দেশে টার্গেট কিলিং চালাচ্ছে ভারতীয় গুপ্তচররা! পাকিস্তানের বিস্ফোরক দাবিকে নস্যাৎ করল ভারত

Published : Jan 06, 2025, 01:59 PM IST
Target Killing in Kashmir

সংক্ষিপ্ত

ইসলামাবাদের অভিযোগ, পাক ভূমিতে ‘টার্গেট কিলিং’ চালাতে সহজ রাস্তা অনুসরণ করছে র। খুনের জন্য আফগানদের ভাড়া করা হচ্ছে। দুবাইয়ে বসে দেওয়া হচ্ছে হত্যার সবুজ সঙ্কেত।

নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে ইসলামাবাদের বিস্ফোরক অভিযোগে দুনিয়া জুড়ে শোরগোল। কী বলছে পাকিস্তান? তাদের দাবি, পাকিস্তানে ঢুকে নাকি খুঁজে খুঁজে জঙ্গিদের মারছে ভারতীয় গুপ্তচর! যদিও একে ইসলামাবাদের ‘স্বভাবসিদ্ধ মিথ্যাচার’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। পাকিস্তান বলেছে সেদেশ জুড়ে নাকি চলছে ‘টার্গেট কিলিং’! অজ্ঞাত হামলাকারীর গুলিতে ঝাঁঝরা হচ্ছেন ‘নিরীহ’ নাগরিকেরা। আর পর্দার আড়ালে থেকে সব কিছু পরিচালনা করছে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং’ (র)।

ইসলামাবাদের অভিযোগ, পাক ভূমিতে ‘টার্গেট কিলিং’ চালাতে সহজ রাস্তা অনুসরণ করছে র। খুনের জন্য আফগানদের ভাড়া করা হচ্ছে। দুবাইয়ে বসে দেওয়া হচ্ছে হত্যার সবুজ সঙ্কেত। আর হাওয়ালার মাধ্যমে খুনের ‘সুপারি’ পাচ্ছে আততায়ীরা।

পাক সংবাদ সংস্থা ‘দ্য ডন’ এবং ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’-এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গুপ্তচর সংস্থা র-এর ‘টার্গেট কিলিং’য়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ খবর রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে। তাঁর নির্দেশেই চলছে হত্যাকাণ্ড। এ ব্যাপারে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের ভূমিকার কথাও সেখানে ফলাও করে লেখা হয়েছে।

সম্প্রতি, দেশের ভিতরে চলা একাধিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুখ খোলেন পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মমতাজ জেহরা বালুচ। তিনি বলেন, ‘‘একাধিক অপহরণ এবং খুনের ঘটনায় নয়াদিল্লির গুপ্তচর সংস্থার জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছি। ভারত দিন দিন বিপজ্জনক রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে।’’ প্রসঙ্গত, বালুচ যে ‘নিরীহ’ নাগরিকদের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করেছেন, তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িত থাকার ভূরি ভূরি অভিযোগ রয়েছে।

মমতাজ জেহরা বালুচ এ ব্যাপারে নাম না করে আফগানিস্তানের তালিবান শাসক এবং সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান’ (টিটিপি)-র দিকে আঙুল তুলেছেন। এই দুই সংগঠনের থেকে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থার এজেন্টরা যথেষ্ট সাহায্য পাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

পাক তদন্তকারীদের অভিযোগ, দুবাইয়ের কয়েক জন ব্যবসায়ীকে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে নিয়োগ করেছে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা। তাঁদের মাধ্যমেই চলছে টাকার লেনদেন। এই কাজে কিছু স্থানীয় দুষ্কৃতীকেও ভাড়া করা হচ্ছে। তবে এই কাজে কখনওই কোনও ভারতীয়কে নিয়োগ করেনি র। খুনের পর আততায়ীদের আত্মগোপনের পরিকল্পনাও দুবাইয়ে বসে করা হচ্ছে বলে মনে করেন পাক গোয়েন্দাদের একাংশ।

এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ দাবি করেছে, ২০২১ সালের পর থেকে পাকিস্তানের মাটিতে এই ধরনের হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। খুঁজে খুঁজে জঙ্গি নেতাদের নিকেশ করছেন ভারতীয় গুপ্তচরেরা। এখনও পর্যন্ত অন্তত ছ’জনকে এই পদ্ধতিতে মেরেছে নয়াদিল্লি। এর পিছনে দ্বিমুখী উদ্দেশ্য রয়েছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

প্রথমত, নিরাপত্তার স্বার্থেই পাক জঙ্গি নেতাদের খতম করছে নয়াদিল্লি। ২৬/১১-র মতো সন্ত্রাসী হামলা যেন আর না হয়, সেটাই এর মূল উদ্দেশ্য। দ্বিতীয়ত, স্বাধীনতার পর নিজেকে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তুলে ধরতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী। আর তাই গুপ্তচর সংস্থাকে এ ব্যাপারে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন তিনি। প্রতিবেদনে এমনটাই লিখেছে ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’।

অন্য দিকে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর প্রতিবেদন খারিজ করে বলেন, ‘‘পাকিস্তানের সঙ্গে একটিই শব্দ সমার্থক। সেটা হল, সন্ত্রাসবাদ। ভুলে গেলে চলবে না আমেরিকার সাবেক বিদেশ সচিব হিলারি ক্লিন্টন ইসলামাবাদ সম্পর্কে কী বলেছিলেন। ওঁর বলা কথাটা ছিল, আপনার পোষা সাপ শুধুমাত্র প্রতিবেশীকে কামড়াবে তা ভাবা ভুল।’’

২০১৪ সালে পাকিস্তান এবং সন্ত্রাসবাদ নিয়ে তৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ডোভাল। তিনি বলেন, ‘‘ইসলামাবাদের সঙ্গে খোলা ময়দানে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া বোকামি হবে। তবে পাকিস্তানকে শায়েস্তা করার অন্য অনেক উপায় রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উপযোগী হল গুপ্ত ভাবে তাদের শাস্তি দেওয়া। কারণ আমাদের চেয়ে পাকিস্তানের দুর্বলতা বহু গুণ বেশি।’’

তবে পাক সংবাদ সংস্থাগুলির দাবি, ডোভালের ভাষণের এক বছরের মাথায় ২০১৩ সালে ইসলামাবাদের একটি বেকারির বাইরে গুলিতে খুন হন নাসিরুদ্দিন হাক্কানি। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে বোমা বিস্ফোরণকাণ্ডের মূলচক্রী ছিলেন তিনি। উল্লেখ্য, নতুন বছরে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে দু’বছরের জন্য অস্থায়ী সদস্যপদ পেয়েছে পাকিস্তান। আগামী জুলাইয়ে এই পরিষদের সভাপতিত্বও করবে ইসলামাবাদ। ফলে সেখানে যে ফের এক বার কাশ্মীর ইস্যু উঠতে চলেছে, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই।

PREV
click me!

Recommended Stories

কেন ২০ ডিসেম্বর মোদী নদিয়ার রাণাঘাটে জনসভা করবেন? জানালেন বিজেপি নেতা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়
LIVE NEWS UPDATE: কেন ২০ ডিসেম্বর মোদী নদিয়ার রাণাঘাটে জনসভা করবেন? জানালেন বিজেপি নেতা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়