মমতা পরিষ্কার জানতে চেয়েছিলেন ইউপিএ কি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যের এবার সমালোচনা করল কংগ্রেস।
মুম্বই সফরে এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (West Bengal Chief Minister) ও তৃণমূল নেত্রী (Trinamool Congress chief) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), সেখানে ইউপিএ (UPA) বা ইউনাইটেড প্রগেসিভ অ্যালায়েন্সের (United Progressive Alliance) অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। মমতা পরিষ্কার জানতে চেয়েছিলেন ইউপিএ কি। তার কাজ কি। শরদ পাওয়ার তার চেয়ারপার্সন হয়ে কি করবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যের এবার সমালোচনা করল কংগ্রেস। কংগ্রেসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে তৃণমূল নেত্রীর এই বক্তব্য আদপে বিজেপিরই সুবিধা করে দিয়েছে।
এই বৈঠকে তৃণমূল সুপ্রিমো কংগ্রেস নেতৃত্বকে খোঁচা দিয়ে বলেন ইউপিএ-র কোনও অস্তিত্ব নেই। জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আঞ্চলিক দলগুলিকে আহ্বান জানান মমতা। তবে মমতার এই উদ্যোগকে মোটেও ভাল চোখে দেখেননি কংগ্রেস নেতারা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে খোঁচা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, "রাজনীতিতে ক্রমাগত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। আপনি বেশিরভাগ সময় বিদেশে থাকতে পারেন না।"
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাল্টা জবাব দেন কংগ্রেস নেতারা। লোকসভার বিরোধী দলের নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী মমতাকে সম্বোধন করে বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি জানেন না ইউপিএ কী? মনে হয় তিনি পাগলামি শুরু করেছেন। তিনি মনে করেন গোটা ভারত 'মমতা, মমতা' স্লোগান দিতে শুরু করেছে। কিন্তু ভারত মানে বাংলা নয় এবং বাংলা মানেই ভারত নয়। "
অধীর রঞ্জন বলেন ইউপিএ সরকারে ২০২১ সালে ছয়জন তৃণমূলের মন্ত্রী ছিল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইউপিএ থেকে তার সমর্থন প্রত্যাহার করার জন্য কিছু অজুহাত তৈরি করেছিলেন। "তিনি সেই সময়ে ইউপিএ সরকার ভাঙতে চেয়েছিলেন বলে এদিন দাবি করেন অধীর। এই কংগ্রেস নেতা বলেন ইউপিএ ভাঙার উদ্দেশ্যে সফল হননি মমতা। কারণ অন্যান্য দল ছিল যারা অবিলম্বে সরকারকে সমর্থন করেছিল। আজ মমতার শক্তি বেড়েছে কারণ মোদীজি তার পিছনে দাঁড়িয়েছেন। তাই, তিনি কংগ্রেসকে দুর্বল করার চেষ্টা করছেন,"
কংগ্রেস নেতা কপিল সিবাল বলেছেন, "কংগ্রেস ছাড়া ইউপিএ হবে আত্মাবিহীন একটি শরীর। বিরোধী ঐক্য দেখানোর সময় এসেছে।"
অন্যান্য কংগ্রেস নেতারাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নিজেদের বক্তব্য রাখেন। রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মুখ খোলার জন্য মমতার সমালোচনা করেন কংগ্রেস নেতারা। মহারাষ্ট্রের রাজস্ব মন্ত্রী বালাসাহেব থোরাত বলেছেন যে বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের অত্যাচারের বিরুদ্ধে কংগ্রেস যে লড়াই চালিয়েছে তা দেশ ভালভাবে জানে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে এখনও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধতে রাজি নন মুম্বই সফরে গিয়ে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এর আগে দিল্লি সফরে গিয়েই মমতা সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেননি। তিনি বলেছেনিলেন, কেন তিনি বারবার সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করবেন। পাশাপাশি রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের ডাকা বৈঠকেই যোগ দেয়নি তৃণমূল সাংসদরা। যা নিয়ে কংগ্রেস তৃণমূল জোটের ভূবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। এদিনও কংগ্রেসকে বাদ রেখেই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পথ তৈরি করেছেন।