হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে একেবারে 'হু'-এর উল্টোপথে, আইসিএমআর কি হল 'আত্মনির্ভর'

Published : May 26, 2020, 07:00 PM IST
হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে একেবারে 'হু'-এর উল্টোপথে, আইসিএমআর কি হল 'আত্মনির্ভর'

সংক্ষিপ্ত

করোনা রুখতে হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইন-এর ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ও হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইন শাখা বন্ধ রেখেছে কিন্তু, উল্টোপথে হাঁটল আইসিএমআর তাহলে তারা হু-অবলম্বন কাটিয়ে আত্মনির্ভর হল  

করোনাভাইরাস-এর সম্ভাব্য প্রতিরোধক হিসাবে ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইন-এর ব্যবহার নিয়ে বিশ্বব্যপী উদ্বেগ বাড়ছে। এমনকী গত সোমবার থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লুএইচও-ও পরীক্ষাগারে হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু, তার মাত্র দুদিন পরই ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিকাল রিসার্চ সাফ জানিয়ে দিল, ভারতের স্বাস্থ্য পরিষেবা কর্মীদের মধ্যে কোভিডি-১৯ এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ওষুধ হিসাবে হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইন -এর ব্যবহার অব্যাহত থাকবে।

মঙ্গলবার আইসিএমআর-এর ডিরেক্টর জেনারেল ডাক্তার বলরাম ভার্গব বলেছেন, গত মার্চ মাসে ইন-ভিট্রো গবেষণায় দেখা গিয়েছিল হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন-এর অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তারপরই এই ওষুধটি ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছিল। ডাক্তার ভার্গবের দাবি, পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণা এবং কেস কন্ট্রোল গবেষণাগুলিতে এর খুব একটা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। এদিন কোভিড-১৯ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য পেশ করার সময়ে তিনি জানান, এই ওষুধ ভারতে সহজলভ্য এবং করোনা-র বিরুদ্ধে সুরক্ষা গ্রহণের জন্য কার্যকর বলে মনে করছেন তাঁরা। তবে চিকিৎসকদের কড়া তদারকিতেই এই ওষুধটি ব্যবহার করা হচ্ছে।

এদিন, ডাক্তার ভার্গব আরও জানিয়েছেন, আইসিএমআর সুপারিশ করার পরের কয়েক সপ্তাহে ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন বা এইচসিকিউ ব্যবহার নিয়ে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে ব্যবহারকারীদের কোনও বড় রকমের ক্ষতি হচ্ছে না, বরং লাভের পরিমাণই বেশি। এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, এআইএমএস হাসপাতালে বিভিন্ন সংস্থার করা পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণা এবং আইসিএমআর-এর গবেষণাগারে রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা এবং দিল্লির তিনটি সরকারি হাসপাতালে করা পর্যবেক্ষনমূলক গবেষণা থেকে। তিনি জানিয়েছেন, তাতে দেখা গিয়েছে করোনার বিরুদ্ধে এই ওষুধ কাজ করছে। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বলতে, মাঝে মাঝে বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, এবং বুক ধড়ফড় করা।

তাই এইচসিকিউ ওষুধ এখন ভারতে আধা-সামরিক বাহিনী, পুলিশকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মীদের মতো ফ্রন্টলাইন কর্মীদের সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে দেওয়া হচ্ছে। কারণ ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের শুশ্রুষার জন্য এই কর্মীরাই প্রধান ভরসা। তবে শুধু হাইড়্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার নয়, এই কর্মীদের সুরক্ষিত রাখতে পিপিই-র ব্যবহার-ও অবশ্যই চালিয়ে যেতে হবে। এইচসিকিউ নিয়ে আইসিএমআর-এ গবেষণা শিগগিরই ইন্ডিয়ান মেডিকাল জার্নালে প্রকাশ করা হবে।

মার্চ মাসে প্রথম এই ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী ওষুধকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিল আইসিএমআর। গত সপ্তাহে তারা এর ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে, গত সপ্তাহেই ছয়টি মহাদেশের রোগীদের নিয়ে পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণার পর 'দ্য ল্যানসেট'-এ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছিল, এই ওষুধের ব্যবহারে হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে পড়ার ঝুঁকি-সহ একাধিক ক্ষতিকারক প্রভাব পড়তে পারে। এরপর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ও এইচসিকিউ শাখার গবেষণা অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।

এতদিন, করোনা মোকাবিলায় মোটামুটিভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেছে আইসিএমআর। এবার তারা উল্টো পথে হাঁটল। হু-এর গবেষণার থেকে নিজেদের গবেষণাকেই বেশি গুরুত্ব দিল। তাহলে কি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানের পর 'আত্মনির্ভর' হল আইসিএমআর, নাকি হু-কে গুরুত্ব না দিয়ে ফ্রন্টলাইন কর্মীদের প্রাণের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলল তারা? সময়ই এর উত্তর দেবে।   

 

PREV
click me!

Recommended Stories

যাত্রীদের টাকা ফেরতের পরও কমছে না ভোগান্তি, সপ্তাহের শুরুতেই দেশজুড়ে বাতিল ইন্ডিগো-র শতাধিক উড়ান
বিরাট চমক RBI-র, জিরো ব্যালেন্সের অ্যাকাউন্টে মিলবে ডবল সুবিধা, রইল বিস্তারিত