এই স্কুলে শিশুদের পড়াশোনার জন্য বেতন লাগে না, সপ্তাহে দিতে হয় ২৫টি প্লাস্টিক

প্রতি সপ্তাহে প্রত্যেক শিশুকে ২৫টি প্লাস্টিক দিতে হয় স্কুলকে। এই হল তার সারা সপ্তাহের বেতন। পড়ুয়ারা এখানে জীবনের পাঠ নেয়। 

এখানে কোনও টাকা পয়সার গল্প নেই। নিশ্চিন্তে পড়াশোনা চলে এখানে। এ এক অদ্ভুত স্কুল। যেখানে শিশুরা পড়াশোনা করে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। অবশ্য বিনামূল্যে বললে হয়ত ভুল হবে। একটা জিনিস দিতে হয় প্রত্যেক শিশুকে। তা হল প্রতি সপ্তাহে প্রত্যেক শিশুকে ২৫টি প্লাস্টিক দিতে হয় স্কুলকে। এই হল তার সারা সপ্তাহের বেতন। পড়ুয়ারা এখানে জীবনের পাঠ নেয়। 

স্কুলের বেতন দেওয়ার জন্য টাকাপয়সা লাগে না । বেতন (School Fees) হিসেবে পড়ুয়াদের জমা দিতে হয় প্লাস্টিক(Plastic Waste)। এমন দৃশ্য দেখেছেন ভূভারতে কোথাও? কিন্তু ভারতেরই এই স্কুল শেখাচ্ছে এলাকা দূষণ মূক্ত করার কথা। অসমের গুয়াহাটি থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে পামোহিতে গাছপালা ঘেরা এই স্কুলের নাম অক্ষর (Unique School in Assam)।  ২০১৬ সালে পারমিতা শর্মা এবং মজিন মুখতার এর হাত ধরে এই স্কুলের পথ চলা শুরু৷  

Latest Videos

পামোহির অধিকাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে, এখানকার মানুষজনের পেশা হয় পাথর কাটা, না হলে রাজমিস্ত্রী। অভাবের সংসারে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানোটা তাঁদের কাছে বিলাসিতা। তাই ছোট থেকেই অশিক্ষা আর অপুষ্টি তাদের নিত্যসঙ্গী। এমন একটা জায়গায় এই অত্যাধুনিক স্কুল তৈরির পরিকল্পনা অবিশ্বাস্য মনে হলেও,এটা সত্যি৷

এই এলাকায় প্রতিদিন প্লাস্টিকের জিনিসপত্র ডাঁই করে আগুন দিয়ে দেন বাসিন্দারা। এই প্লাস্টিক যে কতটা ক্ষতিকরা, তা বোঝাতেই অনেকদিন সময় লাগে তাঁদের। এরপর শুরু হয় বাড়ি বাড়ি ঘুরে শিশুদের স্কুলে নিয়ে আসার কাজ। দিনমজুর থেকে চা শ্রমিক— অভাবী পরিবার থেকে এই স্কুলে পড়তে আসে শিশুরা। ২০১৬ সালে স্কুলে পড়ুয়াদের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৫ জন। তবে ধীরে ধীরে সেই সংখ্যা বাড়তে থাকে। নাম হতে থাকে অক্ষরের। 

সপ্তাহে যত প্লাস্টিক জমা হয় স্কুলে, সেগুলো দিয়ে ইকো-ব্রিক (Eco-Brick) তৈরি করা হয় অক্ষরে। স্কুলের ভিতরেই প্লাস্টিক থেকে বায়োডিগ্রেডেবল সামগ্রী তৈরির অনুমোদন দিয়েছে নর্থ-ইস্ট এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন। ছাত্রছাত্রীরা বানায় এই ইকো-ব্রিক। উল্লেখ্য,  ইকো-ব্রিকের ধারণা প্রথম আনেন জার্মান আর্কিটেক্ট আন্দ্রেজ ফ্রোসে ২০০০ সালে। ২০০৩ সালে নিকারাগুয়ায় অ্যালভারো মোলিনা প্লাস্টিক দিয়ে ইকো-ব্রিক তৈরি শুরু করেন।

এই স্কুলে ছাত্র ছাত্রীরা বোতলের ভিতরে এমন ভাবে প্লাস্টিক বর্জ্য ঠেসে ঢোকায়, যাতে স্তরের পর স্তর তৈরি হয়। এই বোতল বছরের পর বছর সংরক্ষণ করা যায়। কোনও নির্মাণ কাজে ইটের বদলে পরিবেশবান্ধব এই ইকো-ব্রিক ব্যবহার করা হয়। এতে ইট-ভাটার দূষণও রোধ করা যায়।

অক্ষরে যারা পড়েন সেইসব ছাত্রছাত্রীরা  হাতেকলমে ইকো-ব্রিকিং শেখে৷ইকো-ব্রিক তৈরি করে স্কুলের বেশিরভাগ খরচ তোলে পড়ুয়ারাই। তা ছাড়াও নানা হস্তশিল্পের জিনিসপত্রও তৈরি করে তারা নিজেরাই। বিদ্যুৎ খরচ বাঁচাতে স্কুলে রয়েছে সোলার প্যানেল ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওপেন স্কুলিং (NIOS)’-এর তত্ত্বাবধানে বোর্ড পরীক্ষা দেয় এখানকার দশম ও দ্বাদশের ছাত্রছাত্রীরা।

Share this article
click me!

Latest Videos

'ভোট ব্যাঙ্কের জন্য Mamata রোহিঙ্গাদের হিন্দুদের জমি দিচ্ছে' বিস্ফোরক অভিযোগ Agnimitra-র
TMC ছেড়ে কেন BJP-তে শুভেন্দু! আজ নিজেই বলে দিলেন সব | Suvendu Adhikari | Bangla News
Bangladesh-এ হিন্দুনেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার, মুক্তির দাবিতে Md Yunus-কে হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর
'আমি বলছি, আমার নাম করে লিখে রাখুন' ঝাঁঝিয়ে উঠে যা বললেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari
তন্ত্রযোগ? নাকি বৌমা ও ছেলেকে শিক্ষা দিতেই...আটক দাদু, ঠাকুমা ও জেঠিমা | Hooghly News Today