
আইপিএল-এর বেটিং জালে পড়ে প্রায় ১ কোটি টাকা খোয়ালেন স্বামী। আতঙ্কে আর অবসাদে আত্মঘাতী স্ত্রী। এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে কর্ণাটকে। দর্শন বাবু, একজন ইঞ্জিনিয়ার। আইপিএল ক্রিকেট ম্যাচগুলিতে একের পর এক বাজি ধরেছেন আর হেরেছেন। তারেই প্রায় সর্বশান্ত হওয়ার জোগাড়। আতঙ্ক আর আবসাদে সম্প্রতি তাঁর ২৩ বছরের স্ত্রী রঞ্জিথা আত্মঘাতী হয়েছে।
কর্ণাটকের চিত্রদুর্গ এলাকা থেকে গত ১৬ মার্চ রঞ্জিথার ঝলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন দর্শন বাবু প্রায় ১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। দর্শন বাবু হোসাদুর্গায় মাইনর সেচ দফতরের একজন সহকারী ইঞ্জিনিয়ার। ২০২১ সাল থেকে ২০২৩ সের মধ্যে আইপিএল-এর একাধিক ম্যাচ নিয়ে বাজি ধরেছিলেন। যার কারণে দম্পতির আর্থিক অবস্থা ভেঙে পড়েছিল। ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েছিল দম্পতি। কারও কথায় বাজার থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা ঋণ করতে হয়েছিল। যারমধ্যে ১ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছিল দম্পতি। তবে ৮৪ লক্ষ টাকা ঋণ পরিষোধ করা বাকি ছিল। কিন্তু সেই ঋণ শোক করা দম্পতির কাছে যথেষ্ট কঠিন ছিল। এটা বুঝতে পেরেই হতাশ হয়ে পড়েছিল স্ত্রী। তাতেই আত্মঘাতী বলে পরিবারের সদস্যদের অনুমান।
রঞ্জিথা দর্শনকে ২০২০ সালে বিয়ে করেছিলেন। ২০২১ সালে থেকেই রঞ্জিথা দর্শনের বাজি ধরার নেশার কথা জানতে পেরেছিলেন। তারপর থেকে এই দম্পতির মধ্যে আশান্তি চলছিল। জানিয়েছেন রঞ্জিথার বাবা ভেঙ্কটেশ। তিনি আরও বলেছেন, দেনা শোধের জন্য মহাজনরা প্রায়ই হামলা করত বাড়িতে। তাতে রঞ্জিথাকে অস্বস্তিতে পড়তে হত বারবার। মহাজনদের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগও তোলেন তিনি। তিনি আরও বলেন দ্রুত টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতির প্রলোভন দেখিয়ে জামাতে বাজি ধরতে বলেছিল অনেকেই। তিনি আরও বলেন, দর্শন প্রথমে ইচ্ছুক ছিল না। কিন্তু সন্দেহভাজরা তার ওপর চাপ তৈরি করেছিল। আর তাতেই দর্শন ফাঁদে পা দিয়ে ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোট। যেখানে রঞ্জিথা তাদের হয়রানির শিকার হওয়ার ঘটনা বিস্তারিতভাবে লিখে গেছে। দর্শন ও রঞ্জিতার দুই বছরের একটি ছোট্ট ছেলে রয়েছে।