যে কোনও দিন কাঁপবে কলকাতার মাটিও - ভারতের ৫৯ শতাংশ এলাকাই ভূমিকম্পপ্রবণ, তৈরি নতুন মানচিত্র

লোকসভায় ভূমিকম্পের সক্রিয়তা অনুযায়ী ভারতের একটি নতুন মানচিত্র প্রকাশ করলেন কেন্দ্রীয় ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রী ড. জিতেন্দ্র সিং। সেই ম্যাপ অনুযায়ী ভারতের কোন কোন শহর ভূমিকম্পপ্রবণ?

গত সপ্তাহে ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্য জুড়ে অঞ্চলে বেশ কয়েকটি বেশ কয়েকটি ভূমিকম্প ঘটেছে।  বিকানেরে অনুভূত হয়েছে ৫.৩ মাত্রর কম্পন, যখন হায়দরাবাদে রিখটার স্কেল দেখিয়েছে ৪.০ মাত্রা। যে কোনও দিন কেঁপে উঠতে পরে শহর কলকাতাও। শুক্রবার লোকসভায় ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রী ড. জিতেন্দ্র সিং একটি নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছেন, যা বলছে দেশের ৫৯ শতাংশ এলাকাই ভূমিকম্পপ্রবণ। আর মাঝারি থেকে বড় মাত্রার ভূমিকম্পের সম্ভাবনা রয়েছে কলকাতা-সহ বাংলার বেশ কয়েকটি এলাকায়। 

এদিন লোকসভায় এক লিখিত উত্তরে ভূ-বিজ্ঞানমন্ত্রী বলেন, দেশের নয়া সিসমিক জোনিং ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। ভূমিকম্পের সক্রিয়তা অনুযায়ী গোটা দেশকে মোট চারটি সিসমিক জোনে ভাগ করা হয়েছে। যেসব অঞ্চলে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা সবথেকে বেশি, সেই এলাকাগুলিকে রাখা হয়েছে জোন ৫-এ। আর সবচেয়ে কম ভূমিকম্পের সম্ভাবনা যে অঞ্চলগুলিতে সেগুলিকে রাখা হয়েছে দ্বিতীয়টি জোনে। তীব্রতা ও সক্রিয়তা অনুযায়ী বাকি অঞ্চলগুলি রয়েছে তৃতীয় ও চতুর্থ জোনে। দেশের প্রায় ১১ শতাংশ এলাকা রয়েছে জোন ৫-এ।  ১৮ শতাংশ অঞ্চলে চতুর্থ জোনে, ৩০ শতাংশ তৃতীয় জোনে এবং বাকি অংশ জোন ২-এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। 

Latest Videos

পঞ্চম জোন, অর্থাৎ ভূমিকম্পের দিক থেকে সব থেকে সক্রিয় এলাকাগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের কোনও শহর নেই। এই জোনে থাকা শহরগুলি হল - ভূজ, দ্বারভাঙ্গা, গুয়াহাটি, তেজপুর, শ্রীনগর, সাদিয়া, পোর্ট ব্লেয়ার, মান্ডি, কোহিমা এবং জোড়হাট। তবে ঠিক এর পরের জোন অর্থাৎ চতুর্থ ভাগেই অবশ্য বাংলার বেশ কয়েকটি শহর রয়েছে - জলপাইগুড়ি, কলকাতা, দুই পরগনা, দার্জিলিং এবং দিনাজপুর। এছাড়া চতুর্থ জোনে রয়েছে - আলমোড়া, লুধিয়ানা, মুঙ্গের, মোরাদাবাদ, পাটনা, পিলিভিট, শিমলা, রুরকি, আম্বালা, অমৃতসর, বাহরাইচ, বারাউনি, বুলন্দশহর, চণ্ডীগড়, দেরাদুন, দেওরিয়া, দিল্লি, গাজিয়াবাদ, গ্যাংটক এবং গোরক্ষপুর।

তবে শুধু গত সপ্তাহেই নয়, গত দু-এক বছর ধরেই বারত জুড়ে ভূমিকম্পের সক্রিয়তা বেড়েছে। সরকারি হিসাবে ২০২০ সালে দেশে ৩ বা তার বেশি মাত্রার ৯৬৫ টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছিল। এর মধ্যে ১৩টিই ছিল রাজধানী দিল্লি ও তার আশেপাশের অঞ্চলে। সেইসময়ই সরকার জানিয়েছিল, দিল্লিতে ভূমিকম্পের প্রধান উৎস বা ফল্ট লাইনগুলি সনাক্ত করতে এবং চিহ্নিত করতে আইআইটি কানপুরের সহযোগিতা নিচ্ছে জাতীয় ভূকম্পন কেন্দ্র। দিল্লি এবং আশেপাশের এলাকায় চৌম্বকীয় ভূতাত্ত্বিক সমিক্ষা, স্যাটেলাইট চিত্রের বিশ্লেষণ এবং ভূতাত্ত্বিক ক্ষেত্রে করা হবে। সেইসঙ্গে আরও উন্নত নগর পরিকল্পনার জন্য, ভারতের ৫০ লক্ষ জনসংখ্যার বেশি শহরগুলিতে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা সম্পর্কে  তথ্য সংগ্রহ করা হবে। 

সিসমিসিটি বা ভূমিকম্পের ইতিহাস এবং বর্তমানে মাটির নিচে টেকটনিক প্লেটের চলন অনুযায়ী, প্রমাণিত পরীক্ষামূলক সিসমিক এটেনুয়েশন বিধানের ভিত্তিতে এই এলাকাগুলিকে ভাগ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা ১১৫ টি ভূপর্যবেক্ষণ কেন্দ্র, ভূগর্ভের নিচে টেকটনিক প্লেটগুলির গতিবিধির উপর নজর রাখে। এই কেন্দ্রগুলি থেকে তথ্য যায় জাতীয় ভূমিকম্প বিজ্ঞান কেন্দ্রে। তারা কেন্দ্রের এবং রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের কাছে সেই তথ্য পাঠিয়ে দেয়, যাতে কোথাও জোরালো ভূকম্পন আঘাত হানলে দ্রুত উদ্ধার ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু করা যায়।

Share this article
click me!

Latest Videos

'তৃণমূলের দুয়ারে সরকার এখন দুয়ারে জঙ্গি', তীব্র আক্রমণ শুভেন্দু অধিকারীর | Suvendu Adhikari
Suvendu Adhikari: 'কত বড় জিহাদি, রামনবমীর মিছিলে ঢিল মেরে দেখাও', হুঙ্কার শুভেন্দুর
খাদান নিয়ে Dev কে বিশ্রী আক্রমণ রাজের, দেবের পাশে দাঁড়িয়ে পাল্টা দিলেন Aritra Dutta Banik
'যেসব মুসলমানরা হিন্দুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন তাঁদেরই পূর্বপুরুষেরা হিন্দু ছিল' বিস্ফোরক অর্জুন
‘প্রণামের সংস্কৃতি ভুলে যাচ্ছে বাঙালি’ বিস্ফোরক মন্তব্য Dilip Ghosh-এর, দেখুন কী বলছেন | Dilip Ghosh