বিজেপি মূলত টার্গেট করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতিশ কুমার ও লালু প্রসাদ যাদবকে। যদিও মমতা ও নীতিশ কুমার কিন্তু এনডিএ- সরকারের রেলমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ওড়িশা বালেশ্বরে ভয়ঙ্কর রেল দুর্ঘটনার পর থেকেই রেলমন্ত্রীর অশ্বিনী বৈষ্ণবের পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছে বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রধান হাতিয়ার হল পূর্ববর্তী সরকারের আমলে রেল দুর্ঘটনা,ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ও মৃত্যুর তালিকা। বিজেপি মূলত টার্গেট করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতিশ কুমার ও লালু প্রসাদ যাদবকে। যদিও মমতা ও নীতিশ কুমার কিন্তু এনডিএ- সরকারের রেলমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বিজেপি সরকার সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন সেই সময় রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে ৮৯৩টি। যারমধ্যে দুটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ৫৪টি। ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ৮৯৩টি। এই দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ১৪৫১। বিজেপি সরকারের একটি সূত্র এমনটাই দাবি করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রের খবর নীতিশ কুমার যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন সেই সময় কমপক্ষে ৭৯টি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল ১০০০টি । নীতিশের আমলে রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ১৫২৭ জনের। অন্যদিকে লালু প্রসাদ যাদবের আমলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল ৫১টি। লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল ৫৫০টি। আর মৃত্যু হয়েছিল ১১৫৯ জনের।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এমন সময় এই তথ্য প্রকাশ করেছে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, ওই রুটে সংঘর্ষ বিরোধী ব্যবস্থা চালু থাকলে বালেশ্বর দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। অন্যদিকে লালুপ্রসাদ যাদবের অভিযোগ কেন্দ্রের বিজেপি সরতার ভারতীয় রেলকে ধ্বংস করছে। তিনি দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনেরও দাবি জানিয়েছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিডেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট সরকারের অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকারের রেলমন্ত্রী ছিলেন। পরবর্তীকালে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের মনমোহন সিং সরকারের রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার অটল বিহারী বাজপেয়ীর অধীনে রেলমন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। লালু প্রসাদ যাদব ২০০৪ সালে ইউপিএ -র শাসনকালে রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
ভারতের সবথেকে মারাত্মক রেলদুর্ঘটনাগুলির মধ্যে একটি হল ওড়িশার বালেশ্বরের তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষ। এই দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৭৫ জন মারা গেছে। আহতের সংখ্যা ১১০০। দুটি দূরপাল্লার যাত্রীবাহী ট্রেন- করমণ্ডল ও যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তার আগেই করমণ্ডল এক্সপ্রেস একটি মালগাড়িকে ধাক্কা মারে। ঘটনার পর থেকেই দুর্ঘটনাস্থলে রয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি জানিয়েছেন দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের তদন্তকমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী বুধবারের মধ্যে দুর্ঘটনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ট্র্যাকগুলি মেরামতি করে পরিষেবা স্বাভাবিক করা হবে।
আরও পড়ুনঃ
ট্রেন দুর্ঘটনা 'human error', মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরনো ভিডিও ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়