নারকীয় চিকিৎসা মধ্য প্রদেশে! নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর গায়ে ৫১ বার ছ্যাঁকা

মধ্য প্রদেশে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু কন্যার গায়ে ৫১বার রডের ছ্যাঁকা। তদন্তের জন্য নিহত শিশুর দেহ তোলা হল করব থেকে।

 

ভয়ঙ্কর ঘটনা মধ্যপ্রদেশে। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে মাত্র আড়াই মাসের একটি শিশুর দেহ করব থেকে তুলে আনা হল। দেহটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠান হয়েছে। শনিবার রাজ্যের এক প্রশাসনিক কর্তা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে নিউমোনিয়ার কারণেই শিশুটির মৃ্ত্যু হয়েছে। তবে সন্দেহ দানা বাঁধছে শিশুটির দেহ ৫১টি পোড়া ক্ষতের চিহ্ন নিয়ে। কারণ শিশুটির ৫১বার কি তারও বেশি গরম লোহার রড দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছে। সেই কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে কিনা তাই খতিয়ে দেখা হবে।

জেলা শাসক বন্দনা বৈদ্য জানিয়েছেন, শুক্রবার শিশুটির দেব উত্তোলন করা হয়েছে। শনিবার ময়নাতদন্ত হবে। তিনি আরও বলেছেন শিশুটির নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল। তাই থেকেই মৃত্য হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু শিশুটির পরিবার সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসার আগে স্থানীয় কোয়াক ডাক্তারের কাছে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গিয়েছিল। সেখানেই চিকিৎসার জন্য শিশুটির শরীরে ৫০ বারেরো বেশি গরম লোহার রড দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েঠিল বলে অভিযোগ উঠেছে।

Latest Videos

শিশুটির পরিবার আদিবাসী অধ্যুষিত শাহোদল জেলার সিংহপুর থানার এলাকার বাসিন্দা। শিশুটির মা জানিয়েছেন, শিশুটি অসুস্থ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে স্থানীয় কোয়াক ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার হয়েছিল। কিন্তু সেখানে চিকিৎসার পরেও শিশুটির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। তারপর তারা শিশুটিকে স্থানীয় এক মহিলার কাছে নিয়েগিয়েছিলেন। সেই মহিলা গ্রামের মানুষ অসুস্থ হলে প্রাথমিকভাবে রোগ নিরাময়ের চেষ্টা করে। সেই মহিলাই চিকিৎসার জন্য শিশুটির গায়ে ৫১ বার গরম লোহার রডের ছ্যাঁকা দিয়েছিল বলে অভিযোগ।

মৃত শিশুটির মা জানিয়েছেন, তারপরেও তাঁর শিশুকন্যার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। তারপরই তারা শিশুটিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই শিশুটির মৃত্যুর হয়। চিকিৎসাকরা জানিয়েছেন, শিশুটিকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল তখন শিশুটির শ্বাস নিতে পারছিল না। তারপরও দীর্ঘ রোগভোরে কারণে শারীরিক অবস্থাও অত্যান্ত খারাপ ছিল। শিশুটিকে যদি আগেই ভর্তি করা হত হাসপাতালে তাহলে বেঁচে যেত বলেও আশা করছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু শিশুটির শরীরে কাটা আর পোড়ার চিহ্ন নিয়ে চিকিৎসকরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এই খবর পেয়ে রাজ্যের মহিলা ও শিশু উন্নয়ন আধিকারিকরা হাসপাতালে যায়। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করে। সেই কারণে শিশুটির দেহ করব থেকে তুলে ময়নাতদন্তে পাঠান হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায় মধ্য প্রদেশের আদিবাসী মানুষদের একাংশ এখনও চিকিৎসক বা হাসপাতালে যেতে নারাজ। তারা জলপোড়া নুন পোড়ার মত বিষয়গুলির ওপরই নির্ভর করে থাকে। আদিবাসী সমাজের কোনও মহিলা বা পুরুষ এজাতীয় টোটকা দেয়। তারা নিউমোনিয়ার মত রোগের চিকিৎসার জন্য ওষুধের ব্যবহার করে না। তারা লোহা রড গরম করে তা দিয়েই চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। কখনও সফল হয়। কখনও শিশুকন্যাটির মতই মৃত্যু হয় রোগীর। এই শিশুটির ক্ষেত্র স্থানীয় এক অঙ্গনওয়াড়ী কর্মী গোটা ঘটনাটি দেখেছিলেন। তিনি শিশুটির মায়ের কাছে নিয়ে নারকীয় চিকিৎসা দ্রুত বন্ধ করার আবেদনয়ও জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় তার কথা কেউ শোনেনি। তারপর সেই অঙ্গনওয়াড়ী কর্মী মহিলা ও শিশু উন্নয়ন দফতরে যোগাযোগ করে বিস্তারিত রিপোর্ট দেন। তার রিপোর্টের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু হয়েছিল।

চিকিৎসকদের একাংশের দাবি ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাক সহ বিভিন্ন জীবের দ্বারা সৃষ্ট, নিউমোনিয়া সংক্রমণ এক বা উভয় ফুসফুসে বায়ু থলিকে স্ফীত করে। ব্যথা কমানোর জন্য লোহার রড গরম করে শরীরে লাগানো হয়। যাইহোক, যদি রোগীর চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় তবে সংক্রমণটি ছাড়িয়ে যেতে পারে এবং মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ

মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলা চালাতে পারে তালিবান সংগঠনের সদস্য, NIA দফতরে হুমকি চিঠি

বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে কঠোর প্রশাসন, শুক্রবার ভোর থেকে অভিযানে পুলিশের জালে ১৮০০ জন

বিবিসির তথ্যচিত্র নিয়ে কেন্দ্রকে নোটিশ সুপ্রিম কোর্টের, নিষেধাজ্ঞা জারির আসল রেকর্ড চাইল আদালত

 

Share this article
click me!

Latest Videos

‘সবরমতি রিপোর্ট’ দেখলেন বিজেপির হেভিওয়েটরা! দেখুন কী বার্তা দিলেন সিনেমার ব্যপারে | Sabarmati Report
বাগদায় ফের চলল বুলডোজার! হাইকোর্টের নির্দেশে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল ৬টি দোকান | Bagdah News
নার্স হেনস্থার ঘটনায় বড় পদক্ষেপ! হাসপাতাল চত্বরে কড়া সিসিটিভি নজরদারি | Birbhum News Today
টাকা 'হজম' করার আগেই ধরে ফেলে খেলা ঘুরিয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী | Suvendu Adhikari | Awas Yojana
Mamata Banerjee Live: নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা, দেখুন সরাসরি