৬ মাস ধরে ফ্রিজে লাশ! বিদ্যুৎ বন্ধ হতেই পচা গন্ধের টের, ভয়ঙ্কর রহস্য উন্মোচন করলে প্রতিবাসীরা
মধ্যপ্রদেশের দেবাসে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে এক মহিলার লাশ ভরে রাখা হয়েছিল ভাড়া করা ফ্রিজে। প্রতিবেশীরা কিছুই টের পায়নি। কিন্তু শুক্রবার এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়। ইতিমধ্যেই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে বলে জানা গিয়েছে। অভিযুক্তের নাম সঞ্জয় পাটিদার। মৃত মহিলার নাম পিঙ্কি ওরফে প্রতিভা প্রজাপতি। তিনি সঞ্জয়ের লিভ-ইন পার্টনার ছিলেন।
দেবাসের বৃন্দাবন ধামে দোতলা বাড়ির মালিক ব্যবসায়ী ধীরেন্দ্র শ্রীবাস্তব। তিনি গত ছয় মাস ধরে দুবাইতে আছেন। বাড়ির নিচতলায় ডান দিকে একটি ঘর, রান্নাঘর এবং শৌচাগার। বাম দিকে দুটি শোবার ঘর এবং একটি হল। দুই দিকেই একটি সিঁড়ি আছে যা উপরের তলায় যায়। উপরের তলাটি শ্রীবাস্তব নিজের কাছে রেখেছেন।
এএসপি জয়বীর ভাদোরিয়া জানিয়েছেন, জুলাই ২০২৪ সালে উজ্জয়িনের ইঙ্গোরিয়ার বাসিন্দা বলবীর রাজপুত নিচতলা ভাড়া নেন। এর দুটি ঘরে আগের ভাড়াটে পাটিদার তালা লাগিয়ে রেখেছিলেন। ফলে ভাদোরিয়া সেগুলি ব্যবহার করতে পারছিলেন না।
পাটিদার জুন ২০২৪ সালে বাড়ি ছেড়েছিলেন, কিন্তু কিছু জিনিসপত্র রেখে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে একটি ফ্রিজও ছিল। তিনি বাড়িওয়ালাকে বলেছিলেন যে তার জিনিসপত্র নিয়ে যাবেন। সে পচে যাওয়া লাশ দেখার জন্য প্রতি ১৫ দিন অন্তর আসত।
দীর্ঘদিন দুটি ঘর বন্ধ থাকায় বলবীর বাড়িওয়ালাকে বলেন যে তাকে দুটি ঘর ব্যবহার করতে দিন। বাড়িওয়ালা শ্রীবাস্তব রাজি হলে বৃহস্পতিবার বলবীর তালা ভেঙে ঘরে ঢোকেন। তিনি দেখেন যে ফ্রিজ চলছে। এটা জেনে যে তার বিদ্যুতের বিল কেন বেশি আসছে, সে আগের ভাড়াটের উপর রেগে যায়। তিনি ফ্রিজের বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেন এবং ভাবেন যে কাল ঘর পরিষ্কার করব।
বিদ্যুৎ বন্ধ হতেই ফ্রিজে রাখা পচে যাওয়া লাশের দুর্গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবেশীরা অভিযোগ করে। এরপর পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে ফ্রিজ খুলে দেখে ভেতরে এক মহিলার লাশ। লাশটি বেডশিট দিয়ে মোড়ানো ছিল। এরপর পুলিশ প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। জানা যায়, এই ঘরে আগে সঞ্জয় পাটিদার থাকতেন। প্রতিবেশীরা আরও জানান, তার সঙ্গে এক মহিলাও থাকতেন। তিনি মার্চ ২০২৪ সালের পর থেকে দেখা যায়নি। পাটিদার লোকজনকে বলেছিলেন যে মহিলা তার বাবা-মায়ের বাড়ি গেছেন।
পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে সঞ্জয় পাটিদারকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, মৃত মহিলা তার লিভ-ইন পার্টনার প্রতিভা। দুজনে পাঁচ বছর একসঙ্গে ছিলেন। তিন বছর উজ্জয়িনে ছিলেন। পাটিদার বিবাহিত। তার দুটি সন্তান আছে। প্রতিভা তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হত।
পাটিদার তার বন্ধু বিনোদ দবে-র সাহায্যে মহিলাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর লাশ ফ্রিজে ঢুকিয়ে দেয়। সে ফ্রিজ ঠান্ডা তাপমাত্রায় সেট করে দেয়। এরপর ঘর বন্ধ করে পালিয়ে যায়। বিনোদ রাজস্থানের টোঙ্ক জেলায় আলাদা একটি অপরাধের জন্য জেলে রয়েছে।