কিছুই বলেনি। ভারত ও চিন দুই তরফের মিত্র রাষ্ট্র রাশিয়া নিজেদের স্বার্থেই মুখ বন্ধ রেখেছে। কারণ তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় সমস্যার সমাধানে রাজি নয় ভারত  ও চিন কেউই। এই অবস্থায় রাশিয়া কার পাশে দাঁড়াবে তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে।

আরও পড়ুন: এবার আকসাই চিনের জমি ফেরাতে মরিয়া ভারত, লাদাখে মোতায়েন ৪৫ হাজার জওয়ান

যদিও চিনের বিপরীত মেরুতে রয়েছে আমেরিকা। গালওয়ান সংঘর্ষের পর আলোচনার মাধ্যেম সমস্যার সমাধানের কথা বলেও ইতিমধ্যে মার্কিন সেনা ইউরোপ থেকে এশিয়ার দিকে রওনা দিয়েছে তা জানিয়ে দিয়েছে ওয়াশিংটন। এই অবস্থায় আমেরিকা ভারতের দিকেই ঝুঁকে থাকবে বলাই বাহুল্য। অন্যদিকে জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও চিনের সমস্যা থাকায় তাদের সমর্থন পাবে দিল্লি। আর স্বাভাবিক নিয়মে পাকিস্তান ও উতত্র কোরিয়া দাঁড়াবে চিনের পিছনে। এই অবস্থায় চিন নমনীয় না হলে যুদ্ধ পরিস্থিতি যে তৈরি হয়ে যাবে তা বলে দিচ্ছে প্রেক্ষাপট।

কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে আলোচনার মাধ্যমে ভারত সীমান্ত সমস্যা মেটানোয় আগ্রহ দেখিয়েছে। কিন্তু চিন এখনও একগুঁয়েমি করে ভারতের জমি আঁকড়ে বসে রয়েছে। গলওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে তারা ৮০০ মিটার দূরে রয়েছে বলে দাবি করলেও, উপগ্রহ চিত্র কিন্তু সে কথা বলছে না। ভারতীয় ভূ-খণ্ডের যে অংশ চিন অবৈধ ভাবে দখল করে স্থায়ী কাঠোমো গড়ে তুলেছে।  সেখান থেকে সরার নাম করছে না। এই অবস্থায় চিন নতুন করে প্ররোচনা দিতে শুরু করলে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যে আরও জটিল হয়ে উঠবে তা বলে দিচ্ছে সামগ্রকি প্রেক্ষাপট। 

Share this article
click me!