মায়ের মৃতদেহ চাদরে মুড়ে হুইলচেয়ারের সঙ্গে বাঁধা, সাহায্যহীন অবস্থায় ৬০ বছর বয়সী সন্তানের অসহায় পরিণতি

Published : Sep 10, 2022, 01:06 PM IST
মায়ের মৃতদেহ চাদরে মুড়ে হুইলচেয়ারের সঙ্গে বাঁধা, সাহায্যহীন অবস্থায় ৬০ বছর বয়সী সন্তানের অসহায় পরিণতি

সংক্ষিপ্ত

মৃত মাকে কাপড়ে মুড়ে হুইলচেয়ারে বসিয়ে পা চেয়ারটির সাথে মায়ের পা বেঁধে নেন বৃদ্ধ। এই ভাবে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের শ্মশানে নিয়ে যান তিনি। 

মধ্যপ্রদেশের মতো মর্মান্তিক ছবি ধরা পড়ল তামিলনাড়ুতেও। অসহায় অবস্থা মানুষকে কতটা বিস্ময়কর করে তোলে, তামিলনাড়ুর ষাটোর্ধ বৃদ্ধ মুরুগানন্দমের পরিণতি তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। পরিচিত মানুষজন বা আত্মীয়-স্বজন কেউই তাঁর এবং তাঁর পরিবারের খবর রাখেন না। নব্বই বছর বয়সী বাবা পেরিয়াসামি চলাফেরার ক্ষমতা হারিয়েছেন বহুদিন আগেই। নিজের আরও দুই ভাই আছেন। কিন্তু সেই ভাইদের কেউই নিজেদের বাবা-মায়ের খোঁজখবর রাখেন না। ফলে, মৃতা মায়ের সৎকার্য করার জন্য যে করুণ পরিণতির মুখোমুখি হতে হল ৬০ বছরের এই অসহায় বৃদ্ধকে, তা মানবিকতার নিরিখে এক অশ্রুসজল ঘটনা। 

তামিলনাড়ুর ত্রিচি জেলায় বাস করেন পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি মুরুগানন্দম। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সোরিয়াসিসে ভুগছিলেন তাঁর মা রাজেশ্বরী, বয়স হয়েছিল প্রায় ৮৪ বছর। দিনের পর দিন কঠিন চিকিৎসার পরেও তাঁর শারীরিক অবস্থার ক্রমাগত অবনতি হতে থাকায় চিকিৎসকরা মুরুগানন্দমকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, মাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে। সেই পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই বৃহস্পতিবার ভোর ৪টে নাগাদ প্রাণ হারান অসুস্থ বৃদ্ধা। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনওদিন কোনওরকম সাহায্য না পেয়ে মায়ের শেষদিনেও অসহায় বোধ করেন বৃদ্ধ সন্তান। কর্পোরেশনের কর্মী বা কোনও স্বেচ্ছাসেবক সংস্থার কাছ থেকেও সাহায্য পাওয়ার আশা ছেড়ে দেন তিনি। নিরাশ হয়ে শেষমেশ নিজের প্রয়াত মাকে হুইলচেয়ারে বসিয়ে বেঁধে নিয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের শ্মশান অবদি নিয়ে গেলেন ৬০ বছরের বড়ছেলে। 



 

তামিলনাড়ুর ত্রিচি জেলার মানাপ্পারাই এলাকায় ৬০ বছরের ওই বৃদ্ধ সংবাদমাধ্যমকে জানান, গত বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর মা মারা যান। সোরিয়াসিসে আক্রান্ত ছিলেন বৃদ্ধা রাজেশ্বরী। মায়ের শেষকৃত্য করার জন্য কোনও বন্ধু-বান্ধব বা প্রতিবেশীকে পাশে পাননি মুরুগানন্দম। এমনকি নিজের ভাইরাও এগিয়ে আসেননি একবারও। তা ছাড়া, শববাহী গাড়ি ভাড়া করার মতো আর্থিক সামর্থ্য তাঁর নেই। তাই মৃত মাকে কাপড়ে মুড়ে হুইলচেয়ারে বসিয়ে পা চেয়ারটির সাথে মায়ের পা বেঁধে নেন বৃদ্ধ। এই ভাবে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের শ্মশানে নিয়ে যান তিনি।



 

মুরুগানন্দম অবশ্য পুরসভায় একবার ফোন করে জিজ্ঞাসা করেছিলেন কোনও সাহায্য পাওয়া যাবে কি না। পুরসভা থেকে এক কর্মী জানিয়েছিলেন, শেষকৃত্যের জন্য আর্থিক সাহায্য করা হবে। পাশাপাশি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থারও খোঁজ দেন ওই কর্মী। তবে সে সবই ঘটেছিল শ্মশানে পৌঁছনোর পর।

বৃদ্ধ জানান, তাঁর মা রাজেশ্বরীর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। কয়েক বছর সোরিয়াসিসে ভুগছিলেন। বুধবার মায়ের শারীরিক পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। চিকিৎসক জানিয়ে দেন, আর করার কিছু নেই। বৃহস্পতিবার ভোর চারটে নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। মায়ের দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য হুইলচেয়ারকে ভরসা করেন তিনি। শ্মশানে অবশ্য পুরকর্মীরা তাঁকে সাহায্য করেন। তাঁর করুণ অবস্থা দেখে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও। 

আরও পড়ুন-
পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরে ফের নিম্নচাপের ভ্রুকূটি, দুর্গাপুজোর আগে আবার বৃষ্টিপাতের প্রকোপ?
দুর্গাপুজোতে নিষিদ্ধ থার্মোকল ও প্লাস্টিকের ব্যবহার, শব্দ দূষণও কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করছে রাজ্য দূষণ পর্ষদ
দুর্দান্ত রণনীতি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে চলেছে বিজেপি, ১৩ সেপ্টেম্বর কোন পথে হবে নবান্ন অভিযান?

PREV
click me!

Recommended Stories

অস্তিত্ব সঙ্কটে ভারতের প্রাচীনতম পর্বতমালা, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে আরাবল্লী মামলা
Today live News: ঘন্টায় দৌড়বে ৭০০ কিলোমিটার! সবচেয়ে দ্রুতগতির ট্রেন ম্যাগলেভ আবিস্কার করে তাক লাগাল চীন