পরিবারের ‘প্রধান’ পুরুষরা নন, হয়ে উঠছেন মহিলারাই: ভারতের সাম্প্রতিক সমীক্ষা ঘুচিয়ে দিচ্ছে লিঙ্গভেদ

বহু ছোট ছোট গ্রাম এবং শহরে পুরুষরা বাড়ি ছেড়ে আয়ের আশায় অন্যত্র যাচ্ছেন এবং তাঁদের অনুপস্থিতি বাড়ির মহিলাদের উন্নতির জন্য একটি সুযোগের দরজা খুলে দিচ্ছে।

রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে ‘নারী-প্রধান’ পরিবার বলে কিছু হয় না। তবে, এই দেশে নারীরা প্রায়শই এমন বাড়ির ‘প্রধান’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত হন, যেখানে কোনও প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ থাকেন না অথবা তাঁরা পরিবারের আয়ের ক্ষেত্রে কোনও অবদান রাখেন না। অর্থনীতিবিদ এবং জনসংখ্যাবিদরা ‘পরিবারের প্রধান’ শব্দটি এমন কাউকে বোঝানোর জন্য ব্যবহার করেন, যিনি অর্থ উপার্জন করেন এবং পরিবারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। বিবাহিত মহিলাদের ক্ষেত্রে, যখন স্বামীরা দেশান্তরি হন, অর্থাৎ কাজের খোঁজে বাড়ি থেকে অনেক দূরে থাকেন এবং ৬ মাস বা তার বেশি সময় ধরে নিজের বাড়িতে থাকেন না, তখন মহিলাদেরই ‘পরিবারের প্রধান’ হিসেবে গণ্য করা হয়। এগুলি প্রায়শই স্ব-ঘোষিত হয়, অর্থাৎ, মহিলারা নিজেরাই নিজেদের বাড়ির ‘প্রধান’ হিসেবে স্থান দেন। ভারতের অধিকাংশ ছোট ছোট গ্রাম এবং ছোট শহরগুলি জুড়ে এই নিয়ম পুনরাবৃত হয়ে আসছে, যেখানে পুরুষরা বাড়ি ছেড়ে আয়ের আশায় অন্যত্র যাচ্ছেন এবং তাঁদের অনুপস্থিতি বাড়ির মহিলাদের উন্নতির জন্য একটি সুযোগের দরজা খুলে দিচ্ছে।

২০১১ সালে ভারতের শেষ জনগণনায় প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন (সাড়ে চল্লিশ কোটি) মানুষদের গণনা করা হয়েছিল, যাঁরা দেশের অভ্যন্তরেই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র কাজ করতে গেছেন। বিগত এক দশকে এটি প্রায় ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের থেকেও প্রায় ১৮ শতাংশ বেশি। বাড়ির পুরুষরা যত টাকা পাঠাচ্ছেন, সেটা অনেক সময়েই বাড়ির সমস্ত খরচ মেটানোর জন্য যথেষ্ট পরিপূরক হচ্ছে না। তাই মহিলাদের নিজেদেরকেই নিজস্ব গ্রামের মধ্যে রোজগারের পথ দেখতে হচ্ছে। এর ফলে, মহিলারা শুধু কাজের ক্ষেত্রেই নিজে দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন তা নয়, দেখা গেছে যে, অন্যান্য শিক্ষিত মহিলাদের হাত ধরে অশিক্ষিত মহিলারাও শিক্ষার আলোয় এগিয়ে এসেছেন।

Latest Videos

ইন্ডিয়া হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট সার্ভে অনুসারে, ১৯৮০-র দশকে যে দম্পতিরা বিয়ে করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ মহিলা নিজেদের স্বামীদের চেয়ে বেশি শিক্ষিত ছিলেন। কিন্তু, ২০০০ এবং ২০১০ সালের দশকে স্বামীর চেয়ে অধিক শিক্ষিত মহিলার হার ২০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।

বিশেষজ্ঞের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, “আমরা যদি ‘পরিবারের প্রধান’ হিসেবে শুধুমাত্র সবচেয়ে বেশি উপার্জনকারীকে গণ্য করি, তাহলে তা মোটেই সঠিক বিবেচনা হবে না। তার চেয়ে বরং, সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম, এমন মানুষকে পরিবারের প্রধান হিসেবে গণ্য করলে তা সমাজের জন্য উপকারী হবে। তার পাশাপাশি, পরিবারের শিক্ষিত সদস্যের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে সমাজ আরও বেশি করে শিক্ষার দিকে অগ্রসর হবে।” লিঙ্গ বিভেদে নিমজ্জিত একটি দেশে মহিলাদের প্রাধান্য বেড়ে ওঠা, এক বিরল উন্নতিসাধন। পুরুষদের নিয়ন্ত্রণ শিথিল হয়ে সমাজ যে মহিলাদের ওপরেও নির্ভর করতে পারছে এবং শিখছে, এই দুটো ঘটনাই ভারতের ক্রমাগত দ্রুত উন্নতির একটি প্রধানতম কারণ।

আরও পড়ুন-

‘অনেক মৃতদেহ দু’বার গোনার কারণে সংখ্যায় বেড়ে যাচ্ছে’, করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পর রিপোর্ট দিলেন ওড়িশার মুখ্যসচিব
রাজনৈতিক মদতের অভিযোগ তুলে কুস্তিগিরদের আন্দোলনের বিপরীতে ব্রিজভূষণ সিং-এর মিছিল

‘হ্যাপি বার্থডে, জিলি’: গোলাপ দিয়ে জিল-কে প্রেম নিবেদন করলেন জো বাইডেন

Share this article
click me!

Latest Videos

তন্ত্রযোগ? নাকি বৌমা ও ছেলেকে শিক্ষা দিতেই...আটক দাদু, ঠাকুমা ও জেঠিমা | Hooghly News Today
Sukhendu Sekhar কী বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে? জল্পনা উস্কে যা বললেন Agnimitra Paul
২৬ এর নির্বাচনে কী থাকবেন ফিরহাদ হাকিম? বাতলে দিলেন শমীক ভট্টাচার্য #shorts #shortsfeed #bjp #tmc
সংসদে শীতকালীন অধিবেশন শুরু! তার আগেই বিরোধীদের কড়া বার্তা PM Modi | Parliament Winter Session 2024
'ভোট ব্যাঙ্কের জন্যই WAQF Board তৈরি করেছে Congress' বিস্ফোরক PM Modi | PM Modi Speech