
নয়াদিল্লি। সংসদের শীতকালীন অধিবেশন ২০২৫-এর মঙ্গলবারটি অত্যন্ত বিশেষ হতে চলেছে। একদিকে সকালে এনডিএ-র একটি বড় সংসদীয় বৈঠক হয়েছে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বিশেষ সম্মান জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, সংসদে পরিবেশ আগের চেয়ে আরও উত্তপ্ত হতে চলেছে, কারণ আজ নির্বাচনী সংস্কার (Election Reforms) এবং এসআইআর (Special Intensive Revision) নিয়ে দীর্ঘ ও গভীর বিতর্ক হতে চলেছে। এনডিএ সাংসদরা কেন প্রধানমন্ত্রী মোদীকে মালা পরিয়ে সম্মান জানালেন? আর আজ লোকসভায় কোন কোন বিষয় সংসদের ভেতরের রাজনৈতিক সংঘাত বাড়াতে চলেছে? চলুন, পুরো বিষয়টি সহজ ভাষায় বোঝা যাক।
এনডিএ-র সংসদীয় বৈঠকে মঙ্গলবার উপস্থিত সমস্ত সাংসদরা বিহার বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ-র ঐতিহাসিক জয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে সম্মানিত করেন। জেডি(ইউ) নেতা সঞ্জয় ঝা এবং রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চার প্রধান উপেন্দ্র কুশওয়াহা, উভয় রাজ্যসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে মালা পরান। এই সম্মান বিহার নির্বাচনে এনডিএ-র বড় জয়ের প্রতীক ছিল। সোমবারও বিহার থেকে এনডিএ নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদী সাংসদদের বলেন, “বড় জয়ের সাথে বড় দায়িত্বও আসে”, তাই জনগণের জন্য আরও বেশি উদ্যমের সাথে কাজ করতে হবে।
শীতকালীন অধিবেশনের ৭ম দিনটি বিতর্ক এবং রাজনৈতিক আলোচনায় পূর্ণ থাকতে চলেছে। বেশ কিছু বিষয় একসঙ্গে সামনে আসছে, যা সংসদের পরিবেশ উত্তপ্ত করে তুলবে।
প্রধান বিষয়গুলি:
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আজকের দিনে সংসদে ওয়াকআউট, তীব্র বাক্য বিনিময় এবং বিতর্কের ঝড় দেখা যেতে পারে।
বিরোধীদের চাপের পর অবশেষে সরকার এসআইআর অর্থাৎ ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (Special Intensive Revision of Voter Rolls) নিয়ে বিতর্কের পথ খুলে দিয়েছে। এটি সেই বিষয়, যা নিয়ে বিরোধীরা গত কয়েক মাস ধরে আলোচনার দাবি করে আসছিল। আজ লোকসভায় এই বিতর্কের সূচনা করবেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। এই আলোচনা আগামী দু'দিন ধরে চলবে এবং মনে করা হচ্ছে যে এতে অনেক গুরুতর অভিযোগ, পরিসংখ্যান এবং কৌশল সামনে আসবে। সরকারের বক্তব্য, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন সাংবিধানিক সংস্থা, তাই যেকোনো সংস্কার নিয়ে খোলামেলা আলোচনা জরুরি।
এই বিতর্ক আগামী রাজ্য ও লোকসভা নির্বাচনে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল রয়েছে। ভোটার তালিকা সংশোধন, ভোটার যাচাই, ডুপ্লিকেট এন্ট্রি, মাইগ্রেশন ডেটা এবং ডিজিটাল ভেরিফিকেশনের মতো বিষয়গুলিতে আজ সংসদে গভীর আলোচনা হবে। এই প্রশ্নগুলির উত্তর আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে বিহার জয়ের পর এনডিএ-র মনোবল তুঙ্গে এবং সরকার আজকের বিতর্কে একটি শক্তিশালী অবস্থান থেকে নামতে চায়। তাই এনডিএ সাংসদদের প্রধানমন্ত্রী মোদী স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিতর্কে সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে নামতে হবে। বিরোধীদের অভিযোগের জবাব তথ্য ও সংযমের সাথে দিতে হবে। এটা স্পষ্ট যে এনডিএ বৈঠকটি শুধু আনুষ্ঠানিক ছিল না, এটি একটি কৌশলগত প্রস্তুতিও ছিল।