প্রাক্তন বিদ্রোহী নেতার মৃত্যুর প্রতিবাদে উত্তপ্ত মেঘালয়। স্বাধীনতা দিবসের দিন তীব্র হিংসার পর শিলং-এ জারি করা হল কারফিউ।
গোটা শিলং শহর জুড়ে এখন একটা গা ছমছমে স্তব্ধতা বিরাজ করছে। রবিবার, ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসের দিনই রীতিমতো আগুন জ্বলে উঠল মেঘালয়ে। পুলিশের গাড়ি ছুনতাই করে ধরিয়ে দেওয়া হল আগুন। জায়গায় জায়গায় দেখানো হল কালো পতাকা, পুলিশকে লক্ষ্য করে পড়ল ইট-পাথর। এরপরই শিলং শহরে জারি করা হয়েছে কারফিউ। ১৭ অগাস্ট পর্যন্ত তা জারি থাকবে। সঙ্গে গোটা রাজ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। আর এই হিংসার পরই ইস্তফা দিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লাখমেন রিম্বুই।
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার রাতে। পুলিশের বিরুদ্ধে প্রাক্তন বিদ্রোহী নেতা চেরিশস্টারফিল্ড থাংখিউ-এর বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালানোর তাকে গুলি করে হত্য়া করার অভিযোগ ওঠে। ২০১৮ সালের অক্টোবরে আত্মসমর্পণ করেছিলেন ওই প্রাক্তন বিদ্রোহী নেতা। পুলিশ দাবি করেছে তিনি পুলিশে কর্মিদের উপর ছুরি নিয়ে চড়াও হয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। আত্মরক্ষার্থেই থাংখিউকে গুলি করা হয়েছে। যদিও তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, পুলিশ তাঁকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছে। এরপরই শিলংয়ের কিছু অংশে অস্থিরতা শুরু হয়েছিল। শনিবার, পুলিশের টহলদারি দলের একটি গাড়িতে পাথরও ছোড়া হয়। চাপের মুখে মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা প্রাক্তন বিদ্রোহী নেতার মৃত্যুর ম্যাজিস্ট্রেটাল তদন্তের আশ্বাস দেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি।
রবিবার, স্বাধীনতা দিবসের দিন পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। এদিন ছিল চেরিশস্টারফিল্ড থাংখিউ-এর শেষকৃত্য। শত শত মানুষ কালো পোষাক পরে এবং কালো পতাকা হাতে তাঁর শেষযাত্রায় অংশ নেন। শিলংয়ের রাস্তায় রাস্তায় কালো পতাকা হাতে প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। থাংখিউয়ের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে পুলিশ এবং রাজ্য সরকারের নিন্দা জানিয়ে স্লোগানে উঠেছে সেইসব মিছিল থেকে। অনেকে বাড়ি থেকে না বের হলেও বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় দাঁড়িয়েই প্ল্যাকার্ড তুলে ধরে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন - 75th Independence Day - জঙ্গির বাবা তুললেন জাতীয় পতাকা, বড় পরিবর্তন জম্মু-কাশ্মীরে
আরও পড়ুন - সত্যিই কি ভারতের আগে স্বাধীন হয়েছিল পাকিস্তান, কেন তারা একদিন আগে এই দিনটি উদযাপন করে
অনেক জায়গায় প্রতিবাদ হয়ে ওঠে হিংসাত্মক। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন প্রতিবাদীরা। পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বিভিন্ন জায়গাতেই ইট-পাথর ছোড়া হয়েছে। সবথেকে বড় ঘটনাটি ঘটে শিলংয়ের জাইয়াও এলাকায়। অজ্ঞাত পরিচয় কিছু ব্যক্তি অস্ত্রসহ মাওকিনরো পুলিশ ফাঁড়ির একটি গাড়ি ছিনিয়ে নেয়। তারপর বেশ কিছু সময় সেই গাড়িটি চালিয়ে তারপর সেই গাড়িটিকে আগুন ধরিয়ে জ্বালিয়ে দেয় তারা। তবে, রা অগ্নিসংযোগ করেছে। ফাঁড়ির ইনচার্জ অফিসারসহ গাড়িতে থাকা পুলিশকর্মীরা অবশ্য প্রাণ নিয়ে পালাতে পেরেছেন।