এবার ঠাকরে-মন্ত্রীসভাতেই করোনা হানা, লম্বা শিকলের ঠিক কেন্দ্রে এনসিপি নেতা

মহারাষ্ট্রের মন্ত্রীসভাতেই করোনার হানা

আক্রান্ত আবাসনমন্ত্রী জিতেন্দ্র আওহাদ

গত একসপ্তাহ ধরে তিনি স্ব-বিচ্ছিন্নতায় ছিলেন

তাঁকে কেন্দ্র করে একটি বিশাল সংক্রমণের শৃঙ্খল তৈরি হয়েছে

 

amartya lahiri | Published : Apr 23, 2020 5:46 PM IST / Updated: Apr 25 2020, 03:45 PM IST

এবার মহারাষ্ট্রের মন্ত্রীসভাতেই হানা দিল প্রাণঘাতী নতুন করোনভাইরাস বা সার্স-কোভ-২। করোনা পজিটিভ হিসাবে রিপোর্ট আসার পরই ৫৪ বছর বয়সী আবাসনমন্ত্রী জিতেন্দ্র আওহাদ-কে থানের একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তিনি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার সন্দেহের তালিকায় ছিলেন অনেকদিন ধরেই। পরিবারের ১৫ সদস্যের সঙ্গে তিনি গত এক সপ্তাহ বাড়িতে স্ব-বিচ্ছিন্নতায় ছিলেন। তার আগে তাঁর কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মী করোনভাইরাস ইতিবাচক বেরিয়েছিলেন। একজন পুলিশ কর্মকর্তা যিনি করোনা পজিটিভ হিসাবে প্রমাণিত হয়েছেন, তাঁর থেকেই এনসিপি-র এই বিধায়কের দেহে ভাইরাসটি সংক্রামিত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে ১৩ এপ্রিল একবার জীতেন্দ্র আওহাদ-এর করোনাভাইরাস পরীক্ষা হয়েছিল। সেইসময় অবশ্য ফলাফল নেতিবাচক এসেছিল।  

যে মুম্ব্রা-কালওয়া আসনের বিধায়ক জাতেন্দ্র আওহাদ, সেই এলাকাটি মুম্বই-এর করোনাভাইরাস সংক্রমণের একটি লম্বা শৃঙ্খল বলে মনে করা হয়। আর সেই শৃঙ্খলের ঠিক মাঝখানে আছেন তিনি, বলে মনে করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, লকডাউন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য এপ্রিলের শুরুতেই মুমব্রা থানার একজন সিনিয়র পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলেন জিতেন্দ্র আওহাদ। গত সপ্তাহে নিজ শহর ছুটিতে থাকাকালীন সেই অফিসার  করোনভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছিল।

দিল্লির তাবলিগি জামাতের সমাবেশের খবর প্রকাশের পর, মুম্বরায় তাবলিগি সদস্যদের খুঁজে বের দায়িত্বে ছিলেন ওই অফিসার। মোট ১৩ জন বাংলাদেশি ও ৮ জন মালয়েশিয় নাগরিকসহ ২১ জন বিদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করেছিলেন তিনি। কিন্তু এই সকল তাবলিগি জামাত সদস্যদেরই প্রাথমিক পরীক্ষার ফল নেতিবাচকভাবে এসেছে। তাই, ওই পুলিশকর্তা যে ঠিক কোথা থেকে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তা এখনও অস্পষ্ট। সন্দেহ করা হচ্ছে মুম্ব্রায় অভইযান চালানোর সময়, বাসিন্দাদের কারোর থেকেই সম্ভবত তাঁর দেহে ভাইরাস সংক্রামিত হয়েছিল।

বিপর্যয়েও মুসলিম-বিদ্বেষ, দরজা থেকে করোনাযোদ্ধা'কে তাড়িয়ে বিপাকে জাত-জালিয়াত

 

১৫ বছরের প্রেম, নার্সের উদ্যোগে করোনায় মৃত্যুর ঘন্টাখানেক আগে করলেন বিয়ে

করোনা-রহস্য উদঘাটনে আসরে 'ফেলুদা', কাগজ কুচিই জানান দেবে পজিটিভ না নেগেটিভ

ওই অফিসার ইতিবাচক প্রমাণিত হওয়ার পর থানে পৌর কর্পোরেশন, তাঁর সরাসরি সংস্পর্শে আসা প্রায় শতাধিক লোকের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করেছে। তাঁদের মধ্যে জীতেন্দ্র আওহাদ-ও ছিলেন। সেই সময় তাঁর ফল নেচিবাচক এলেও, এদিন তাঁর দেহে সংক্রমণের স্পষ্ট প্রমাণ এসেছে। এছাড়া মুমব্রা থানার সকল পুলিশ সদস্য, স্থানীয় কিছু সাংবাদিক এবং আরও কয়েকজন সেই তালিকায় ছিল। তাদের মধ্যে দুজন সাংবাদিক, মুমব্রা থানার তিন পুলিশকর্মী এবং জীতেন্দ্র আওহাদের পাঁচ পুলিশ দেহরক্ষী, গৃহ সহায়ক, রাঁধুনি এবং দলীয় কর্মী মিলিয়ে ১৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের সকলকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

এই ঘটনার জেরে মুম্ব্রা থানার ৯০ শতাংশেরও বেশি পুলিশকর্মীকে হোম কোয়ারান্টাইনে পাঠানো হয়েছে। সেই অভাব পূরণে অন্য থানা ও সদর দফতর থেকে কর্মী আনা হয়েছে। অন্যদিকে তাঁর চারপাশে একের পর এক লোক ইতিবাচক পরীক্ষিত হওয়ার পর, জিতেন্দ্র আওহাদ স্ব-বিচ্ছিন্নতায় গিয়েছিলেন। এক সপ্তাহ সেভাবে থাকার পর, মঙ্গলবারই তিনি সতর্কতা হিসলাবে ফের এক হাসপাতালে গিয়ে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করান। বৃহস্পতিবার সেই পরীক্ষার ফল ইতিবাচক এল। এখন আশঙ্কা করা হচ্ছে, না জেনেই তিনি প্রাক্তন সাংসদ তথা এনসিপি নেতা আনন্দ পরাঞ্জপে-র দেহেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে দিয়ে থাকতে পারেন।

 

Share this article
click me!