কংগ্রেস (Congress) ছেড়ে মুকুল সাংমা-সহ (Mukul Sangma) তৃণমূল কংগ্রেসে (TMC) যোগ দিলেন মেঘালয়ের (Meghalaya) মোট ১২ জন বিধায়ক। ফলে, রাতারাতি সেই রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হয়ে উঠল মমতা বন্দোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দল।
ক্রমে কংগ্রেসকে গ্রাস করছে তৃণমূল কংগ্রেস। একদিন আগেই নয়াদিল্লিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে, কংগ্রেস থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন কীর্তি আজাদ। এবার মেঘালয়ে কংগ্রেস আরও বড় ধাক্কা দিল ঘাসফুল শিবির। বুধবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা-সহ কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন রাজ্যের মোট ১২ জন কংগ্রেস বিধায়ক। ফলে, ত্রিপুরায় ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে নামার আগেই, রাতারাতি মেঘালয়ে প্রধান বিরোধী দল হয়ে উঠল তৃণমূল কংগ্রেস।
৬০ আসনের মেঘালয় বিধানসভায় মোট ৪০টি আসন রয়েছে শাসক জোট এনডিএ-র হাতে। এতদিন কংগ্রেসের পক্ষে ছিল মোট ১৮টি আসন। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ছিলেন মুকুল সাংমা। কিন্তু, এদিন ১৮ জন বিধায়কের মধ্যে ১২ জনই তৃনমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায়, মেঘালয় বিধানসভায় জাতীয় কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা দাঁড়ালো মাত্র ৬ জন। প্রধান বিরোধী দলের তকমাও হারালো তারা। তার জায়গায় উত্তর পূর্ব ভারতের এই রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস।
কেন এই দল বদল? এখনও মুকুল সাংমা বা অন্যান্য দলবদলুদের কাছ থেকে কিছু না জানা গেলেও, সূত্রের খবর বেশ কয়েকদিন ধরেই কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন মুকুল সাংমা। পার্টিতে কোণঠাসা বোধ করছেন বলে ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছিলেন তিনি। তারপরই এই দলবদলের ঘটনা ঘটল। তবে, মুকুল সাংমা অ্যান্ড কোং-এর সঙ্গে যোগাযোগের নেপথ্যে তৃণমূলের কোন নেতারা ছিলেন, তা এখনও জানা যায়নি। অনেকেই মনে করছেন এটা জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরই ম্যাজিক।
গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফালেইরোকে দলে টানার পরই, মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও আলোচনা শুরু করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। চলতি মাসের শুরুতেই তৃণমূলের পক্ষে মুকুল সাংমা সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাকের লোকজন, এমনটাই শোনা গিয়েছিল। এরপর সুস্মিতা দেবের (Sushmita Deb) মেঘালয় সফরে সেই সাংমার দল বদলের জল্পনা তীব্র আকার নিয়েছিল। এমনকী তিনি কলকাতায় এসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) সঙ্গেও বৈঠক করেছেন বলে শোনা গিয়েছিল।
তবে, প্রথমদিকে তৃমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার বিষয়ে মানসিক দ্বন্দ্বে ছিলেন মুকুল সাংমা। এমনকী, দিল্লিতে গিয়ে রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) সঙ্গে সাক্ষাতের পর মত বদলে দলেই থাকবেন বলে ঠিক করেছিলেন, এমনটাই জানিয়েছিল তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্র। ২০১৮ পর্যন্ত মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ক্ষমতা বদলের পর থেকে ছিলেন বিরোধী দলনেতার পদে। সম্প্রতি তাঁকে উপেক্ষা করে সাংসদ ভিনসেন্ট এইচ পালা'কে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি করা হয়। তাতেই শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব তৈরী হয়েছিল মুকুলের। আর তারই সুযোগ নিল তৃণমূল কংগ্রেস।