বিজেপি সরকারের সমীক্ষার জেরে ফুঁসছিলেন আদিবাসী মানুষরা, তারই ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে মণিপুর। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়ে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
সংরক্ষিত জঙ্গল ও জলাভূমি নিয়ে সম্প্রতি সমীক্ষা চালিয়েছিল বিজেপি সরকার। সেই সময়ে রাজ্যে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অনেকগুলি পবিত্র গির্জা। তারই প্রতিবাদে বেশ কয়েকদিন ধরেই ফুঁসছিল মণিপুর, এরপর চূড়াচাঁদপুরে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং-এর সভা হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বৃহস্পতিবার সেই আগুন ঘৃতাহুতি পড়ল।
বৃহস্পতিবার মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সভার জন্য তৈরি হওয়া মঞ্চে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় প্রতিবাদকারীরা, রাজ্যের রাজধানী ইম্ফল থেকে ৬৩ কিলোমিটার দূরে চূড়াচাঁদপুর জেলাতে এই মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছিল। ভাঙচুরের পর দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে সভাস্থল। আগুন লাগিয়ে দেন এলাকার মানুষজন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অশান্তির আঁচে পুড়ছে গোটা মণিপুর। রাজ্যে সমস্ত বড় জমায়েতের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর সভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতেই অনুষ্ঠানস্থলে ধুন্ধুমার বেঁধে যায়। ভাঙচুরের পর আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয় সভাস্থলে। ঘটনার জেরে প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের পরিস্থিতিতে। সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা।
স্থানীয় আদিবাসী সংগঠনের সদস্যদের বিরুদ্ধেই এই হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি বিজেপি সরকার এই রাজ্যের সংরক্ষিত জঙ্গল ও জলাভূমির সমীক্ষা করেছিল, তার জেরেই ক্ষোভে ফুঁসছিলেন আদিবাসী মানুষরা। ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের অভিযোগ, রাজ্য সরকার বিনা বিবেচনা ও শ্রদ্ধা করে অত্যন্ত পবিত্র গীর্জাগুলি ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। সরকারের এই পদক্ষেপের প্রতিবাদেই তারা বিক্ষোভ ও ভাঙচুর চালিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠানের আগেই মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনার পরই চূড়াচাঁদপুর জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে গতকালের হামলার ভিডিয়ো। সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, বেশ কিছু যুবক মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে রাখা চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করছে। আজ, শুক্রবারই চূড়াচাঁদপুর জেলায় একটি জিমের উদ্বোধন করার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের। উদ্বোধনের আগেই বৃহস্পতিবার রাতে দুষ্কৃতীরা সেখানে ভাঙচুর করে এবং আগুন লাগিয়ে দেয়। মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান বাতিল করে দেওয়া হয়েছে কি না, সে বিষয়ে এখনও কোনও তথ্য জানানো হয়নি। অশান্তির খবর ছড়িয়ে পড়া রুখতে জেলাজুড়ে আপাতত মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে এই জেলার আবহ একেবারে নিস্তব্ধ, থমথমে। এলাকা জুড়ে টহল দিচ্ছেন নিরাপত্তারক্ষীরা।
আরও পড়ুন-
কালিয়াগঞ্জে গুলিকাণ্ডে যুবকের মৃত্যুর প্রতিবাদে উত্তাল বাংলা, জেলায় জেলায় বিজেপি বনাম তৃণমূলের লড়াই
চাকরি নিয়ে সাবধান! ক্রমশ অন্ধকার হচ্ছে আইটি সেক্টরের ভবিষ্যৎ, ভারতে তিনটি নামজাদা সংস্থায় ৬৫% কম নিয়োগ
অ্যালোপ্যাথি আর আয়ুর্বেদ ডাক্তারদের বেতন সমান হতে পারে না: যুগান্তকারী রায় সুপ্রিম কোর্টের