'৫০টা খুনের পর ছেড়ে দিয়েছিলাম গোনা', কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার চিকিৎসকের স্বীকারোক্তিতে হতবাক পুলিশ

  • লাগাতার ৬ মাসের চেষ্টায় গ্রেফতার হল সিরিয়াল কিলার
  • পুলিশের দাবি ওই ব্যক্তি অন্তত ১০০টি খুন করেছে
  • ২ বছরে ৫০টি খুনের কথা নিজমুখে স্বীকারও করেছে ওই ব্যক্তি
  • পাশাপাশি একাধিক অপহরণ ও কিডনি পাচারের অভিযোগ

Asianet News Bangla | Published : Jul 30, 2020 9:59 AM IST / Updated: Jul 30 2020, 03:32 PM IST

আয়ুর্বেদ চিকিৎসকের স্বীকারোক্তিতে তাজ্জব বনে গিয়েছে দিল্লি পুলিশ। আর হবে নাই বা কেন। চিকিৎসক নিজের মুখেই যে স্বীকার করছেন, পঞ্চাশটা খুনের পর তিনি আর গোনেনি। যদিও পুলিশের দাবি ৬২ বছরের দেবেন্দ্র শর্মা অন্তত ১০০ মানুষকে খুন করেছে। অবশেষে দিল্লির বাপরোলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। 

গত জানুয়ারিতে প্যারলে মুক্তি পাওয়ার পর আচমকাই বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিল আয়ুর্বেদ চিকিৎসক। যে কিনা ২০০২ থেকে ২০০৪ সাল এই দুই  বছরে দিল্লি পুলিশের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছিল। এই দুই বছরে পঞ্চাশটার উপর খুন করেছিল দেবেন্দ্র । তাও আবার একই কায়দায়। খুনি বা খুনের চক্রী যে একজনই, পুলিশের কাছে তা ছিল জলের মতো পরিষ্কার। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সিরিয়াল কিলারের  শিকার ছিল ট্রাকচালকরা । কখনও ট্যাক্সি ড্রাইভার। কখনও আবার অন্য কেউ। সেইসময় দিল্লির নির্জন রাস্তা হয়ে উঠেছিল  আতঙ্কের আরেক  নাম। তত দিনে ওই সিরিয়াল কিলারের অপরাধ দিল্লি শহরতলি ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিতেও ডানা মেলেছে। হরিয়ানা, রাজস্থান উত্তরপ্রদেশ থেকেও আসতে থাকে খুনের খবর।

আরও পড়ুন: মণিপুরে মায়ানমার সীমান্তে জঙ্গিদের আইইডি বিস্ফোরণ, শহিদ হলেন অসম রাইফেলসের ৩ জওয়ান

খুনের ধরণ দেখে ২০০৪ সালেই পুলিশ গ্রেফতার করেছিল দেবেন্দ্রকে।  তার বিএএমএসে একটা ডিগ্রিও রয়েছে। কিন্তু আয়ুর্বেদের সেই ডিগ্রির আড়ালে অপরাধে হাত পাকিয়েছিল দেবেন্দ্র শর্মা। উত্তরপ্রদেশের আলিগড় জেলার পুরেনি গ্রাম থেকে তাকে প্রথম বার গ্রেফতার করে পুলিশ। দিল্লির ক্রাইম ব্রাঞ্চের এক আধিকারিক জানান, ২০০৪ থেকে জয়পুর সেন্ট্রাল জেলে যাবজ্জীবন সাজা কাটাচ্ছিল এই কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার। ১৬ বছর জেলে থাকার পর গত জানুয়ারিতে ২০ দিনের জন্য প্যারোলে মুক্তি পায় সে। তার পরেই ফেরার হয় সে।  লাগাতার ছ-মাসের চেষ্টায় দিল্লির বাপরোলা এলাকা থেকে তাকে  গ্রেফতারে সক্ষম হয়েছে দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখা।

জানা যায়, ১৯৮৪ সালে আয়ুর্বেদ চিকিৎসক হিসাবে জয়পুরে একটি ক্লিনিক খুলেছিল সে। ১৯৯২ সালে গ্যাস ডিলারশিপ প্রকল্পে ১১ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে ডুবে যায়। চরম আর্থিক সংকটে পড়ে প্রতারণা শুরু করে। আলিগড়ের ছারা গ্রামে ভুয়ো এজেন্সি খুলে শুরু হয় তার প্রতারণা। ক্রমে ক্রমে অপরাধের জগতে তার শিকড় ছরিয়ে যায়। অপরাধে জড়িত থাকার খবর জানার পর ২০০৪ সালে দেবেন্দ্র শর্মাকে ছেড়ে চলে যায় তার স্ত্রী আর ছেলে।

আরও পড়ুন:ব্রিটেনে উড়ল মেড-ইন-ইন্ডিয়ার জয়ধ্বজা, ভারতের সাইকেলে সওয়ারি হলেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন

খুনের পাশাপাশি একাধিক অপহরণের মামলাও রয়েছে দেবেন্দ্রর নামে।  আন্তঃরাজ্য কিডনি প্রতিস্থাপন চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকায় ২০০৪ সালে তাকে জেলে যেতে হয়। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০০৪ পর্যন্ত অন্তত ১২৫ অবৈধ কিডনি প্রতিস্থাপনের সঙ্গে দেবেন্দ্রর নাম জুড়ে আছে। এই এক-একটি কেসে সে পেত ৫ থেকে ৭ লাখ রুপি। জানা যায় উত্তরপ্রদেশের আলিগঢ় জেলার পুরেনি গ্রাম থেকে তাকে প্রথমবার গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। 

দিল্লি পুলিশ জানতে পরেছে, প্যারলে মুক্তি পাবার পর সে মোহন গার্ডেনের একটি বাড়িতে ছিল। সেখান থেকে বাপরোলায় গিয়ে এক বিধবাকে বিয়ে করে, সম্পত্তির ব্যবসায় নামে। তবে এহেন সিরিয়াল কিলার দেবেন্দ্র শর্মাকে যতবারই জেরা করতে গেছে পুলিশ ততবারই তাদের চক্ষু চড়কগাছ হয়েছে। ক’টা খুন সে করেছে, এই প্রশ্নের জবাবে দেবেন্দ্র শর্মা প্রতিবারই বলেছে , “পঞ্চাশের পর আর গুনিনি!”
 

Share this article
click me!