গোটা বিশ্ব-কে এক করে দিয়েছে করোনাভাইরাসকিন্তু ভারত কি এখনও বিভক্তজীবন বিপন্ন করে পণ্য দিতে এলেন ডেলিভারি বয়মুসলিম শুনেই তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হল 

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্বজুড়ে নেমে এসেছে মহা বিপর্যয়। কীকরে এই ভাইরাসকে রোখা যাবে, সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে মানব সভ্যতার। বিশ্বজুড়ে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার শপথ নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও ভারতবাসীকে ঐক্যবদ্ হওয়ার ডাক দিয়েছেন। বলেছেন, ভাইরাস দেখে না জাতি-ধর্ম। কিন্তু, তারপরেও বিভক্ত ভারতের ছবিটা বারবার উঠে আসছে।

লকডাউনে, নিজের প্রাণ বিপন্ন করে মুম্বইয়ের এক গৃহস্থ বাড়িতে মুদিখানার রসদ পৌঁছতে এসেছিলেন এক ডেলিভারি বয়। অভিযোগ সেই দম্পতি ওই ডেলিভারি বয় তথা 'করোনাযোদ্ধা'-র ধর্ম পরিচয় জেনেই, সেই জিনিসপত্র ফিরিয়ে দেন। অবশ্য ৩২ বছরের সেই ডেলিভারি বয়-এর অভিযোগের ভিত্তিকে পরে অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত গত মঙ্গলবার। ওইদিন এক অনলাইন সংস্থার পক্ষ থেকে মুম্বইয়ের মিরা রোড এলাকার এক বাড়িতে মুদিখানার জিনিস সরবরাহ করতে এসেছিলেন ওই ডেলিভারি বয়। তাঁর অভিযোগ, প্রথমে গেটের বাইরে এসে স্বাভাবিকভাবেই তাঁর কাছ থেকে মুদিখানার জিনিসপত্রগুলি নিয়ে নিজেদের ব্যাগে পুরছিলেন ওই দম্পতি। পুরোদস্তুর মাস্ক ও গ্লাভস পরেই এসেছিলেন বলে দাবি ওই ডেলিভারি বয়ের। কিন্তু, জিনিসপত্র দেখে নেওয়ার সময়, বাড়ির কর্তা ডেলিভারি বয়-এর নাম জিজ্ঞেস করেন। তিনি মুসলিম জেনেই স্ত্রীকে সব জিনিস ফিরিয়ে দিতে বলেন ওই ৫১ বছরের ব্যক্তি।

Scroll to load tweet…

সেইসঙ্গে বলেন, একজন মুসলমানের বয়ে আনা জিনিস তাঁরা নেবেন না। সবকিছু ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয় ওই ডেলিভারি বয়-কে। ঘটনার আকস্মিকতায় প্রথমে তিনি খানিক হতবম্ভ হয়ে গেলেও, পড়ে ওই তথাকথিত ভদ্রলোক ও ভদ্রমহিলার এহেন আচরণের ভিডিও রেকর্ড করেন। সেখানে দেখা যায়, স্বামীর আচরণে কিছুটা থতমত ওই মহিলাও। তিনি একটি খালি ব্যাগ হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। আর তাঁর স্বামী তাঁকে ঘরে ঢুকে পড়ার জন্য জোর করছেন। পিছন থেকে ডেলিভারি বয় জিজ্ঞেস করেন, 'মুসলমানের থেকে তিনি জিনিস নেবেন না?' ওই ব্যক্তি উত্তর দেন, 'না'।

লকডাউনে জমিয়ে চলছিল লুডো খেলা, মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে এখন হাহুতাশ করছেন ৩১ জন

ইতিহাসের আশ্চর্য পুনরাবৃত্তি, ১০০ বছরের তফাতে দুই মহামারি কাড়ল দুই যমজ ভাই-এর প্রাণ

১৫ বছরের প্রেম, নার্সের উদ্যোগে করোনায় মৃত্যুর ঘন্টাখানেক আগে করলেন বিয়ে

ওই ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন ডেলিভারি বয় হিসাবে কাজ করা ওই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যুবক। পরে তিনি পরিবাররের কাছে সবকথা খুলে বললে, তারা তাঁকে পুলিশে সবটা জানানোর নির্দেশ দেয়। বুধবার পুলিশ গিয়ে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার তাঁকে থানে আদালতে পেশ করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধি অনুযায়ী, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্যে ঘৃণ্যকাজ করার অভিযোগগ আনা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে তাঁকে আপাতত বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।